নয়াদিল্লি: দেশে করোনা পরিস্থিতি ক্রমশ জটিল হয়ে উঠছে জানাল কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রক। যেখানে আক্রান্তের সংখ্যা ১০০ থেকে ১০০০ পৌঁছতে লেগেছিল ১২ দিন সেখানে মাত্র ৪দিনে ২০০০ পার করেছে। মোট আক্রান্তদের ৩৫ শতাংশ নিজামুদ্দিনের সঙ্গে যুক্ত৷ শনিবার বিকেল পর্যন্ত আক্রান্তের সংখ্যা বেড়ে ২৯০২। স্বাস্থ্যমন্ত্রকের পরিসংখ্যান অনুসারে গত ২৪ ঘণ্টায় ৬০১ জনের কোভিড-১৯ পজিটিভ সনাক্ত করা হয়েছে৷ যা এপর্যন্ত একদিনের হিসেবে রেকর্ড৷ কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্যমন্ত্রকের রাজ্য ও জেলা ভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুসারে, দেশের জেলাগুলিতে ৩০ শতাংশ হারে করোনা আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে৷ সেখানে বড় রাজ্যগুলির জেলা ভিত্তিক আক্রান্তের সংখ্যা ৬০ শতাংশ হারে বেড়েছে৷ ছোটো রাজ্যগুলির ক্ষেত্রে বৃদ্ধির হার ৩০ শতাংশ৷ স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে, জেলাভিত্তিক পরিসংখ্যান অনুযায়ী এপর্যন্ত ১৯৬৫ জনের দেহে করোনা সংক্রামণ নিশ্চিত করা হয়েছে৷
বিশেষজ্ঞদের মতে দেশে এই হারে আক্রান্তের সংখ্যা বৃদ্ধি পেলে করোনা নিয়ন্ত্রণে রাখার সমস্ত প্রচেষ্টা ব্যর্থ হবে, যেহেতু দেশে এখনো পর্যন্ত টেস্টিং কিট থেকে শুরু করে চিকিৎসার জন্য প্রয়োজনীয় সরঞ্জাম সহ আনুসাঙ্গিক বহু জিনিসের অভাব রয়েছে। তাঁদের মতে লকডাউনের ফলে জেলাগুলিতে এখনও পর্যন্ত পরিস্থিতি অনেকটাই নিয়ন্ত্রণে রাখা সম্ভব হয়েছে। কিন্তু সাধারণ মানুষের বেপরোয়া মনোভাব চিন্তা কর কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
জওহরলাল নেহেরু সেন্টার ফর অ্যাডভান্সড সায়েন্টিফিক রিসার্চের (জেএনসিএএসআর) প্রফেসর সন্তোষ অংশুমালি এবং আইআইএসসি-র অলোক কুমারের মতে এপ্রিলের শেষদিক পর্যন্ত করোনা আক্রান্তদের চিকিৎসার জন্য ১৬,০০০রেসপিরেটরি পাম্প এবং ৫০,০০০ ভেন্টিলেটরের প্রয়োজন হবে। এদিকে কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রক জানিয়েছে ৬০০০-এর কিছু বেশি ভেন্টিলেটর এবং ২০০০ আইসিইউ বেডের ব্যবস্থা করা যাবে। যার পুরোটাই জেলা সদর বা বড় শহরগুলোতে দেওয়া হবে।
সবদিক থেকে দেখলে জেলা স্তরে প্রত্যন্ত এলাকাগুলিতে করোনা মোকাবিলার পর্যাপ্ত সুযোগ সুবিধা থেকে বঞ্চিত হচ্ছে। ১৭ টি রাজ্য এবং একটি কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল যেখানে ২০ টিরো বেশি জেলা আছে, তারমধ্যে ১১টি রাজ্যের জেলাগুলিতে ২০ শতাংশের বেশি করোনা আক্রান্ত। সিনার্জিয়া ফাউন্ডেশনের থিঙ্ক ট্যাঙ্ক টবি সিমোন টাইমস অফ ইন্ডিয়াকে বলেন, জেলা এবং সদরগুলিতে স্থানীয় কর্তৃপক্ষকে প্রস্তুতি আরও জোরদার করতে হবে। পাশাপাশি প্রস্তুতিতে ঘাটতি ও সর্বোপরি দুরত্ব বজায় রাখা এবং নজরদারির ক্ষেত্রেও কড়া পদক্ষেপ গ্রহণ করতে হবে।