গ্যাংটকে ভয়াবহ ভূমিধস, ঘুমের মধ্যে সলিলসমাধি মাসহ দুই শিশুর

গ্যাংটকে ভয়াবহ ভূমিধস, ঘুমের মধ্যে সলিলসমাধি মাসহ দুই শিশুর

গ্যাংটক: একটানা বৃষ্টি এবং তার জেরে ভূমিধস। সোমবার রাতের এই প্রাকৃতিক দুর্যোগই গ্যাংটকে প্রাণ কাড়ল মা সহ দুই শিশুর। ঘটনাটি ঘটেছে সোমবার মধ্যরাত ১:১৫ নাগাদ গ্যাংটকের রঙে। বিগত কয়েক দিন ধরেই উত্তরবঙ্গের নিকটবর্তী রাজ্য সিকিমে শুরু হয়েছে অতিবৃষ্টি। আর সেই বাঁধভাঙ্গা বৃষ্টিপাতের জেরেই সোমবার মধ্যরাতে গ্যাংটকের এই বিস্তীর্ণ এলাকায় ভূমিধস নামে। এই ধসের কারণেই হুড়মুড়িয়ে ভেঙে পড়ে এলাকার স্থানীয় বাসিন্দা বিমল মঙ্গারের বাড়ি। আর সেই বাড়ি চাপা পড়েই মৃত্যু হয় দুই শিশুসহ মোট তিনজনের।

জানা গিয়েছে, ঘুমের মধ্যেই বিমল মঙ্গারের স্ত্রী ডোমা শেরপা (২৭), তাঁর আট বছর এবং সাত মাসের দুই শিশুর মৃত্যু হয়েছে। এখনও নিখোঁজ গৃহকর্তা। তাঁর খোঁজে তল্লাশি চালাচ্ছে স্থানীয় প্রশাসন। উদ্ধারকাজে নেমেছে SDRF। গ্যাংটকের SDM রবিন শেরপা বলেন, ‘জোরকদমে উদ্ধারকাজ চলছে। ইতিমধ্যেই ধ্বংসাবশেষ সরিয়ে নিয়ে যাওয়ার কাজ চালাচ্ছে SDRF। জেলা প্রশাসন দমকল বাহিনী, পুলিশ ঘটনাস্থলে রয়েছে।’

উল্লেখ্য বর্ষা আসতেই চলতি মাসে খারাপ আবহাওয়ার কারণে উত্তরবঙ্গ এবং সিকিমের পার্বত্য অঞ্চলের একাধিক জায়গায় ভূমিধস নেমেছে। কিছুদিন আগেই সিকিমের রংপোতে ভূমিধস নেমে বন্ধ হয়ে গিয়েছিল রাস্তা। যে কারণে উত্তরবঙ্গের সঙ্গে সিকিমের যোগাযোগ কার্যত কয়েক ঘন্টার জন্য সম্পূর্ণ বিচ্ছিন্ন হয়ে যায়। রাস্তার মধ্যেই আটকে পড়ে একাধিক পর্যটক বোঝাই গাড়ি। বেশ কয়েক ঘণ্টা চেষ্টার পরে ফের ওই রাস্তায় গাড়ি চলাচল শুরু হয়। এদিকে আবহাওয়া দপ্তর সূত্রে খবর আগামী ৪৮ ঘণ্টায় ভারী থেকে অতি ভারী বৃষ্টির সম্ভাবনা সিকিমজুড়ে। তার জেরে ইতিমধ্যেই জারি হয়েছে হাই এলার্ট। এর মধ্যেই সোমবার রাতে এই ভূমিধসের ঘটনাকে কেন্দ্র করে কার্যত উদ্বিগ্ন এলাকাবাসী। উল্লেখ্য, চলতি বছরের ৩ জুন থেকে একটানা বৃষ্টিপাতের কারণে যে কয়েকটি ভূমি ধস নেমেছে তাতে এখনো পর্যন্ত ৬০ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে খবর। এছাড়াও দফায় দফায় নামায় ধসের কারণে সিকিমের বিভিন্ন জায়গায় একাধিক বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

অন্যদিকে সিকিম ছাড়া আগামী দুদিন অতি ভারী বৃষ্টিপাত হতে পারে দার্জিলিং এবং কালিম্পংয়েও, হাওয়া অফিস সূত্রে খবর এমনটাই। লাগাতার বৃষ্টির কারণে উত্তরবঙ্গের এই সমস্ত পাহাড়ি এলাকাতেও ধস নামতে পারে বলে আশঙ্কা করছে প্রশাসন। ইতিমধ্যেই দার্জিলিংয়ের আন্ধেরি জোরা এলাকায় ধস নেমে বিপর্যস্ত গোটা এলাকা। গত সপ্তাহেই ধসের কারণে ওই এলাকায় বহু পর্যটক আটকে পড়েছিলেন। এছাড়া ধস নামে কালিম্পংয়েও। সবে মিলে বর্ষা পড়তেই ক্রমশ বিপদজনক হয়ে উঠছে সিকিম এবং উত্তরবঙ্গের একাধিক এলাকা। 

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

two × five =