নয়াদিল্লি: তাইওয়ান নিয়ে চিনের বিরুদ্ধে কড়া মনোভাব দেখাল ভারত। তাইওয়ানের জাতীয় দিবসের আগে “ওয়ান-চায়না” নীতিমালা লঙ্ঘন না করার জন্য নয়াদিল্লিতে চিনের দূতাবাসের জারি করা নির্দেশিকা নিয়ে বৃহস্পতিবার ভারত চিনকে একহাত নেয়। বিদেশমন্ত্রকের মুখপাত্র অনুরাগ শ্রীবাস্তব এক সংবাদ সম্মেলনে স্পষ্ট বলেন, “ভারতে গণমাধ্যম মুক্ত। যা তারা উপযুক্ত হিসাবে বিবেচনা করে সেগুলি সম্পর্কে রিপোর্ট করে।”
১০ অক্টোবর তাইওয়ানে জাতীয় দিবস পালিত হয়। কিন্তু তার দিন কয়েক আগে চিনা দূতাবাসের তরফে ভারতীয় সাংবাদিকদের চিঠি দিয়ে জানানো হয় তাইওয়ানকে যেন আলাদা ‘দেশ’ হিসেবে উল্লেখ না করা হয়। পাশাপাশি তাইওয়ানের নেতাকেও যাতে ‘প্রেসিডেন্ট’ না বলা হয় সেই কথাও বলা হয় চিঠিতে। চিনের তরফে স্পষ্ট জানানো হয় যে ভারতীয় সংবাদমাধ্যম যেন “ওয়ান-চায়না” নীতিকে সম্মান করে। ৭ অক্টোবরের ওই চিঠিতে বলা হয় “চিনের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্কযুক্ত সমস্ত দেশকে ওয়ান-চায়না নীতির প্রতি তাদের প্রতিশ্রুতি দৃঢ়ভাবে সম্মান করা উচিত। আমরা আশা করি যে ভারতীয় মিডিয়া তাইওয়ানের প্রশ্নে ভারতের সরকারের অবস্থান ধরে রাখবে এবং ওয়ান-চায়না নীতি লঙ্ঘন করবে না।”
বৃহস্পতিবার চিনা দূতাবাসের এক মুখপাত্রও টুইট করেছেন যে তাইওয়ান চিনের ভূখণ্ডের একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। তাইওয়ানের সঙ্গে ভারতের আনুষ্ঠানিক কূটনৈতিক সম্পর্ক নেই। ১৯৯৫ সালে, নয়াদিল্লি উভয় পক্ষের মধ্যে কথোপকথন এবং ব্যবসায়, পর্যটন এবং সাংস্কৃতিক আদান-প্রদানের সুবিধার্থে তাইপেই ভারত-তাইপেই সমিতি (আইটিএ) প্রতিষ্ঠা করে। ইন্ডিয়া-তাইপেই অ্যাসোসিয়েশনকে সমস্ত কনস্যুলার এবং পাসপোর্ট পরিষেবা দেওয়ার জন্যও অনুমোদিত করা হয়েছে। একই বছরে তাইওয়ানও দিল্লিতে তাইপেই অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক কেন্দ্র প্রতিষ্ঠা করে।
এদিকে তাইওয়ানের উপর হামলা চালালে তা চিনের ক্ষেত্রে ভাল হবে না বলে চরম হুঁশিয়ারি দিয়েছে আমেরিকা। কারণ দ্বিপাক্ষিক চুক্তি অনুসারে যুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হলে মার্কিন মুলুক তাইওয়ানের পাশে দাঁড়াতে আইনত বাধ্য। অনিয়ে বুধবার মার্কিন জাতীয় নিরাপত্তা উপদেষ্টা রবার্ট ও’ব্রায়েন স্পষ্ট জানিয়ে দেন, তাইওয়ান দখলের চেষ্টা করলে তার ফল ভুগতে হবে চিনকে। চিন সেনা পাঠালে প্রত্যাঘাত করবে আমেরিকা। সেটা যেন মাথায় রাখে চিন। তাদের উদ্দেশ্য পশ্চিম প্রশান্ত মহাসাগরীয় অঞ্চল থেকে আমেরিকাকে বের করে তাইওয়ান দখল করা। কিন্তু আমেরিকা তা হতে দেবে না।