নয়াদিল্লি: করোনা সংকটের জেরে ক্রমেই ভেঙে পড়ছে দেশের আর্থ-সামাজিক পরিকাঠামো৷ এই পরিস্থিতিতে সরকারের ভূমিকা নিয়ে বিশ্বের বিশেষজ্ঞদের কাছে পরামর্শ চাইলেন রাহুল গান্ধী৷ বুধবার রিজার্ভ ব্যাংক অফ ইন্ডিয়ার প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনের সঙ্গে ভিডিও চ্যাটে কথা বললেন সোনিয়া তনয়৷
দেশের গরিবদের সাহায্যের জন্য কী করা যেতে পারে? এই প্রশ্নের উত্তরে রঘুরাম রাজন বলেন, ‘‘এই সংকটে দেশের গরিবদের সাহায্য করতে সরকারের ৬৫ হাজার কোটি টাকা খরচ করতে হবে। লকডাউন ওঠার পর সবার আগে সাধারণ মানুষের জীবনকে স্বাভাবিক ছন্দে ফিরিয়ে আনাই সরকারের প্রধান লক্ষ্য হওয়া উচিত৷ তিনি আরও বলেন, ভারতের জিডিপি ২০০ লক্ষ কোটি৷ ফলে দেশের গরিব মানুষের জন্য ভারতের পক্ষে ৬৫ হাজার কোটি টাকা ব্যয় করা অসম্ভব নয়৷
রিজার্ভ ব্যাংকের প্রাক্তন গভর্নরের মতে, এভাবে দেশে চিরদিন লকডাউন চালানো যাবে না। সরকারকে বিকল্প ভাবনা-চিন্তা করতে হবে। তিনি বলেন, ভারতের করোনা পরীক্ষার হার আমেরিকার ধারে কাছে নয়৷ প্রতিদিন ২০ লক্ষ টেস্টের প্রয়োজন আছে ভারতে৷ এখন দিনে মাত্র ২৫ হাজার থেকে ৩০ হাজার টেস্ট করা হচ্ছে৷ এটা যথেষ্ট নয় বলেই মনে করেন রাজন৷
পাশাপাশি তিনি ওটাও বলেন যে, ১০০ শতাংশ করোনা মুক্ত হওয়ার পর লকডাউন তোলা হবে, এই লক্ষ্যে আমরা এগিয়ে যেতে পারি না৷ দ্বিতীয় এবং তৃতীয় দফার লকডাউন দেশের অর্থনীতিকে ধ্বংস করে দেবে৷ এই অবস্থায় আমাদের আরও বেশি করে কর্মসংস্থান তৈরি করতে হবে৷ যাতে মানুষ সরকারি চাকরির উপর নির্ভর করতে পারে৷ এদিকে, করোনা পরিস্থিতিতে লকডাউন দীর্ঘায়িত করার পথে হাঁটলেও ৩ মে-র পরে ধীরে ধীরে লকডাউনের বিধিনিষেধ শিথিল করার ভাবনাচিন্তা করছে কেন্দ্রীয় সরকার। কিন্ত এই দীর্ঘ লকডাউনে ইতিমধ্যেই ক্ষিতিগ্রস্ত দেশের সামগ্রিক অর্থব্যবস্থা৷
তবে রাজন মনে করছেন, এই লকডাউন কেটে যাওয়ার পর বিশ্বে যে পরিস্থিতি তৈরি হবে, তাতে ভারতের কাছে উন্নতির সুযোগ আসবে৷ তিনি বলেন, এই পেন্ডামিক কেটে যাওয়ার পর বিশ্ব অর্থনীতি নিয়ে নতুন করে চিন্তাভাবনা করতে হবে আমাদের৷ সম্প্রতি রাহুল গান্ধীকে বিঁধে বিজিপি বলেছিল, ওঁনার উচিত দেশের বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ তথা প্রাক্তন প্রধানমন্ত্রী মনমোহন সিং এবং প্রাক্তন অর্থমন্ত্রী পি চিদাম্বরমের মতো বিশেষজ্ঞদের থেকে ‘টিউশন’ নেওয়া। যদিও এই সব কটাক্ষ গায়ে না মেখেই বুধবার বিশিষ্ট অর্থনীতিবিদ তথা আরবিআই-এর প্রাক্তন গভর্নর রঘুরাম রাজনের সঙ্গে দেশের অর্থনৈতিক অবস্থা নিয়ে আলোচনা করেন রাহুল গান্ধী৷ উল্লেখ্য বিষয় হল, রাজনের সঙ্গে এই আলোচনায় সময় সরকারের সমালোচনায় মুখ খোলেননি তিনি৷ নিজস্ব রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ব্যক্ত করেননি রাহুল গান্ধী৷ বরং গঠনমূলক ভমিকাই পালন করেন বিরোধী রাহুল।