নয়াদিল্লি: পুরুষতান্ত্রিক সমাজের আদর্শ উদাহরণ কি এটা হতে পারে? সমীক্ষা অন্তত সে দিকে ইঙ্গিত দিচ্ছে। যতই মুখে বলা হোক, নারী-পুরুষ সমান সমান, কাজের ক্ষেত্রে কিন্তু তেমনটা একেবারেই নয়। সম্প্রতি যে সমীক্ষা প্রকাশিত হয়েছে, তাতে দেখা গিয়েছে, বাড়ির কাজ করেন বা বাড়ির কাজের স্ত্রীকে সাহায্য করেন এমন পুরুষের সংখ্যা দেশে ১০ শতাংশেরও কম! তবে শুধু বাড়ির কাজ নয়, বিভিন্ন সাংসারিক কাজের ক্ষেত্রে পুরুষদের অংশগ্রহণের মান অত্যন্ত কম।
এই সমীক্ষার রিপোর্ট লিঙ্গ বৈষম্যের চিত্রটিকে আরো স্পষ্ট করে ফুটিয়ে তোলে। বিশ্বের একাধিক দেশে এই ধরনের সমীক্ষা করা হয়। ভারতে শেষবার এই ‘টাইম ইউজ’ সমীক্ষা করা হয়েছিল ১৯৯৯-২০০০ সালে। তারপর গত বছর অর্থাৎ ২০১৯ সালে এই সমীক্ষা করা হয়, যার রিপোর্ট বেরিয়েছে গত মাসের শেষের দিকে। এক সর্বভারতীয় সংবাদমাধ্যম সেই রিপোর্টের পুঙ্খানুপুঙ্খ বিবরণ দিয়েছে। রিপোর্টে উঠে এসেছে, পুরুষদের তুলনায় অনেক বেশি শতাংশ মহিলা এমন কাজ করেন যার জন্য তারা পারিশ্রমিক পান না। নির্দিষ্ট কাজের সময় বা ওয়ার্কিং আওয়ারের ভিত্তিতে গ্রাম্য এলাকায় প্রায় ৮৫ শতাংশ মহিলা বিনা পারিশ্রমিকে বাড়ির কাজ করেন, তুলনায় প্রায় ২৬ শতাংশ পুরুষ বিনা পারিশ্রমিকে কাজ করেন। অন্যদিকে শহরাঞ্চলে সেই সংখ্যাটা মহিলাদের ক্ষেত্রে ৮২ শতাংশ, পুরুষদের ক্ষেত্রে প্রায় ১২ শতাংশ।
অন্যদিকে, গ্রাম্য এলাকায় পারিশ্রমিকের প্রেক্ষিতে কাজ করেন প্রায় ৭৩ শতাংশ পুরুষ, মহিলাদের সংখ্যা প্রায় ১৪ শতাংশ। এদিকে শহরাঞ্চলে পুরুষদের সংখ্যা প্রায় ৮৭ শতাংশ এবং মহিলাদের ক্ষেত্রে সেই সংখ্যা প্রায় ১৭ শতাংশ।
আরও জানা গিয়েছে, মাত্র ৬ শতাংশ পুরুষ বাড়িতে রান্না করেন, ৮ শতাংশ ঘরবাড়ি পরিষ্কার রাখার কাজে অংশ নেন। এক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণ এর সংখ্যা অনেক বেশি। রান্নার ক্ষেত্রে মহিলাদের অংশগ্রহণের সংখ্যা প্রায় ৮৮ শতাংশ এবং পরিষ্কার, পরিচ্ছন্নতার কাজে নিযুক্ত হন কমপক্ষে ৭৫ শতাংশ মহিলা। এমনকি, অবসর সময় কাটানো, রাতের ঘুম, সঠিক সময় খাওয়া দাওয়া এমনকি নিজের হাইজিন মেন্টেন করার ক্ষেত্রেও নারীদের থেকে অনেক বেশি এগিয়ে পুরুষরা!
মূলত ঘরের কাজকে ‘কাজ’ হিসেবে ধরা হয় না। কিন্তু কোনোরকম পারিশ্রমিক এবং নির্ধারিত সময় ছাড়াই বাড়ির মহিলারা এই কাজ করে থাকেন। এই রিপোর্ট আরো বলছে, ৮৪ শতাংশ মহিলারা নির্ধারিত ওয়ার্কিং আওয়ারে যা কাজ করেন তার জন্য তারা পারিশ্রমিক পান না। পুরুষদের ক্ষেত্রে ঠিক উল্টো। ৮০ শতাংশ পুরুষরা নির্ধারিত ওয়ার্কিং আওয়ারে কাজ করার জন্য পারিশ্রমিক পান।