শেষ জীবনের সমস্ত সঞ্চয় টিকা কিনতে দান করলেন বিড়ি শ্রমিক

শেষ জীবনের সমস্ত সঞ্চয় টিকা কিনতে দান করলেন বিড়ি শ্রমিক

 
কোঝিকোড়: এবার থেকে ৪০০ টাকায় টিকা কিনতে হবে শুনে, কন্নড়ের ছোট্ট গ্রামের এক বিড়ি শ্রমিক মানুষকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন দেওয়ার জন্য জীবনের শেষ সঞ্চয়টুকুও দান করে দিলেন।

১৩ বছর  বয়সে বিড়ি বাঁধার কাজ শুরু করেন ৬৩ বছরের জনার্দনন। গত বছর ২৬ জুন তাঁর স্ত্রী ব্রেন টিউমারে আক্রান্ত হয়ে মারা যান৷ দু’জনেই দীনেশ বিড়ি সংস্থায় প্রায় ৩৬ বছর ধরে কাজ করেছেন৷ অবসরের সময় ভাতা হিসেবে হাতে পেয়েছিলেন মাত্র ২ লক্ষ টাকা। মুখ্যমন্ত্রীর ডিএস ডিসট্রেস রিলিফ ফান্ডে সেটাও দান করে দিলেন ওই বিড়ি শ্রমিক। সরকারি ভ্যাকসিন চ্যালেঞ্জ ক্যাম্পেইনে এভাবেই সাহায্য করলেন কন্নুড়, চালদান হাউজের জনার্দনন৷ এখন তাঁর অ্যাকাউন্টে মাত্র ৮০০-র বেশি কিছু টাকা পড়ে রয়েছে। 

এখন তিনি কেএম নামে অন্য একটি সংস্থায় বিড়ি বাঁধার কাজে নিযুক্ত৷ প্রতিদিন বিড়ি বানিয়ে নিজের জীবনযাপন করেন এই ব্যক্তি। জনার্দনন নিজে একজন সিপিএম সমর্থক এবং মুখ্যমন্ত্রী পিনারাই বিজয়নের ভক্ত৷ বৃহস্পতিবার তিনি খবরের কাগজে পড়েন যে, মুখ্যমন্ত্রী সাংবাদিক সম্মেলন করে জানিয়েছেন এবার থেকে করোনার ভ্যাকসিন ৪০০ টাকা করে কিনতে হবে সকলকে৷ যেটা আগে বিনামূল্যে পাওয়া যাচ্ছিল৷ সাধারণ মানুষকে বিনামূল্যে ভ্যাকসিন প্রদান করাটা সরকারের কাছে যখন বোঝা হয়ে দাঁড়াচ্ছে, তখন তিনিই এগিয়ে আসার সিদ্ধান্ত নেন৷

পরদিন সকাল ১০টায় কোঅপারেটিভ ব্যাঙ্কে পৌঁছন দু’লক্ষ টাকা সরকারি কোষাগারে প্রদানের জন্য৷ সাংবাদিকদের তিনি বলেন, ‘সাধারণ মানুষের কথা ভেবেই সিএমডিআরএফের কাছে টাকা প্রদান করি। কারণ দেশ এবং রাজ্যের করোনা পরিস্থিতি আমাকে ভাবিয়ে তুলছে।’ তিনি আরও জানান, ব্যাঙ্ক কর্মীরা তাঁর ২ লক্ষ টাকা দানের কথা শুনেই অবাক হয়ে গিয়েছিলেন। তাঁর সঞ্চয় সম্পর্কেও তাঁরা খোঁজখবর নেন৷  ব্যাঙ্কের কর্মীরা তাঁকে এক লক্ষ টাকা দান করার পরামর্শ দেন, কিন্তু এই বিড়ি শ্রমিকের দানশীল মনোভাব তাঁকে সেটা করতে দেয়নি। তিনি জীবনের পুরো সম্বলটুকু দান করেছেন।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

twelve − six =