নয়াদিল্লি: ভারতের হাতে থাকা মিগ-২১ নাকি পাকিস্তানের হাতে থাকা এফ-১৬ কোনটি সেরা? গোটা বিশ্বে এই দুই বিমানই সেরা। এর মধ্যে পোল্যান্ডের কাছে এই দুই যুগান্তকারী বিমান রয়েছে। প্রকৃতপক্ষে একে অপরকে পাল্লা দেওয়ার জন্য এই দুই বিমান তৈরি করা হয়নি। এই দুই বিমান তৈরি করা হয়েছে ভিন্ন ভিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে। যার ফলে এই দুই বিমানের ব্যবহার একই রকম হয় না। মার্কিন সংস্থা লকহিড মার্টিনের তৈরি এফ-১৬ তৈরি করা হয়েছে মূলত অর্থ সাশ্রয়ী হওয়ার জন্য।
এই বিমান হালকা, বহুমুখী। আর অন্যদিকে মিগ-২১ হল এয়ার সুপেরিওটি ফাইটার জেট। মিগ-২১ একটি অসাধারণ ও কালজয়ী যুদ্ধ বিমান বলা হয়। জন্ম ১৯৫৬ সালে হলেও এটি এখনও সার্ভিসে রয়েছে। কোনও বিমান মিগ-২১ এর মত জনপ্রিয়তা পাইনি। ১৯৮৫ সালে মিগ-২১ এর উৎপাদন রাশিয়া বন্ধ করে দেওয়ার আগে পর্যন্ত মোট ১১,৫০০ টির মত মিগ-২১ তৈরি করা হয়েছে। তাছাড়াও এই বিমানের প্রায় ৩ হাজারের মত লাইসেন্স ভার্সন তৈরি হয়েছে রাশিয়ার বাইরে বিভিন্ন দেশে। ১৯৫৬ সালের পর পৃথিবীর প্রায় প্রতিটি যুদ্ধেই এর ব্যবহার লক্ষ্য করা যায়। একসময় মিগ নিয়ে প্রচণ্ড চিন্তায় থাকত ইজরায়েল ও আমেরিকা। সম্প্রতি সিরিয়ায় জঙ্গি নিকেশে ওড়ানো হয়েছিল এই মিগ-২১ বিমান। তবে ভারত, সিরিয়া ছাড়া প্রায় সব দেশই এই বিমান অবসরে পাঠিয়েছে।
এফ-১৬ ফাইটিং ফ্যালকন নামে যুদ্ধবিমান আমেরিকার বিমান বাহিনীর অন্যতম সেরা ফাইটার এয়ারক্রাফট। এটি চতুর্থ প্রজন্মের মাল্টিরোল ডেটাইম ফাইটার। মার্কিন বিমান বাহিনীর জেনারেল ডাইনামকিস এফ-১৬ এর ডিজাইন করেছিলেন। ১৯৭৬ সালে অনুমোদন পাওয়ার পর এখনও পর্যন্ত প্রায় সাড়ে ৪ হাজার এফ-১৬ যুদ্ধবিমান তৈরি করা হয়েছে। একবার জ্বালানি নিয়ে যুদ্ধবিমানটি টানা ৮০০ কিলোমিটার উড়তে পারে।
এফ-১৬ যুদ্ধবিমানটি লম্বায় ৪৯ ফুট ৫ ইঞ্চি, উচ্চতায় ১৬ ফিট। প্রায় ৯ হাজার কেজি ওজনের এই যুদ্ধবিমানটি ঘণ্টায় ১৫০০ কিলোমিটার গতিতে ছুটতে পারে এবং ৩২০০ কিলোমিটার দূরের লক্ষ্যবস্তুতে আঘাত হানতে সক্ষম। এছাড়া যুদ্ধবিমানটি ৬টি এয়ার-এয়ার, এয়ার-সারফেস এবং এয়ার-শিপ ক্ষেপণাস্ত্রও বহন করতে পারে। যুদ্ধবিমানটি নানা সময়ে আমেরিকা, ইজরায়েল, তুরস্ক ও মিশরের হয়ে এর সক্ষমতা দেখিয়েছে।