করোনা মোকাবিলায় ভারতের মডেল ‘কমিউনিস্ট’ কেরালা! কোন পথে সাফল্য?

করোনা মোকাবিলায় ভারতের মডেল ‘কমিউনিস্ট’ কেরালা! কোন পথে সাফল্য?

39f2f7e95306d3e0130b46c9eb8f2c51

নয়াদিল্লি: ভারতে করোনা সংক্রামিত ব্যাক্তির সংখ্যা ৯ হাজার ছড়িয়ে গিয়েছে। যাবতীয় চিন্তার মাঝেও বাম শাসিত কেরালা আশার আলো দেখাচ্ছে। শুধু ভারত কেন, সারা বিশ্ব কেরালা মডেলের দিকে তাকিয়ে রয়েছে। এমন কী আছে এই কেরালা মডেলে? আলোচনা করে নেওয়া প্রয়োজন।

অনেকেরই জানা নেই, জানুয়ারির শুরুতে কেরালায় তিন ছাত্রের করোনা ভাইরাস সংক্রমণ চিহ্নিত হয়। ওই তিন ছাত্রই চিনের হুবেই প্রদেশের উহানে পড়াশোনা করতে গিয়েছিলেন। সঙ্গে সঙ্গেই চিন থেকে আগত ব্যক্তিদের বাধ্যতামূলক কোয়ারেন্টিনে নিয়ে যাওয়ার ব্যবস্থা করা হয়। কেন্দ্রীয় সরকার একই কাজ করেছে, কিন্তু বেশ কয়েক সপ্তাহ পরে।

সেভাবে বিচার করতে গেলে, ভারতে কেরালাতেই প্রথম থাবা বসাতে পেরেছিল করোনা। সেক্ষেত্রে করোনার বিরুদ্ধে লড়াই করার অভিজ্ঞতা কেন্দ্রীয় সরকারের থেকে বেশি কেরালা সরকারের। মার্চেই তিন রোগীকে সফলভাবে আইসলেট করার জন্য কেরালা সরকারের সাফল্যের কথা উল্লেখ্য করে। নিপা ভাইরাস এবং জিকা ভাইরাসকেও সফল ভাবে আটকাতে পেরেছিল কেরালার বাম সরকার। সেই পূর্ব অভিজ্ঞতা কাজে এসেছে।

কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য এবং পরিবার কল্যাণ মন্ত্রক এবং আই সি এম আর – কেরালায় করোনার প্রকোপ এবং তার প্রতিরোধ দেখে  রীতিমত অবাক। সারা দেশে যে গতিতে এই ভাইরাস বেড়েছে, সেই তুলনায় কেরালায় এই ভাইরাসের গতি প্রায় স্তব্ধ। এই মুহূর্তে কেরালায় আক্রান্তের সংখ্যা ৩৭৬, মৃত্যু ৩ জনের, সুস্থ হয়ে উঠেছেন ১৭৯ জন। ওয়াশিংটন পোস্টের খবর অনুযায়ী, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহেই 'কমিউনিস্ট' কেরালায় সংক্রমণের ঘটনা ৩০ শতাংশ কমেছে। কারণ, প্রচুর পরিমাণে পরীক্ষা, সংক্রামিত এবং তাঁর যোগাযোগের ব্যক্তিদের খুঁজে বার করা, দীর্ঘ কোয়ারেন্টিন এবং পরিযায়ী শ্রমিকদের জন্য অস্থায়ী বাসস্থান এবং খাবারের আয়োজন সঠিক সময়ে করে রাখা। পরবর্তীকালে, সারা ভারতেই এই কাজ করা হয়েছে। কিন্তু, বেশ কয়েক সপ্তাহ পরে।

ওয়াশিংটন পোস্টের খবর অনুযায়ী, এপ্রিলের প্রথম সপ্তাহতেই প্রায় ১৩ হাজার করোনা পরীক্ষা করেছে কেরালা। আয়তনে বড় অন্য রাজ্য যেমন অন্ধ্রপ্রদেশ, তামিলনাড়ুতে সংখ্যাটি অনেক কম। কেরালায় ওয়াক-ইন টেস্ট শুরু হয়েছে।

মার্কিন খবরের কাগজে যে বিষয়টি সব থেকে বেশি গুরুত্বের সঙ্গে লেখা হয়েছে তা হল, কেরালার সাফল্য থেকে ভারত সরকার শিক্ষা নিতে পারে। কারণ, ভারতে ২১ দিন লকডাউনের পরও সংক্রমণের গ্রাফ ঊর্ধ্বমুখী। কেরালা সরকারের সময়োচিত পদক্ষেপ, পরীক্ষা ব্যবস্থা এবং সামাজিক বণ্টন ব্যবস্থা যেমন গরীবদের জন্য খাদ্য ও বাসস্থানের ব্যবস্থা সারা ভারতের মডেল হতে পারে। কেরালার স্বাস্থ্য মন্ত্রী কে কে সাইলাজা সারা ভারতের আলোচিত বাক্তিত্ব। তিনি সংবাদমাধ্যমে বলেছেন, কেরালা ভাল কিছু করার আশা করেই লড়াইয়ে নেমেছে। কিন্তু, খারাপের জন্য প্রস্তুত আছে। এই রোগের দ্বিতীয় আক্রমণ আসতেই পারে। ভারতের ৬টি রাজ্যকে পরামর্শও দিচ্ছে কেরালা।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *