মালাপ্পুরম: আর পাঁচটা বাচ্চার মত ছেলে ছোটবেলা থেকেই ছিল অত্যন্ত দুরন্ত এবং পড়াশোনায় অমনোযোগী। পড়াশোনায় কিভাবে ছেলের মন বসানো যায় তা নিয়ে সর্বদাই চিন্তায় থাকতেন মা। অনেক ভেবে শেষ পর্যন্ত খুঁজে বের করেন অদ্ভুত এক ফন্দি। ছেলের পড়াশুনায় যাতে আগ্রহ বাড়ে তার জন্য ছেলের সঙ্গে তার মাও প্রত্যেকদিন পড়তে বসতেন নিয়ম করে। সেই থেকে শুরু। তারপর কেটে গিয়েছে বহু বছর। এতগুলো বছর ধরে একসঙ্গেই পড়াশোনা চালিয়ে এসেছেন মা ও ছেলে। সম্প্রতি কেরল পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষার নোটিস বের হলে ছেলের সঙ্গে মাও সিদ্ধান্ত নেন যে তিনিও পরীক্ষায় বসবেন। পরীক্ষায় বসার যাবতীয় যোগ্যতাও ছিল তাঁর। ফলে যেমন ভাবা তেমন কাজ। ছেলে, মা একসঙ্গেই দেন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের এই পরীক্ষা। সম্প্রতি বেরিয়েছে তারই ফল। আর তাতেই দেখা গিয়েছে ছেলে তো বটেই এই পরীক্ষাতে পাশ করেছেন তাঁর মাও। ছেলের র্যাংকিং ৩৮, আর মায়ের ৯২। খুব শীঘ্রই সরকারি চাকরিতে যোগ দিতে চলেছেন মা-ছেলের এই জুটি।
শুনতে অনেকটা রূপকথার গল্পের মত লাগলেও সম্প্রতি এমনই ঘটনা ঘটেছে দক্ষিণের রাজ্য কেরলে। সদ্য সরকারি চাকরি পাওয়া মায়ের নাম বিন্দু। ৪২ বছর বয়সে তিনি ক্র্যাক করলেন পাবলিক সার্ভিস কমিশনের পরীক্ষা। পরীক্ষায় পাশ করে চাকরি পেয়েছেন তাঁর ২৪ বছর বয়সী ছেলেও। জানা যাচ্ছে, এই পরীক্ষায় পাশ করে লাস্ট গ্রেড সারভেন্ট পদে চাকরিতে যোগ দেবেন বিন্দু। অন্যদিকে তাঁর ছেলে লোয়ার ডিভিশন ক্লাক হিসেবে চাকরিজীবন শুরু করবেন।
বিন্দুর কথায়, বিগত ১০ বছর ধরে একজন অঙ্গনওয়াড়ি শিক্ষিকা হিসাবে কাজ করছেন তিনি। সেই সঙ্গেই ছেলে যখন দশম শ্রেণীর ছাত্র তখন থেকেই ফের পড়াশোনা শুরু করেন। একসঙ্গে নিতে শুরু করেন সরকারি চাকরির প্রস্তুতি এবং একসঙ্গেই একটি কোচিং সেন্টারেও ভর্তি হন। তবে প্রথম চেষ্টাতেই যে তারা সরকারি চাকরি পেয়েছেন তা একেবারেই নয়। বেশ কয়েকবার ব্যর্থ হওয়ার পরে এসেছে এই সফলতা।
জানা যাচ্ছে অঙ্গনওয়াড়ি শিক্ষিকা বিন্দু চারবারের চেষ্টায় পেলেন এই সরকারি চাকরি। না পাওয়ার হতাশা যখনই তাঁদের গ্রাস করেছে তখনই একে অপরের মনোবল বাড়িয়েছন এই মা ছেলে। আর তাতেই শেষ পর্যন্ত খুলেছে ভাগ্যের তালা। জানা যাচ্ছে খুব শীঘ্রই একইসঙ্গে চাকরিতে যোগ দেবেন তাঁরা। আপাতত সেই অপেক্ষাতেই দিন গুনছেন বিন্দু ও তাঁর ছেলে।