কলকাতা: মেয়ো রোডে গান্ধী মূর্তির পাদদেশে সংহতি দিবসের মঞ্চ থেকে আজ আরও এক স্বাধীনতা আন্দোলনের ডাক দিলেন মুখ্যমন্ত্রী তথা তৃণমূল সুপ্রিমো মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়৷
এই আন্দোলন হবেএনআরসি ইস্যু নিয়ে, একইসঙ্গে গণতান্ত্রিক এবং নাগরিক অধিকার নিয়ে৷ বাবাসাহেব আম্বেদকর এর মৃত্যু দিবসে তাঁর লেখা সংবিধানের কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন, সংবিধানে লেখা আছে ‘ধর্মের ভিত্তিতে দেশে কোন বিভাজন হবে না৷’ সুতরাং নাগরিকত্ব মানুষের সাংবিধানিক অধিকার৷ তাই রাজ্য তথা দেশে এনআরসি নিয়ে নিজের সংকল্পে অনড় থাকবেন তিনি৷ এমনকি এই লক্ষ্যে রাজ্যের সমস্ত জেলায়-জেলায়, ব্লকে-ব্লকে জনমত সংগঠনের আবেদন জানান তিনি৷
তিনি বলেন দেশের মানুষকে ভুল বোঝাচ্ছে মোদি সরকার৷ এনআরসি এবং সিএবি, মধ্যে কোন পার্থক্য নেই৷ সরকারের এই ফাঁদে পা না দেওয়ার জন্য দেশের মানুষের কাছে আবেদন জানিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ সম্প্রতি কেন্দ্রীয় মন্ত্রিসভায় অনুমোদন প্রাপ্ত নাগরিকত্ব সংশোধনী বিল এর কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেন ওই বিলে দেশের কতগুলি উগ্রবাদী হিন্দু সম্প্রদায়ের ছাড়া অন্য কোন সম্প্রদায়ের উল্লেখ নেই৷ এদিন এনআরসি ইস্যু নিয়ে বলতে গিয়ে উত্তর এবং উত্তর পূর্ববঙ্গের কথা বিশেষভাবে তুলে ধরেন মুখ্যমন্ত্রী৷ তিনি বলেন পাহাড়ের মানুষ কোনভাবেই ধর্মের ভিত্তিতে বিভাজন মেনে নেবে না৷ তাই বিপদের আশঙ্কা করে এনআরসি ইস্যুতে পাহাড়ের কথা বলছেন না প্রধানমন্ত্রী৷
নাগরিকত্বের প্রশ্নে এদিন ভারতবর্ষের পূর্বতন প্রধানমন্ত্রীদের কথা উল্লেখ করে মুখ্যমন্ত্রী বলেছেন এত দীর্ঘ বছর ধরে যাদের ভোটে একের পর এক সরকার নির্বাচিত করেছে তারাই যদি দেশের নাগরিকত্ব হারান তাহলে এতদিন ধরে সব সরকারই ভুয়ো ছিল৷ সেই অর্থে বর্তমান সরকারও ভুয়ো বলে উল্লেখ করেন তিনি৷
এনআরসি আতঙ্কে রাজ্যে অন্তত ৩০ জনের মৃত্যুর জন্য প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদিকেই দায়ী করেছেন তিনি৷ এনআরসি রুখতে প্রয়োজনে মৃত্যুবরণ করতে রাজি আছেন বলেও সংহতি দিবসের মঞ্চ থেকে মোদি সরকারের দিকে কার্যত চ্যালেঞ্জ ছুড়ে দিয়েছেন তৃণমূল সুপ্রিমো৷