নয়াদিল্লি: করোনা প্রতিরোধে লকডাউন গোটা দেশ৷ কিন্তু এতেও যে পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না, আক্রান্তের পরিসংখ্যানই তার প্রমাণ৷ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা৷ প্রশাসনের উদ্বেগ বাড়িয়ে লকডাউনের মাঝেই মঙ্গলবার দেশে নতুন করে উঠে এলো ৩১৫ জনের করোনা আক্রান্ত হওয়ার খবর৷ সংখ্যার বিচারে যা আগের থেকেও প্রায় দ্বিগুণ৷ এর মধ্যে মহারাষ্ট্রে আক্রান্ত হয়েছেন সংখ্যা ৮২ জন এবং তামিলনাড়ুতে ৫৭৷
কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য ও পরিবার কল্যাণ মন্ত্রকের দেওয়া সর্বশেষ পরিসংখ্যান অনুযায়ী, দেশে প্রাণঘাতী এই ভাইরাসে আক্রান্তের সংখ্যা ১,৩৯৭। মৃত্যু বেড়ে হয়েছে ৩৫। যদিও বেসরকারি হিসেবে এখনও পর্যন্ত ভারতে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা ১,৬১৮। মৃত্যু হয়েছে ৫২ জনের। খুব অল্প সময়ের মধ্যেই কোভিড-১৯ এ মৃত্যুর সংখ্যা ৯ থেকে পৌঁছে গিয়েছে ৫২ তে৷ গত তিন দিনে দেশের বিভিন্ন প্রান্তে নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৬২৬ জন৷
ভ্যাকসিন বা প্রতিষেধক থেকে শুরু করে ভেন্টিলেটর, করোনার বিরুদ্ধে যৌথভাবে লড়াই করার পথ খুঁজছে ভারত-আমেরিকা৷ সংশ্লিষ্ট আধিকারিকের কথায়, উভয় দেশে যৌথ উদ্যোগে করোনা প্রতিষেধক তৈরির চেষ্টা চালাচ্ছে৷ সংক্রমক রোগ মোকাবিলার অভিজ্ঞতা এর আগেও হয়েছে ভারতের৷ এই অভিজ্ঞতাই ভারতের কাছে বড় সম্বল৷ অন্যদিকে, করোনা আক্রান্ত রোগীদের ক্লোরোকুইন এবং হাইড্রোক্সাইক্লোরোকাইন ব্যবহারের ক্ষেত্রে অনুমোদন দিয়েছে ইউএস এফডি৷
অন্যদিকে, আগামী দু’ মাসের মধ্যে ভারতে সেরোলজিকাল ডায়াগোনস্টিক টেস্টিং কিট তৈরির কাজ শুরু হয়ে যাবে বলে জানিয়েছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ৷ আইসিএমআর-এর প্রধান এপিডেমিওলজিস্ট এবং কমিউনিকেবল ডিজিজ বিশেষজ্ঞ ডা. আরআর গঙ্গাখেদকর জানিয়েছেন, একবার ভাইরাস আলাদা করা সম্ভব হলে ডায়াগনস্টিক কিট, ওষুধ এবং ভ্যাক্সিন তৈরির গবেষণা এগিয়ে নিয়ে যাওয়া সহজ হয়ে ওঠে। আর ভারত সেদিকেই এগোচ্ছে। সেরোলজিকাল পরীক্ষার মাধ্যমে রক্তের মধ্যে অ্যান্টিবডি খুঁজে বের করে রোগ নির্ণয়ে সাহায্য করে।
করোনা মোকাবিলায় কেন্দ্র ও রাজ্যগুলির পদক্ষেপে সন্তোষ প্রকাশ করেছে সুপ্রিম কোর্ট৷ কেন্দ্র ও রাজ্য সরকারগুলির ভূয়সী প্রশংসা করেছে শীর্ষ আদালত৷ তবে করোনাকে কেন্দ্র করে সোশ্যাল মিডিয়ার বিভিন্ন প্ল্যাটফর্ম, ইলেকট্রনিক ও প্রিন্ট মিডিয়ায় যে গুজব ছড়াচ্ছে, তা নিয়ে উদ্বিগ্ন সুপ্রিম কোর্ট৷ মঙ্গলবার আদালত জানায়, আগামী তিন মাস দেশ লকডাউন চলবে বলে সর্বোত্র গুজব ছড়িয়েছে৷ এই গুজবে কান দিয়েই হাজার হাজার পরিযায়ী শ্রমিক জমায়েত করেছেন, পায়ে হেঁটেই বাড়ি ফেরার চেষ্টা করছেন৷ যার জেরে শ্রমিকদের মৃত্যু পর্যন্ত হচ্ছে৷ এটা অবিলম্বে বন্ধ হওয়া উচিত৷
এদিকে আগামী দু’সপ্তাহ খুবই ‘সংকটপূর্ণ’ ও ‘বেদনাদায়ক’ হতে চলেছে বলে সতর্ক করেছেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প৷ মার্কিন মুলুকে করোনার প্রায় ২ লক্ষ ৪০ হাজার মানুষ প্রাণ হারাতে পারেন বলে সতর্ক করেছে হোয়াইট হাউস৷ মঙ্গলবার হোয়াইট হাউসে একটি সাংবাদিক সম্মেলনে ট্রাম্প বলেন, ‘‘আগামী দু’ সপ্তাহ খুব খুব বেদনাদায়ক হতে চলেছে৷’’ একইসঙ্গে এই পেন্ডামিককে ‘প্লেগ’-এর সঙ্গেও তুলনা করেন তিনি৷