নয়াদিল্লি: ভারতের আবহাওয়া বিভাগ (আইএমডি), পুনের জলবায়ু গবেষণা ও পরিষেবা (সিআরএস) অফিসের বিজ্ঞানীরা ভারতের প্রথম ‘ক্লাইমেট অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি অ্যাটলাস’ চালু করেছেন। যেখানে পশ্চিমবঙ্গের সুন্দরবন, ওড়িশার উপকূলবর্তী জেলা এবং তামিলনাড়ুর রামনাথপুরম, পুদুকোট্টাই ও তাঞ্জাভুরকে ৮.৫ থেকে ১৩.৭ মিটার পর্যন্ত শক্তিশালী ঝড়ের সবচেয়ে ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল হিসাবে চিহ্নিত করা হয়েছে৷
আরও পড়ুন- আনুষ্ঠানিকভাবে টাটা গোষ্ঠীর হাতে এল ‘মহারাজা’! পাল্টাচ্ছে একাধিক নিয়ম
আইএমডি পুণের সিআরএস দফতরের বিজ্ঞানী আইএমডি’র ১৪৭তম প্রতিষ্ঠা দিবসে ভারতের ‘ক্লাইমেট হ্যাজার্ড অ্যান্ড ভালনারেবিলিটি অ্যাটলাস’ তৈরি করেন৷ এই অ্যাটলাস উদ্বোধন করেন ড. জিতেন্দ্র সিং৷ বিপর্যয় মোকাবিলা দফতর যাতে ঝুঁকিপূর্ণ জেলাগুলিকে চিহ্নিত করে প্রতিরোধমূলক ব্যবস্থা গ্রহণ করতে পারে, তা নিশ্চিত করাই এই অ্যাটলাসের অন্যতম লক্ষ্য৷ এখানে মানচিত্রের মাধ্যমে জেলাস্তরে ঝুঁকিপূর্ণ কেন্দ্রগুলিকে চিহ্নিত করা হয়েছে৷ অ্যাটলাস তৈরি হয়েছে চরম বৃষ্টিপাত, শৈত্যপ্রবাহ, খরা, তাপপ্রবাহ, শিলাবৃষ্টি, বজ্রঝড়, ধুলো ঝড়, বজ্রপাত, ঘূর্ণিঝড়, তুষারপাত, কুয়াশা এবং বাতাসের উপর ভিত্তি করে। বিপদ এবং ঝুঁকির মান তৈরি হয়েছে আবহাওয়া বিভাগের জলবায়ু ডেটার উপর ভিত্তি করে।
একটি মূল্যায়ন ভিত্তিক রিপোর্টে বলা হয়েছে, পশ্চিম উপকূলের সমস্ত উপকূলবর্তী অঞ্চল ছাড়াও অন্ধ্রপ্রদেশের প্রকাশম, গুন্টুর ও কৃষ্ণা জেলা, গুজরাটের ভাবনগর এবং কচ্ছকে উচ্চ ঝড়ের ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল বলে চিহ্নিত করা হযেছে৷ অন্যদিকে, পূর্ব উপকূলের পূর্ব গোদাবরী, প্রকাশম, কৃষ্ণা, পশ্চিম গোদাবরী, রত্নাগিরি, সিন্ধুদুর্গ, দক্ষিণ গোয়া এবং পশ্চিম উপকূলের উত্তর কন্নড়ে ৫০-৬০ সেন্টিমিটার পরিসরে তীব্র ঘূর্ণিঝড়ের সঙ্গে বৃষ্টিপাতের সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি বলে উল্লেখ করা হয়েছে।
বিজ্ঞানীরা জানাচ্ছেন, পশ্চিমবঙ্গ, ঝাড়খণ্ড, তেলেঙ্গানা এবং তামিলনাড়ুর বেশ কয়েকটি জেলায় ঘূর্ণিঝড়ের কারণে ৩৫ থেকে ৫০ সেন্টিমিটার পর্যন্ত অতিমাত্রায় বৃষ্টিপাতের ঝুঁকি রয়েছে। হিন্দুস্তান টাইমসের একটি প্রতিবেদন অনুসারে, তামিলনাড়ুর কুড্ডালোর থেকে শুরু করে পশ্চিমবঙ্গের দক্ষিণ ২৪ পরগনা পর্যন্ত প্রায় সমস্ত পূর্ব উপকূলে প্রতি দুই থেকে তিন বছর পর পর বেশ কয়েকটি ঘূর্ণিঝড় হয়। কেরালার কান্নুর, ত্রিশুর কোঝিকোড় এবং এরনাকুলাম জেলা, উত্তর ও দক্ষিণ গোয়া, কচ্ছ জুনাগড়, দেবভূমি এবং গুজরাটের পোরবন্দর প্রতি ৪ থেকে ১০ বছরে মারাত্মক ঘূর্ণিঝড়ের সাক্ষী হয়৷
ভারতের এই অ্যাটলাস ১৩টি চরম প্রাকৃতিক অবস্থা যেমন তাপপ্রবাহ, শৈত্যপ্রবাহ, বজ্রপাত, বন্যা, খরা, কুয়াশা, বাতাসের ঝুঁকি, ধুলি ঝড়, তুষারপাত, শিলাবৃষ্টি, বজ্রপাত, চরম বৃষ্টিপাত এবং ঘূর্ণিঝড়ের প্রভাব প্রশমিত করবে বলে আশা করা হচ্ছে৷ এই সকল প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের কারণে ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হতে পারে। অ্যাটলাসে মোট ৬৪০টি ক্লাইমেট ভালনারেবিলিটির ম্যাপ রয়েছে। আবহাওয়া ব্যুরো জলবায়ু ঝুঁকিপূর্ণ অঞ্চল চিহ্নিত করে মানচিত্রে দৃশ্যমান করতে জিওগ্রাফিক্যাল ইনফরমেশন সিস্টেম ব্যবহার করা হয়েছে৷