নয়াদিল্লি: ভারত ও চিন সেনার সংঘাতে ক্রমেই উত্তপ্ত হচ্ছে পূর্ব লাদাখের ভারত-চিন সীমান্ত৷ সোমবার রাতে গলওয়ান উপত্যকায় দু’দেশের সেনা সংঘর্ষে ক্ষয়ক্ষতির সংখ্যা এবার প্রকাশ করল সংবাদ সংস্থা এএনআইএ৷
ক্ষয়ক্ষতির পরিসংখ্যান তুলে ধরল সংবাদ সংস্থা এএনআই জানিয়েছে, লাদাখে ভারত-চীন সংঘর্ষ অন্ততপক্ষে ২০ জন ভারতীয় জওয়ান শহিদ হয়েছেন৷ চিনের তরফে গোটা বিষয়টি ধামাচাপা দেওয়ার চেষ্টা করা হলেও পরে সংবাদ সংস্থা সূত্রে সেই তথ্য ফাঁস করে দিয়েছে৷ জানানো হয়েছে, চিনে এখনও পর্যন্ত ৪৩ জন জওয়ানের মৃত্যু হয়েছে৷
গোটা ঘটনায় কড়া বিবৃতি দিয়েছে বিদেশমন্ত্রক৷ জানানো হয়েছে, চিন যদি তার দিয়ে তাদের আগের অবস্থানে থাকতো তাহলে দুই পক্ষেরই ক্ষয়ক্ষতি কম হত না৷ ভারতীয় সেনা ভারতের ভূখণ্ডের মধ্যে ছিল৷ চিন তাদের সীমাবদ্ধতার বাইরে ছিল৷ ভারত শান্তি পক্ষে, সাফ জানিয়ে দেওয়া হয়েছে বিদেশমন্ত্রকের তরফে৷
লাদাখে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখার পরিস্থিতি নিয়ে চিফ অফ ডিফেন্স স্টাফ বিপিন রাওয়াত, সেনাপ্রধান এবং বিদেশমন্ত্রী এস জয়শংকরের সঙ্গে বৈঠকে বসেন প্রতিরক্ষামন্ত্রী রাজনাথ সিং। জানা গিয়েছে, প্রায় ৯০ মিনিট ধরে এই বৈঠক চলে এই বৈঠক৷ অন্যদিকে, সীমান্তে চলছে সেনা স্তরে বৈঠক৷ একটি বিবৃতিতে সেনাবাহিনীর তরফে জানানো হয়েছে, ‘‘সোমবার মধ্যরাতে গালওয়াল উপত্যকা থেকে সেনা সরানোর প্রক্রিয়া চলার সময়ই সংঘর্ষ শুরু হয়৷ সংঘর্ষে দুই দেশের সেনারই মৃত্যু হয়েছে৷ পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনায় বসেছে দুই দেশের উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিকরা৷’’
জানা গিয়েছে, গলওয়ান সংঘর্ষের পর সীমান্ত পরিস্থিতি নিয়ে আলোচনা করতে বৈঠকে বসতে চায় চিন৷ এর পরই সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ বৈঠকে বসেন দুই পক্ষের উচ্চপদস্থ সেনা আধিকারিকরা৷ দুপুর অবধি চলে সেই বৈঠক। শনিবারই সেনাপ্রধান এমএম নারাভানে জানিয়েছিলেন, গলওয়ান উপত্যকা থেকে দুই দেশই তাঁদের সেনা সরানোর কাজ শুরু করে দিয়েছে। এমনকী প্রকৃত নিয়ন্ত্রণ রেখার ১৪, ১৫ এবং ১৭এ পয়েন্ট থেকে টহলদারি তুলে নেওয়ার বিষয়ে কথা বলছে দু’পক্ষ৷ এর পরই সোমবার মধ্যরাতে সংঘর্ষ বাধে৷
এদিকে, ভারতীয় ভূখণ্ডে ঢুকে বারবার চিনা সেনার আক্রমণের বিরুদ্ধে কেন্দ্রকে কড়া প্রতিক্রিয়া জানানোর আর্জি জানিয়েছেন পঞ্জাবের মুখ্যমন্ত্রী ক্যাপ্টেন অমরিন্দর সিং৷ অন্যদিকে, রাজনৈতিক দলগুলিকেও সীমান্তের পরিস্থিতি সম্পর্কে সমস্তটা জানাতে হবে বলে দাবি জানিয়েছে কংগ্রেস৷ ৪৫ বছর পরে চিনা হামলায় মৃত্যু হল ভারতীয় সেনার৷ ১৯৭৫ সালে অরুণাচল প্রদেশের চিন টুলুং লায় অসম রাইফেলসের টহলদার বাহিনীর উপর হামলা চালিয়েছিল চিন সেনা৷ মৃত্যু হয়েছিল চার জওয়ানের৷ গত মে মাসের গোড়ার দিতে পূর্ব লাদাখের গলওয়ান উপত্যকা, নাকু লা এবং প্যাগং লেকের উত্তরপ্রান্তে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা পেরিয়ে ভারতীয় এলাকায় কয়েক কিলোমিটার অনুপ্রবেশ করে চিনা সৈনিক। এরপরেই সেখানে মোতায়েন করা হয় ভারতীয় ফৌজ। এর পর দফায় দফায় সেনাস্তরের বৈঠক হলেও এখনও জট কাটেনি।