তিরুঅনন্তপুরম: করোনা পরিস্থিতিতে রাজ্যের সরকারি কর্মীদের এক মাসের বেতন কাটার সিদ্ধান্ত নিল কেরল সরকার৷ বুধবার রাজ্য মন্ত্রীসভার বৈঠকে এই সিদ্ধান্ত গ্রহণ করা হয়৷ তবে একবারে এই বেতন কাটা হবে না৷ মে মাস থেকে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত ধাপে ধাপে এই টাকা কাটা হবে বলে জানানো হয়েছে৷
শুক্রবার প্রকাশিত সরকারি বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, চিকিৎসক, নার্স সহ সকল সরকারি কর্মী, যাঁরা ২০ হাজারের বেশি বেতন পান, তাঁদের এক মাসের বেতন কাটা হবে৷ পাঁচ মাস ধরে চলবে এই পর্ব৷ প্রতি মাসে ছয় দিনের বেতন কাটা হবে৷ করোনা সংকটে বিপর্যস্ত দেশের অর্থনীতি। কেন্দ্রীয় সরকার একাধিক প্যাকেজ ঘোষণা করলেও, পরিস্থিতি সামাল দেওয়া যাচ্ছে না৷ তাই বাধ্য হয়েই রাজ্য সরকারের কর্মীদের বেতন কাটার সিদ্ধান্ত নেয় কেরলের পিনারাই বিজয়ন সরকার।
মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়ন বলেন, এই মুহূর্তে সরকার বিরোধীদের প্রতিবাদ নিয়ে চিন্তা করার অবস্থায় নেই৷ প্রত্যেক সরকারি কর্মচারী, শিক্ষক, বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক, স্বাস্থ্যকর্মী এবং আধা সরকারি সংস্থার কর্মীদের ৩০ দিনের বেতন পাঁচ মাসে কাটা হবে৷ তবে যাঁরা ২০ হাজারের কম বেতন পান, তাঁদের ছাড় দেওয়া হয়েছে৷ রাজ্যের সকল কর্মীর সহযোগিতা প্রার্থনা করেছেন তিনি৷
তবে শুধু সরকারি কর্মীই নয়, বেতন কাটা হবে কেরলের সমস্ত মন্ত্রী, বিধায়ক এবং জনপ্রতিনিধিদের। ৩০ শতাংশ বেতন এক বছরের জন্য কেটে নেওয়া হবে। বলা হয়েছে, করোনা মোকাবিলায় একটি ফান্ড তৈরি করা হবে৷ সেই ফান্ড তৈরি করতেই রাজ্য সরকারি কর্মীদের বেতনে কোপ পড়ল। সেইসঙ্গে ডিএ বা মহার্ঘভাতা দেওয়া পিছিয়ে দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে সূত্রের খবর। তবে রাজ্যের আশা কর্মী, যাঁরা বাড়ি বাড়ি ঘুরে করোনা সংক্রান্ত তথ্য সংগ্রহ করছেন, তাঁদের বাড়তি হাজার টাকা দেওয়ার হবে বলে মুখ্যমন্ত্রী জানিয়েছেন৷ সরকারের এই সিদ্ধান্তে উপকৃত হবেন রাজ্যের প্রায় ২৬,৪৭৫ জন আশাকর্মী৷
বামপন্থী সমর্থক সংস্থাগুলি রাজ্যের এই সিদ্ধান্তকে স্বাগত জানালেও এই পদক্ষেপের বিরোধিতা করেছে বিরোধী দলগুলি৷ তাদের দাবি, ‘‘কেরলের মানুষকে ভিখারিতে পরিণত করার পন্থা নিয়েছে বামপন্থী সরকার৷ সরকারের এই নীতিতে নেতারা ধনী হবেন, আর জনগণ হবে ভিখারি৷ মাতৃভূমি চিন থেকে এই নীতি আমদানি করেছেন তাঁরা৷’’ মেডিক্যাল অফিসার্স অ্যাসোসিয়েশনের পক্ষ থেকেও এই সিদ্ধান্তের বিরোধিতা করা হয়েছে৷ তাঁদের বক্তব্য, ‘নিজেদের জীবন বাজি রেখে সামনের সারিতে দাঁড়িয়ে লড়াই করছেন স্বাস্থ্যকর্মীরা৷ এই সময় তাঁদের বেতন কাটা হচ্ছে৷ যা অত্যন্ত শোচনীয় ঘটনা৷’’ সরকারের এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়েছেন প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী ওমেন চণ্ডীও৷