লখনউ: উন্নাও কাণ্ডে নির্যাতিতার বাবাকে হত্যা করার জন্য ফাঁসির সাজা হল বিডজেপির প্রাক্তন বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারের। যদিও উন্নাওয়ে ১৫ বছরের কিশোরীকে ধর্ষণের জন্য সেঙ্গারকে আগেই দোষী সাব্যস্ত করেছিল। উন্নাও গণধর্ষণ কাণ্ডে নির্যাতিতার বাবাকে হত্যা ও হত্যার ষড়যন্ত্রে যুক্ত থাকার অভিযোগ ছিল কুলদীপ-সহ ১১ জনের বিরুদ্ধে। দিল্লি হাইকোর্ট কুলদীপ-সহ ছয় জনকে দোষী সাব্যস্ত করে বলে জানা গিয়েছে।
২০১৭ সালে জুন মাসে ১৫ বছরের কিশোরী অভিযোগ করেন কুলদীপের বিরুদ্ধে। কিশোরী বিচারের দাবি জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী যোগী আদিত্যনাথের বাড়ির সামনে আত্মহত্যার চেষ্টা করে। এরপরেই সংবাদের শিরোনামে চলে আসে উন্নাওয়ের ঘটনা। মেয়ের সঙ্গে হওয়া অন্যায়ের প্রতিবাদ জানিয়ে ন্যায়বিচারের জন্য পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছিলেন বাবা। তারপরেই ওই ব্যক্তির নামে অস্ত্র আইনে মামলা রুজু হয়। গ্রেফতারও হন বাবা। তবে তিনি অভিযোগ জানান, প্রকাশ্যেই তাঁকে বেধড়ক মারধর করেছিল কুলদীপ সেঙ্গারের ভাই অতুল সিং। কেউ একবারও বাধা দেয়নি অতুলকে। কিশোরীর বাবাকে বাঁচানো তো দূরের কথা। বুকে এবং পেটে গুরুতর আঘাত পেয়েছেন বলেও জানিয়েছিলেন উন্নাওয়ের ধর্ষিতা কিশোরীর বাবা।
গ্রেফতারের পর জেলে যাওয়ার আগে মেডিক্যাল চেকআপের জন্য হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছিল কিশোরীর বাবাকে। আচমকাই পেটে প্রবল যন্ত্রণা শুরু হয় তাঁর। মারাও যান ওই ব্যক্তি। পরে ময়নাতদন্তের রিপোর্টে জানা যায়, অন্ত্র ফুটো হয়ে গিয়েছিল রোগীর। তার জেরেই রক্তে সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ে। সারা শরীরে পাওয়া গিয়েছিল ১৪টি আঘাতের চিহ্ন। বছর ৫৫-র এই ব্যক্তির উপর হামলার অভিযোগ উঠেছিল কুলদীপ সেঙ্গার এবং তার ভাইয়ের বিরুদ্ধে। অভিযোগ জানিয়েছিলেন কিশোরীর বাবা নিজেই। সেই অভিযোগেই এবার দোষী সাব্যস্ত হয়েছে কুলদীপ সেঙ্গার।
গত ১৬ ডিসেম্বর উন্নাও ধর্ষণ কাণ্ডে বিজেপির প্রাক্তন বিধায়ক কুলদীপ সেঙ্গারকে দোষী সাব্যস্ত করেছিল দিল্লির তিস হাজারি আদালত। তার চার দিন পরে সাজা শোনান বিচারক। যাবজ্জীবনের সাজা এবং ২৫ লক্ষ টাকা জরিমানা হয় কুলদীপ সেঙ্গারের। গতবছর ৩ অক্টোবর সিবিআই এই ধর্ষণ মামলার চার্জশিট পেশ করে। সেখানে জানা যায়, নির্যাতিতাকে ২০১৭ সালে অপহরণ করে টানা ন’দিন ধরে ধর্ষণ করা হয়। উন্নাওয়ে ধর্ষিতাকে হত্যার চেষ্টার অভিযোগও রয়েছে কুলদীপ সিংয়ের বিরুদ্ধে। ২০১৯ সালে রায়বরেলি যাওয়ার পথে ভয়ঙ্কর দুর্ঘটনার স্বীকার হয়েছিলেন নির্যাতিতা এবং তাঁর আইনজীবী। সেই ঘটনায় কুলদীপ সিংয়েহ হাত ছিল বলে অভিযোগ জানায় নির্যাতিতার পরিবার। তারপরেই নড়েচড়ে বসে শীর্ষ আদালত।