নয়া আয়কর ব্যবস্থায় গুরুত্ব হারাতে পারে LIC, কমবে অর্থমূল্য!

নয়া আয়কর ব্যবস্থায় গুরুত্ব হারাতে পারে LIC, কমবে অর্থমূল্য!

নয়াদিল্লি: ২০২০-২০২১ অর্থবর্ষের বাজেট পেশ করেছেনন কেন্দ্রীয় অর্থমন্ত্রী নির্মলা নির্মলা সীতারমন৷ দেশের আর্থিক মন্দার আবহে নির্মলার বাজেট ঘিরে দেশের জনতার ছিল একরাশ প্রত্যাশা৷ তবে, আজ জনতাকে বিস্ময়কর ভাবে হতাশ করেছে কেন্দ্রীয় বাজেট৷ যেটুকুও বা সুযোগ সুবিধা পাওয়ার সম্ভবনা রয়েছে সাধারণের তথা চাকরিজীবীদের সেটাও হবে কিছু শর্তের ভিত্তিতে৷ বিগত বছরের বাজেটগুলিতে আয়কর প্রদানের ক্ষেত্রে জীবন বিমা নিগম সহ অন্যান্য বেশি কিছু সংস্থার শেয়ার বিক্রিতে জোর দিয়েছে কেন্দ্র৷ আর তাতেই এলআইসিকে ঘিরে তৈরি হয়েছে বিতর্ক৷

এতদিন করছাড়ে সুযোগ পাওয়া যাবে ভেবে সাধারণ জনতা জীবন বিমায় বিনিয়োগ করেছেন৷ কিন্তু এখন থেকে সেই সুযোগ পাওয়া না গেলে স্বাভাবিক ভাবেই বিনিয়োগের পরিমাণ কমতে চলেছে এলআইসিতে, এমনই আশঙ্কা বাজারের৷ এছাড়াও আর্থিক মন্দার মধ্যে থাকার কারণে এই বছরের বাজেটে জীবন বিমা নিগমের অংশীদারিত্ব বিক্রির কথা ঘোষণা করেন অর্থমন্ত্রী৷ একে তো আগেই থেকেই ওই সংস্থা থেকে লাভের অঙ্ক প্রত্যাশা সীমার নিচে ছিল৷ এখন আয়কর ছাড়ের ক্ষেত্রে কোনও সুবিধা না পাওয়া-সহ সংস্থার অংশীদারিত্ব বিক্রি হাতে হতে চলার কারণে গ্রাহকের সংখ্যা উল্লেখযোগ্য রকম ভাবে কম হবে বলে মনে করছে সংস্থার কর্তারা৷ ফলে, আগামী দিনে বিমার বোনাস বা ডিভিডেন্ডে প্রভাব পড়তে পারে বলেও মনে করছে বাজার বিশেষজ্ঞদের একাংশ৷

ঠিক কোন কোন ক্ষেত্রে মিলবে আয়কর ছাড়? বাজেট পেশ করে অর্থমন্ত্রী জানান, বছরে ৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত আয়ের ক্ষেত্রে কোনও আয়কর দিতে হবে না৷ ৫ থেকে ৭.৫ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ১০ শতাংশ কর দিতে হবে৷ ৭.৫ থেকে ১০ লক্ষ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয়ে ১৫ শতাংশ কর দিতে হবে৷ বার্ষিক ১০ থেকে ১২.৫ লক্ষ টাকা আয়ে ২০ শতাংশ কর দিতে হবে৷ ১২.৫ থেকে ১৫ লক্ষ বার্ষিক আয়ে ২৫ শতাংশ কর দিতে হবে৷ ১৫ লক্ষের বেশি আয়ে ৩০ শতাংশ কর দিতে৷ যদি কোনও করদাতা পুরানো হারে কর দিতে চান, তাও তিনি দিতে পারেন৷ আয়করে ১০০ ক্ষেত্রে বিশেষ ছাড় এত দিন পাওয়া যেত৷ এবারের বাজেটে ১০০টির মধ্যে ৭০টি সুবিধা ছিনিয়ে নেওয়া হয়েছে৷  

নতুন বাজেটে আয়কর প্রদানের ক্ষেত্রে করদাতা ৮০ সি ধারা অনুসারে পিএফ, এনপিএস, জীবনবিমার কিস্তি দেওয়ার ক্ষেত্রে আয়করে কোনও রকম ছাড় পাবেন না৷ ৮০ ডি ধারা অনুযায়ী চিকিৎসা বিমার কিস্তি প্রদানের ক্ষেত্রেও করদাতাদের আয়কর ছাড়ের কোনও সুযোগ মিলবে না৷ নতুন করকাঠামো ও করকাঠামোয় আপাত দৃষ্টিতে কোনও উল্লেখযোগ্য কোনো পরিবর্তন চোখে না পড়েনি৷  আগের করকাঠামোয় বিভিন্ন সুযোগ পেতেন করদারাতা৷ যেমন চার বছরে দু’বার ভ্রমণের জন্য বিশেষ ছাড়া পেতেন তাঁরা৷ চাকরিজীবীদের ক্ষেত্রে বাড়ি ভাড়া হিসেবে বেতনে যে অংশ বরাদ্দ থাকে তার উর্দ্ধসীমা বৃদ্ধি পাবে না৷ মিলবে কোনও ছাড়৷ ৮০ ডিডি, এবং ৮০ ডিডিবি ধারায় যে সব সুবিধাগুলি ছিল, নতুন করকাঠামোয় সেই সুযোগগুলি পারবেন না করদাতা৷

তবে, ইপিএফও, এনপিএস, অবসরকালীন তহবিল, ছুটি বিক্রি বাবদ উপার্জনে নতুন আয়কর কাঠামোয় ছাড় মিলবে৷ একই সঙ্গে স্বেচ্ছাবসর ভাতার পাঁচ লক্ষ টাকা পর্যন্ত ছাড় দেওয়া হবে৷ বার্ষিক শিক্ষার খরচ বাবদ মিলবে আয়কর ছাড়া৷ গ্রাচুইটি ক্ষেত্রেও পাওয়া যাবে আয়কর ছাড়ের সুযোগ৷ গৃহঋণ, বাড়ি ভাড়া, শিক্ষা ঋণ, স্বাস্থ্য বীমার ক্ষেত্রে কোনও ছাড় মিলবে না৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

one × three =