নয়াদিল্লি: করোনা সংক্রামণের ক্রমবর্ধমান পরিস্থিতিতে জনসংখ্যার নিরিখে দেশে করোনা পরীক্ষা কম হচ্ছে বলে মত বিশেষজ্ঞদের। তখন দেশের শাসকগোষ্ঠীর এই একই অভিযোগ দেশের বেশ কয়েকটি রাজ্য সরকার বিশেষত পশ্চিমবঙ্গ সরকারের ওপর। এদিকে চিন থেকে আমদানি করা ত্রুটিপূর্ণ টেস্ট কিটের মান নিয়ে প্রশ্ন ওঠা সত্ত্বেও, আগামী দিনে চিন থেকে করোনা চিকিৎসায় প্রয়োজনীয় সামগ্রী নিয়ে আরও ২০ টি বিমান আসছে ভারতে। বৃহস্পতিবার এবিষয়ে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছে কেন্দ্র। গত দু'সপ্তাহ ধরে, ভারত চিনের পাঁচটি শহর থেকে প্রায় দুই ডজন ফ্লাইটে আরটি-পিসিআর টেস্ট কিট, র্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টস, পিপিই কিটস এবং থার্মোমিটার সহ প্রায় ৪০০ টন চিকিৎসা সামগ্রী এনেছে।
স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন, ‘‘আগামী দিনে চিন থেকে আরও অন্তত ২০টি বিমানে সরবরাহ আসবে বলে আশা করা হচ্ছে এবং সম্ভবত আগামী কয়েক মাসের জন্য আমাদের সংগ্রহ বাড়ানোর প্রচেষ্টা নিশ্চিতরূপে অনেকটাই গতি পাবে।” এদিকে সূত্রের খবর, কিট গুলির মানের নিশ্চয়তা দিয়েছিল ভারতীয় দূতাবাস এবং চিন থেকে আসা টেস্টিং কিটে নিয়ে তারা কোনও মতামত দেয়নি। সূত্রগুলি জানিয়েছে যে তারা “যোগ্য এবং অনুমোদিত সরবরাহকারীদের” কাছ থেকেই চিকিৎসা সামগ্রী সংগ্রহ করছে। এরজন্য এই সমস্ত সামগ্রীর ‘কিছু নির্দিষ্ট মান’ পরীক্ষা করা হয় এবং একটি ‘তৃতীয় পক্ষ পরীক্ষা’ করে দেখে।
ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ দ্বারা গৃহীত সাম্প্রতিক কিটগুলি এখনও পরীক্ষা করে দেখা হচ্ছে, সূত্রের খবর যে সংস্থা তরফে এখনও “জিনিসগুলি”র পরীক্ষা-নিরীক্ষা চলছে এবং এরপরেই তারা “মতামত দেবে”। ইন্ডিয়ান টুডে-র রিপোর্ট অনুসারে, ত্রুটিপূর্ণ চিনা টেস্টিং কিটের প্রশ্নে আইসিএমআর সূত্র বলছে “এক একটি পরিস্থিতিতে এক এক রকম ফলাফল দিচ্ছে টেস্টিং কিটগুলি, সুতরাং এইধরণের ফলাফলগুলি পরীক্ষা করে দেখতে হবে।” এর আগেই ইন্ডিয়া টুডে জানিয়েছিল, চিনা টেস্টিং কিট গুলি যা চিনের দুটি সংস্থা গুয়াংজু ওয়ান্ডফো বায়োটেক (৩ লাখ কিট) এবং জুহাই লিভজান ডায়াগনস্টিকস (আড়াই লক্ষ কিট) থেকে আনা হয়েছিল সেগুলি কঠোরভাবে পরীক্ষা করে দেখা হয়েছে সংস্থার তরফে।
এর আগে চিন, দক্ষিণ কোরিয়া এবং সিঙ্গাপুর ভিত্তিক সংস্থাগুলির থেকে প্রায় ৩৭ লাখ ব়্যাপিড অ্যান্টিবডি টেস্টিং কিটের অর্ডার দিয়েছিল ভারত যার মধ্যে, এপর্যন্ত প্রায় ৭ লক্ষ কিট ভারতে পৌঁছেছে। অন্যদিকে, স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব জানিয়েছে যে “ছটি এসইউভি আকারের হাই স্পিড টেস্টিং মেশিন, যেগুলির উচ্চ চাহিদা রয়েছে, তা আমেরিকার রোচে থেকে সংগ্রহ করা হচ্ছে। আমাদের আর অ্যান্ড ডি ল্যাবগুলি ইসরায়েল এবং জার্মানির ল্যাবগুলির সাথে যোগাযোগ করছে, যারা জিনিসগুলি আরও উন্নত মানের করে তোলার চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছে।
ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের রিপোর্ট অনুসারে, শ্রীবাস্তব জানিয়েছেন যে ভারতের সংশ্লিষ্ট সংস্থাগুলির সঙ্গে সমন্বয়ের মাধ্যমে একটি দৃষ্টান্তমূলক অগ্রগতি হয়েছে। দক্ষিণ কোরিয়ার একটি একটি ভারতীয় সহায়ক সংস্থা হরিয়ানার মানেসরের একটি কারখানা যেখানে সপ্তাহে ৫ লক্ষ কিট প্রস্তুত করা সম্ভব, সেখানে কোভিড-১৯ অ্যান্টিবডি টেস্টিং কিট তৈরীর কাজ শুরু করেছে। ১৯ এপ্রিল পর্যন্ত তারা তাদের প্রথম ধাপের কাজ শেষ করেছে। যা বিশ্বে 'মেক ইন ইন্ডিয়া'র একটি দৃষ্টান্তমূলক উদাহরণ। এছাড়াও ৫ লক্ষ টেস্টিং কিট উৎপাদন ও সরবরাহের জন্য আইসিএমআর- এর তরফে ভারতীয় দূতাবাস দক্ষিণ কোরিয়ার আরও একটি সংস্থার সঙ্গে চুক্তি স্বাক্ষর করেছে বলে জানিয়েছে তিনি।