নয়াদিল্লি: হিংসার আগুনে জ্বলছে উত্তর-পূর্ব দিল্লি। শুক্রবার বিকেল পর্যন্ত মৃতের সংখ্যা পৌঁছেছে ৪২, আহত হয়েছে কমপক্ষে ৪০০জন। দিল্লিতে হিংসার প্রেক্ষিতে বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের সঙ্গে সাক্ষাত্ করেছে কংগ্রেসের প্রতিনিধি দল। রাষ্ট্রপতির কাছে স্মারকলিপিও জমা দিয়েছে কংগ্রেস।এই ঘটনায় সনিয়া গান্ধীকে তোপ দাগলএন কেন্দ্রীয় আইনমন্ত্রী রবিশঙ্কর প্রসাদ। রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, ‘আমাদের রাজধর্ম না শিখিয়ে নিজেদের অতীত দেখুন। যারা ভোটব্যাঙ্কের রাজনীতি করে, তাদের থেকে এই উপদেশ নিতে নারাজ’।
বৃহস্পতিবার সাংবাদিক সম্মেলনে রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, ‘বৃহস্পতিবার রাষ্ট্রপতির কাছে গিয়েছিল কংগ্রেস। রাজধর্ম পালনের কথা বলা হচ্ছে আমাদের। রাজধর্ম নিয়ে কংগ্রেস এবং সোনিয়া গান্ধীকে আমি কিছু প্রশ্ন করতে চাই। সোনিয়া জি সর্বপ্রথম আমাদের বলুন-পাকিস্তান, আফগানিস্তান ও বাংলাদেশে যাঁরা গৃহহীন, যাঁদের ধর্মের ভিত্তিতে নির্যাতন করা হচ্ছে, সেই সমস্ত মানুষদের সম্পর্কে অতীতে আপনাদের চিন্তাধারা ছিল। আপনাদের নেতারা বারবার এ বিষয়ে নিজেদের অবস্থান স্পষ্ট করেছেন। ইন্দিরা গান্ধী উগান্ডার অভিবাসীদের সাহায্য করেছিলেন, রাজীব গান্ধী তামিলদের সাহায্য করেছিলেন, মনমোহন সিংও বলেছিলেন নাগরিকত্ব পাওয়া উচিত| এটা কেমন ধরনের রাজধর্ম যা এখন পাল্টে গেল| ইন্দিরা গান্ধী, রাজীব গান্ধী যা করেছিলেন তা কি ভুল ছিল?
ইতিহাস খুললেই মিলবে ভোট ব্যাঙ্কের রাজনীতি, হিংসা ছড়ানোর রেকর্ড। দিল্লির হিংসা নিয়ে রাজনীতি বরদাস্ত করবে না বলে জানান তিনি। সরকার যেখানে সর্বসম্মত আলোচনা চালিয়ে শান্তি এবং একতা বজায়ের চেষ্টা চলেছে, সেখানে স্পর্শকাতর বিষয় নিয়ে কংগ্রেসের রাজনীতি দুর্ভাগ্যজনক। গতকাল রবিশঙ্কর প্রসাদ মনে করিয়ে দেন ১৯৮৪ শিখ বিরোধী দাঙ্গায় কংগ্রেসের ভূমিকা কিংবা এমার্জেন্সির সময় বিচারব্যবস্থার উপর হস্তক্ষেপ।
সোনিয়াকে আক্রমণ করে রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, সোনিয়া জি রামলীলা ময়দানে আপনি বলেছিলেন, চূড়ান্ত লড়াই হবে। এটা কেমন ধরনের ভাষা?এটা কী উত্তেজনা নয়? এনপিআর প্রসঙ্গে রবিশঙ্কর প্রসাদ বলেছেন, কংগ্রেসই এনপিআর চালু করেছিল৷ আপনারা যদি চালু করেন তখন ঠিক, আমরা করলেই জনগণকে উস্কানি দেওয়া হচ্ছে? এটা কেমন ধরনের রাজধর্ম সোনিয়া জি? রবিশঙ্কর প্রসাদ আরও বলেছেন, ‘দিল্লিতে যাতে শান্তি ফিরে আসে, সে জন্য জনগণের কাছে আবেদন করেছেন প্রধানমন্ত্রী, প্রতিটি রাজনৈতিক দলের সঙ্গে বৈঠক করেছেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী| কারও কারও ছাদে পেট্রোল বোমা, অ্যাসিড এবং আরও অনেক কিছুই মিলেছে, টিভিতে তা দেখা গিয়েছে৷ দিল্লিতে শান্তি চাই এবং কংগ্রেস রাজধর্মের নামে দেশে উত্তেজনা ছড়ানোর চেষ্টা করছে। শান্তির জন্য এখন হাত বাড়িয়ে দেওয়া উচিত, উত্তেজনা ছড়ানোর সময় নয় এখন৷’ দিল্লির হিংসা নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে দিল্লি হাইকোর্টও। বিচারপতি মূরলীধর তো বলেই দেন, ৮৪-র হিংসার পুনরাবৃত্তি হতে দেওয়া যায় না। গত তিন-চার দিনে হিংসার ভয়াবহ আকার নেয়।