অটোচালক থেকে মেয়র! শপথ নিতে এলেন অটো চালিয়েই, সরবাননের জীবন যেন চিত্রনাট্য

অটোচালক থেকে মেয়র! শপথ নিতে এলেন অটো চালিয়েই, সরবাননের জীবন যেন চিত্রনাট্য

চেন্নাই:  এক সময় তাঁর পরিচয় ছিল অটোওয়ালা৷ তিনিই এখন তামিলনাড়ুর থাঞ্জাভুর জেলার কুম্বাকোনাম পুরসভার মেয়র৷ কংগ্রেসের টিকিটে জয়ী হয়ে দায়িত্ব গ্রহণ করলেন তিনি৷ একজন সাধারণ অটোওয়ালা থেকে মেয়র, কে সরবাননের জীবন কাহিনী হার মানায় সিনেমার চিত্রনাট্যকেও৷ 

আরও পড়ুন- নির্বাচনী প্রতিশ্রুতি পালন না করার শাস্তি কি জরিমানা? যা বলল আদালত

থাঞ্জাভুর জেলায় প্রায় দু’দশক অটো চালিয়ে জীবন কেটেছে তাঁর৷ সেই সরবাননই আজ কুম্বাকোনাম পুরসভার প্রথম মেয়র হিসাবে নিযুক্ত হলেন৷ জীবনের নতুন অধ্যায় শুরু হলেও ভোলেননি অতীতকে৷ শপথ নিতে এসেছিলেন অটো চালিয়েই৷ 

sarbanan

খুব অল্প বয়সে বাবা-মা’কে হারান সরবানন৷ এর পর দাদু-ঠাকুমা কাছেই মানুষ৷ দশম শ্রেণির পর আর পড়াশোনা হয়নি তাঁর৷ জীবন ধারনের তাগিদে পথে নামেন রোজগারের আশায়৷ আপাতত স্ত্রী ও তিন সন্তান নিয়ে তামিলনাড়ুর থুক্কামপালায়মে একটি ভাড়া বাড়িতে থাকেন বছর ৪২-এর সরবানন৷ পাঁচ জনের ছোট সংসার বেশ সুখেই কাটছিল৷ কিন্তু সেই সুখে কাঁটা হয়ে বিঁধল করোনা৷ সংক্রমণের দাপটে প্রায় বন্ধ হয় উপার্জন৷ জমানো পুঁজিও ছেকে তলানিতে৷ দিনে ২০০ টাকা রোজগার করতে গিয়েও হিমশিম খেতে হয় তাঁকে৷ চরম আর্থিক সংকটের মধ্যে অবশ্য প্রতিবেশীদের পাশে পেয়েছিলেন সরবানন৷ প্রতিবেশীরা যথাযথ সাহায্য করেছিলেন তাঁকে৷ তবে তাঁরও হয়তো কোনও দিন ভাবতে পারেনি, দিন আনা দিন খাওয়া সেই সরবাননই একদিন কুম্বাকোনাম শহরের মেয়রের পদে বসবেন৷ 

সরবানন

এদিকে, এতদিন অবশ্য কুম্বাকোনমের কাছে পুরসভার তকমা ছিল না। সম্প্রতি কুম্বাকোনম শহরকে নতুন পুরসভা হিসেবে ঘোষণা করে তামিলনাড়ু সরকার৷ এর পরেই পুরভোটে ভারতের অন্যতম এই মন্দির শহরের ১৭ নম্বর ওয়ার্ড থেকে প্রার্থী হন কে সরবানন। ২,১০০ ভোটের মধ্যে ৯৬৪ ভোট পেয়ে জয়যুক্ত হন তিনি৷ ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন ঠিকই কিন্তু জিতবেন এমনটা ভাবতে পারেননি৷ হেভিওয়েট প্রার্থীদের হারিয়ে জয় আসে তাঁর ঝুলিতে৷ এর পর যখন তাঁকে মেয়র পদপ্রার্থী হিসাবে বেছে নেওয়া হয়, তখন তিনি দলের নেতৃত্বকে বলেন, তিনি এক জন অটোচালক৷ মেয়র হওয়ার যোগ্যতা তাঁর নেই। কিন্তু দলীয় নেতৃত্বের চোখে তিনিই সঠিক মানুষ এবং এই পদের যোগ্য প্রার্থী৷ 

শপথ গ্রহণের দিন অটো চালিয়েই আসেন সরবানন৷ শপথ নেওয়ার পর নতুন মেয়র জানান, তাঁর প্রধান লক্ষ্য হবে শহরে ভূগর্ভস্থ নিকাশি ব্যবস্থার কাজ সম্পূর্ণ করা। পাশাপাশি রাস্তা মেরামত, বিশুদ্ধ পানীয় জল ও রাস্তায় পর্যাপ্ত আলোর বন্দোবস্ত করা৷ মানুষের সেবাই হবে তাঁর প্রধান লক্ষ্য৷