উপত্যকায় বিপন্ন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা, নিরাপত্তা চেয়ে ফের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ

উপত্যকায় বিপন্ন কাশ্মীরি পণ্ডিতরা, নিরাপত্তা চেয়ে ফের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ

শ্রীনগর: মাসের পর মাস ধরে জঙ্গি হামলায় বেঘোরে প্রাণ যাচ্ছে কাশ্মীরি পণ্ডিতদের। একের পর এক জঙ্গি হামলায় ঝরছে সাধারণ বেসামরিক নাগরিকদের রক্ত। উপত্যকার অধিবাসীদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ সরকার। এই সমস্ত অভিযোগকে সামনে রেখেই বুধবার ফের রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখাতে শুরু করলেন উপত্যকার কাশ্মীরি পণ্ডিতরা। মঙ্গলবারই কাশ্মীরের সোপিয়ান জেলায় জঙ্গিদের গুলিতে মৃত্যু হয়েছে এক কাশ্মীরি পন্ডিত যুবকের। এই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন নিহত ওই যুবকেরই ভাই। এই ঘটনা প্রকাশ্যে আসতেই মঙ্গলবার বিকেল থেকে কাশ্মীরে বুধগাম এলাকায় নিরাপত্তার দাবিতে রাস্তায় নেমে বিক্ষোভ দেখান এক দল কাশ্মীরি পন্ডিত। বুধবার সকালে সেই বিক্ষোভই আরো বড় আকার নিয়েছে বলে খবর। বিক্ষোভকারীদের দাবি পুলিশ প্রশাসন তাদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণভাবে ব্যর্থ। উপত্যকায় বছরের পর বছর ধরে তারা নিপীড়িত। অথচ সবকিছু দেখার পরেও সরকার কোন পদক্ষেপে গ্রহণ করছে না। ফলে পরিস্থিতি সহ্যের সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।

উল্লেখ্য, চলতি বছরে প্রায় প্রত্যেক মাসেই উপত্যকায় একের পর এক কাশ্মীরি পণ্ডিত হত্যার ঘটনা ঘটেছে। প্রাথমিকভাবে এই জঙ্গি হামলাকে ‘টার্গেট কিলিং’ বলেই মনে করছেন সাধারণ বাসিন্দাদের একাংশ। তাদের দাবি, বেছে বেছে কাশ্মীরে পন্ডিত অমুসলিম সম্প্রদায় এবং ভিন রাজ্য থেকে আসা পরিযায়ী শ্রমিকদেরই টার্গেট করছে জঙ্গিরা। এইভাবে গত কয়েক মাসে বেশ কয়েকজন কাশ্মীরি পন্ডিতের পাশাপাশি পরিযায়ী শ্রমিক এবং হিন্দু ধর্মাবলম্বী সম্প্রদায়ের বেশকিছু মানুষের প্রাণ গিয়েছে জঙ্গি হামলায়। যার জেরে কাশ্মীরে সংখ্যালঘু হিন্দুদের মধ্যে আতঙ্ক ক্রমে বাড়ছে। অথচ পণ্ডিতদের এই দুর্দশার কথা জেনেও পুলিশ প্রশাসন তাদের নিরাপত্তা দিতে সম্পূর্ণ ব্যর্থ। এই সমস্ত দাবিকে সামনে রেখেই মঙ্গলবার বিকেল থেকে ফের বিক্ষোভে উত্তাল উপত্যকা।

 ইতিমধ্যেই কাশ্মীর পন্ডিত সংঘর্ষ সমিতির সংগঠনের তরফ থেকে জানিয়ে দেওয়া হয়েছে, প্রাণ বাঁচাতে যে যেভাবে পারেন কাশ্মীরের বিভিন্ন উপত্যকা থেকে জম্মু কিংবা দিল্লির মতো নিরাপদ স্থানে চলে যান। এই প্রসঙ্গে কাশ্মীরে পন্ডিত সংঘর্ষ সমিতির প্রধান সঞ্জয় টিক্কুর বক্তব্য, মঙ্গলবারের আক্রমণের ঘটনায় আরো একবার পুরো স্পষ্ট হয়েছে যে উপত্যকায় কতটা অনিরাপদ কাশ্মীরি হিন্দুরা। তাদের কখনোই নিরাপদে বেঁচে থাকতে দেবে না জেহাদীরা। গত ৩২ বছর ধরে এই পরিস্থিতি বিদ্যমান জম্মু-কাশ্মীরের বিভিন্ন জায়গায়। সরকারও কাশ্মীরি পণ্ডিতদের নিরাপত্তা দিতে পুরোপুরি ব্যর্থ। ফলে প্রাণ বাঁচাতে উপত্যকা ছেড়ে কোন নিরাপদ স্থানে চলে যাওয়াই এখন একমাত্র উপায়।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *