মুখের মধ্যে AK-47 এর ব্যারেল! কার্গিল যুদ্ধক্ষেত্রে কীভাবে বেঁচে ফিরেছিলেন IAF অফিসার

নয়াদিল্লি: আজ থেকে ২৫ বছর আগে কার্গিল যুদ্ধে পাক ঔদ্ধত্য গুঁড়িয়ে ভারতের ঝাণ্ডা উড়িয়েছিলেন এ দেশের বীর জওয়ানরা৷ ১৯৯৯ সালের সেই যুদ্ধে ঘটেছিল একের পর…

নয়াদিল্লি: আজ থেকে ২৫ বছর আগে কার্গিল যুদ্ধে পাক ঔদ্ধত্য গুঁড়িয়ে ভারতের ঝাণ্ডা উড়িয়েছিলেন এ দেশের বীর জওয়ানরা৷ ১৯৯৯ সালের সেই যুদ্ধে ঘটেছিল একের পর এক গায়ে কাটা জাগানো ঘটনা৷ তেমনই এক রোমহর্ষক কাহিনী উঠে এল ভারতীয় বিমান বাহিনীর তৎকালীন গ্রুপ ক্যাপ্টেন কামবামপতি নচিকেতা রাও ওরফে কে নচিকেতা রাওয়ের বর্ণনায়। ২০১৭ সালে চাকরি থেকে অবসর নেন তিনি৷ তবে এই প্রথম কার্গিল যুদ্ধের এক অজানা কাহিনী সকলের সঙ্গে ভাগ করে নিলেন বায়ুসেনা অফিসার।

মিগ-২৭ যুদ্ধ বিমান নিয়ে শ্রীনগর থেকে রওনা দিয়েছিলেন নচিকেতা। ছিলেন আরও চারজন। গন্তব্য ছিল কাশ্মীরের মুনথু ধলো। যেথানে তখন বিরাট ঘাঁটি গেড়ে বসেছিল পাকিস্তান৷ আচমকাই তাঁদের বিমানের একটি ইঞ্জিন বিকল হয়ে যাওয়ায় প্যারাশুটের সাহায্যে ফ্লাইট থেকে ঝাঁপ দিয়ে বেরিয়ে আসেন তাঁরা৷ তারপরের মুহূর্তটা ছিল রোমহর্ষক। উত্তেজনায় পরিপূর্ণ৷

 

নচিকেতা বলেন, ‘‘কিছুপর জ্ঞান ফেরে৷ চোখ খুলে দেখি চারিদিকে বরফ। গুলির তীব্র শব্দ! বুঝতে পারছিলাম না, কোথায় রয়েছি। একা নিঃসঙ্গ৷ সঙ্গে সঙ্গী বলতে ছোট একটা পিস্তল আর ১৬ রাউন্ড গুলি!” একটা পাখরের পিছনে লুকানোর চেষ্টা করেছিলেন নচিকেতা৷ কিন্তু, হঠাৎই তাঁর মুখের মধ্যে ভরে দেওয়া হল AK-47 এর ব্যারেল। পাকিস্তানি সেনারা চেয়েছিল, সেখানেই খতম করে দিতে৷ তবে এক অফিসার তাঁদের বোঝাতে সক্ষম হয়েছিলেন এবং ট্রিগার থেকে আঙুল সরিয়ে নিয়েছিলেন৷

 

২৫ বছর পর সেই স্মৃতি যেন ভর করে এল তাঁর দু’চোখের পাতায়৷ দেশকে শ্রদ্ধা জানানোর পাশাপাশি  কার্গিল যুদ্ধক্ষেত্রে মুখোমুখি হওয়া সেই পাকিস্তানি সেনাকর্তাকেও কৃতজ্ঞতা জানাতে ভোলেননি নচিকেতা। যাঁর জন্যে প্রাণে বেঁচে গিয়েছিলেন তিনি৷

পরে ভারতীয় সেনাবাহিনী তাঁকে উদ্ধার করে৷ জানতে পারেন ভারত সীমান্ত থেকে মাত্র ৬ কিমি দূরে গিয়ে পড়েছিলেন তিনি। ২৪ ঘণ্টার মধ্যে যুদ্ধক্ষেত্র থেকে বিশেষ বিমানে ইসলামাবাদ হয়ে রাওয়ালপিন্ডিতে নিয়ে আসা হয়েছিল ভারতের এই বায়ুসেনা অফিসারকে। সেখানে এক ছোট্ট সেলে আটকে রাখা হয়েছিল তাঁকে৷ না ছিল পর্যাপ্ত আলো, না খাবার। সঙ্গে নিদারুণ অত্যাচার! অবসরপ্রাপ্ত এয়ারফোর্স অফিসার বলেন, “ওরা চেয়েছিল সবধরনের অত্যাচার করতে,যাতে ভারতের সামরিক বিষয়ে কোনও তথ্য বার করে আনা যায়। তবে আমি ভাগ্যবান থার্ড ডিগ্রি প্রয়োগের আগেই আমাকে মুক্ত করা হয়েছিল।”