নয়াদিল্লি: বিশ্বজুড়ে আছড়ে পড়েছে করোনার তৃতীয় ঢেউ৷ লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা৷ গত দুই বছর ধরে করোনার সঙ্গে বাস বিশ্ববাসীর৷ এই দুই বছরে দুটি শব্দ আমাদের জীবনের সঙ্গে ওতপ্রোতভাব জড়িয়ে গিয়েছে৷ আর সেটা হল আইসোলেশন এবং কোয়ারেন্টাইন৷ এতদিন কোরনা আক্রান্তদের ক্ষেত্রে ১৪ দিনের নিভৃতবাসের নিয়ম লাগু ছিল৷ তবে নিভৃতবাসের মেয়াদ কমিয়ে দিয়েছে আমেরিকা-ইউরোপের মতো দেশগুলি৷ এবার সেই পথেই হাঁটতে চলেছে ভারত৷ এবার থেকে নিভৃতবাসের মেয়াদ হবে সাত দিনের৷ তেমনই ইঙ্গিত দিল আইসিএমআর৷ তৃতীয় ঢেউয়ের মুখে দাঁড়িয়ে নতুন ক্লিনিক্যাল প্রোটোকলও জারি করতে চলেছে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য সংস্থা।
আরও পড়ুন- একধাক্কায় মহারাষ্ট্রে দৈনিক করোনা সংক্রমণ বাড়ল প্রায় ৫১%, শুধু মুম্বইতেই বৃদ্ধি ৩৪%
কোভিডের প্রথম ঢেউ যখন আছড়ে পড়েছিল, তখন হাতে ভ্যাকসিন ছিল না৷ দ্বিতীয় ঢেউয়ের সময় করোনা বিরোধী লড়াইয়ে অস্ত্র হিসাবে চলে এসেছিল ভ্যাকসিন৷ প্রথম দফায় সংক্রমণের পর ভারতের বিরাট সংখ্যক জনগোষ্ঠীর মধ্যে স্বাভাবিকভাবেই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা তৈরি হয়। সেই সঙ্গে অধিকাংশ মানুষই ভ্যাকসিনের দুটি ডোজ নিয়ে ফেলেছেন। ফলে সংক্রমিত হলেও আক্রন্ত ব্যক্তির শারীরে উপসর্গ ছিল অনেকটাই কম। পরিস্থিতি বিবেচনা করেই ১০ দিনের হোম আইসলেশন বা নিভৃতবাসের গাইডলাইন প্রকাশ করে কেন্দ্র৷
তৃতীয় ঢেউয়ের মুখোমুখি দাঁড়িয়ে আগের নিয়ম বহাল রেখেই রাজ্য স্বাস্থ্য দফতর করোনা আক্রান্ত চিকিৎসকদের ১০ দিনের জন্য হোম আইসলেশনে থাকার নিয়ম জারি করেছিল৷ নতুন বছরের শুরুতে সংক্রমণ অতিরিক্ত বাড়তে শুরু করলেও দ্রুত সুস্থ হচ্ছে বলেও আইসিএমআরের পর্যবেক্ষণ। সেই দিকটি বিবেচনা করেই আইসিএমআরের সহ অধিকর্তা ডা সমীরন পান্ডার কথায়, “নিভৃতবাসের সময় ১০ দিন থেকে কমিয়ে এক সপ্তাহ করার পরিকল্পনা করা হচ্ছে৷ কারণ দেখা গিয়েছে দ্রুত সংক্রমণ ছড়ালেও ভাইরাসের মারণ ক্ষমতা ক্রমশ কমছে। দেখতে গেলে মানব সভ্যতার কাছে ক্রমশ পরাজিত হচ্ছে ভাইরাস৷ তাই হোম আইসলেশনে থাকার মেয়াদ এক সপ্তাহ করা যায় কি না, তা পর্যালোচনা করে দেখা হচ্ছে৷ তবে হাসপাতালে ভরতি হলে বা কোনও রোগীর কোমর্বিডিটি থাকলে এই নিয়ম প্রযোজ্য হবে না৷”
আবার রাজ্যের স্বাস্থ্য অধিকর্তা ডা. অজয় চক্রবর্তী বলেন, ‘‘দেখা যাচ্ছে আক্রান্ত হওয়ার পাঁচ দিনের মধ্যেই রোগী সুস্থ হতে শুরু করছেন। অর্থাৎ ভাইরাসের ক্ষমতা কমতে শুরু করছে। পরবর্তী পাঁচ দিনের মধ্যে সুস্থ হয়ে যাচ্ছেন রোগী। তাই চিকিৎসকদের ১৪ দিনের বদলে ১০ দিন নিভৃতবাসের কথা বলা হয়েছে।” সেই সঙ্গে অজয়বাবু এও জানিয়েছে, ‘‘আইসিএমআর-ই কোভিড সংক্রান্ত প্রোটোকল তৈরি করে৷ ফলে কোনও রাজ্যই আলাদা করে গাইডলাইন তৈরি করতে পারে না৷’’