চিনা ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে লাদাখে মোতায়েন টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্ক

চিনা ঘাঁটি গুঁড়িয়ে দিতে লাদাখে মোতায়েন টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্ক

 

নয়াদিল্লি: পূর্ব লাদাখের গালওয়ান উপত্যকায় ভারত-চিন রক্তক্ষয়ী সংঘর্ষের পর থেকেই উত্তপ্ত প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা৷ সেনা পর্যায়ে বৈঠকের মাধ্যমে দুই দেশ সমস্যার শান্তিপূর্ণ সমাধান চাইলেও, ভারত যে যুদ্ধের জন্য প্রস্তুত, তা বোঝাতে সীমান্তে বাড়ানো হচ্ছে রণ-সরঞ্জাম৷ যুদ্ধক্ষেত্রে চিনকে মোক্ষম জবাব দিতে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় মোতায়েন করা হয়েছে বিধ্বংসী ‘টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্ক’৷ 

মঙ্গলবার দুপুরে কোর কমান্ডার পর্যায়ে বৈঠকের মাঝেই লাদাখে পৌঁছয় ‘ভীষ্ম’৷ আগের দু’বার চিনের দিকে মল্ডো পয়েন্টে বৈঠক হলেও, গতকালের বৈঠক হয় ভারতীয় ভূখণ্ডের চুসুল পয়েন্টে। এর আগে ২২ জুন প্রায় ১১ ঘণ্টার ম্যরাথন বৈঠকের পর জানানো হয়েছিল, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে ধাপে ধাপে সেনা সরাতে সম্মত হয়েছে চিন৷ কিন্তু উপগ্রহ চিত্রে দেখা গিয়েছে, প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা থেকে চিন আদৌ তাদের বাহিনী সরায়নি। বরং কালো ত্রিপলের ছাউনির মতো অস্থায়ী কাঠামো তৈরির চিত্র ধরা পড়েছে।

প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় ৯ কিলোমিটার এলাকাজুড়ে চিনা লাল ফৌজের ১৬টি ক্যাম্পের ছবি দেখা গিয়েছে স্যাটেলাইটে৷ রয়েছে কয়েকশো ট্যাঙ্ক, গাড়ি, বুলডোজার৷ এই রণসজ্জা দেখে চুপ নেই ভারতও৷ মোতায়েন করা হয়েছে টি-৯০ ভীষ্ম ট্যাঙ্ক৷ এছাড়াও পূর্ব লাদাখের ১৫৯৭ কিলোমিটার দীর্ঘ প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা জুড়ে ইনফ্যান্ট্রি কমব্যাট ভেহিকল (সাঁজোয়া গাড়ি) মোতায়েন করা হয়েছে বলে সূত্রের খবর। বাড়ানো হয়েছে আর্টিলারিও। চিনুক কপ্টারে করে সীমান্তে মোতায়েন করা হয়েছে “এম৭৭৭” ১৫৫ এমএম আল্ট্রা লাইট হাউইৎজার কামান।

১৯৬৫ সালের ভারত-পাক যুদ্ধ ছিল বিশ্বের অন্যতম বড় ট্যাঙ্ক যুদ্ধ। এরপর নিজেদের ট্যাঙ্কবাহিনীকে আরও শক্তিশালী করতে ২০০১ সালে রাশিয়ার থেকে টি-৯০ ট্যাঙ্ক কেনে নয়াদিল্লি। প্রথম ধাপে ৩১০টি টি-৯০ ট্যাঙ্ক কেনা হয়েছিল৷ পরে রাশিয়ান টি-৯০ ট্যাঙ্কের প্রযুক্তিতে কিছু বদল আনা হয়৷ এই ট্যাঙ্ক এখন আগের চেয়েও অনেক বেশি শক্তিশালী ও বিধ্বংসী। সূত্রের খবর, সীমান্তে যে কোনও পরিস্থিতির জবাব দিতে ট্যাঙ্ক তৈরি রাখছে ভারতীয় বাহিনী। 

বিশ্বের অন্যতম শক্তিশালী যুদ্ধ-ট্যাঙ্ক টি-৯০ ভীষ্ম যে কোনও রকম জৈব ও রাসায়নিক অস্ত্র বহনে সক্ষম৷ এর ২এ৪৬এম ১২৫ মিলিমিটার ট্যাঙ্ক-গান থেকে ৬০ সেকেন্ডে ৮টি সেল ছোড়া যায়। রাশিয়ার কাছ থেকে কেনার পর এই ট্যাঙ্কে এক্সপ্লোসিভ রিঅ্যাক্টিভ আর্মার লাগায় ভারত। অর্থাৎ  শত্রুপক্ষ বোমা মেরে এই ট্যাঙ্ক ওড়ানোর চেষ্টা করলে স্বয়ংক্রিয় ভাবে তা রুখতে পারবে টি-৯০ ট্যাঙ্ক। এছাড়াও ৪৮ টন ওজনের এই ট্যাঙ্কে রয়েছে সেমি-অটোমেটিক লেজার বিম-রাইডিং গাইডেন্স। এর পাল্লা ১০০ মিটার থেকে ৬ কিলোমিটার পর্যন্ত। এর টার্গেট পয়েন্টে শত্রুপক্ষের হেলিকপ্টার চলে এলে, তা নির্ভুল নিশানায় উড়িয়ে দিতে পারবে টি-৯০ ভীষ্ম। এই ট্যাঙ্কে রয়েছে ১০০০ হর্সপাওয়ার ইঞ্জিন। ৭২ কিলোমিটার প্রতি ঘণ্টা বেগে ছুটে যেতে পারে এই ট্যাঙ্ক। রয়েছে অ্যান্টি এয়ারক্রাফ্ট হেভি মেশিনগান৷ চিনের থেকে শক্তিতে অনেক বেশি এগিয়ে রয়েছে ভারতের ট্যাঙ্কবাহিনী৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

eighteen − 4 =