মুম্বই: করোনা পরিস্থিতির মধ্যেই বলিউড তারকা ইরফান খানের মৃত্যুতে শোক নেমেছে সিনেমাপ্রেমীদের মনে। তবে শুধু ভক্তরাই নন, এবার 'অভিভাবকের' প্রতি অভিনব কৃতজ্ঞতা স্বীকার করলেন ইরফানের গ্রামের মানুষরা। নিজেদের গ্রামের নামই বদলে রাখলেন তাঁদের 'হিরোর' নামে। নিজেদের পরিচয় দিলেন হিরোর প্রতিবেশী বলে।
মহারাষ্ট্রের লগতপুরি গ্রামের সঙ্গে অনেক স্মৃতি জড়িয়ে আছে অভিনেতা ইরফান খানের সঙ্গে। তিনি চলে গেলেও ভোলেননি গ্রামবাসীরা। লেখাপড়া হোক কিংবা স্বাস্থ্য, গ্রামবাসীদের কখনও নিরাশ করেননি তিনি। বহু পড়ুয়ার দায়িত্বও নিয়েছিলেন ইরফান। স্কুলের পরিকাঠামো উন্নতির জন্য সাহায্যও করেছেন তিনি। শুধু পর্দার হিরোই নন, বাস্তবেও লগতপুরির হিরো ইরফান খান। তাই মাঝেমধ্যেই যে মানুষটা পরিবারের সঙ্গে গ্রামে আসতেন, তিনি আর ফিরবেন না কোনওদিন! তাই 'প্রতিবেশী' হিরোকে তাঁরা শ্রদ্ধা জানালেন অভিনব উপায়ে। দূরত্ব ঘুচিয়ে ইরফানকে বানিয়ে দিলেন স্থায়ী প্রতিবেশী।
লগতপুরি গ্রামের নতুন নাম দিলেন হিরো-চি-ওয়াদি। স্থানীয়রা বলেন, এই কথার অর্থ হল 'হিরোর প্রতিবেশী'। জেলা পরিষদের সদস্য গোরখ বোড়কে বলেন, 'আমাদের যখনই কোনও কিছু দরকার পড়েছে, ইরফান খান আমাদের পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন। উনি আমাদের একটা অ্যাম্বুলেন্স দিয়েছেন। স্কুলের পরিকাঠামোর ক্ষেত্র থেকে শুরু করে ছাত্র ছাত্রীদের জন্য বই দিয়েও সাহায্য করেছেন। এখানের বহু পরিবার ওঁকে অভিভাবক হিসেবে মানে। কেউ যদি কখনও ওর কাছে সাহায্য চেয়েছে, কখনও না বলতে শুনিনি ওঁকে।'
লগতপুরি গ্রামে কোনও সিনেমা হল নেই। সেই কারণে লগতপুরির 'হিরোর' সিনেমা দেখা সহজ ছিল না গ্রামবাসীদের কাছে। তাতে কী! শোনা যায়, ৩০ কিলোমিটার পথ হেঁটে তাঁরা প্রিয় নায়কের সিনেমা দেখতে যেতেন হলে। সেই 'হিরোর' জন্য গ্রামের নাম বদল কী আর এমন বিরাট কাজ! শুধু মনের মণিকোঠায় বাঁচিয়ে রাখতে চান একসময়ের প্রতিবেশীকে।