নয়াদিল্লি: একদিকে যেমন বেড়ে চলেছে করোনায় আক্রান্তের সংখ্যা, উল্টোদিকে তেমন ভাবেই ক্রমান্বয়ে শিথিল করা হচ্ছে লকডাউন। ইটালি, ইংল্যান্ড, ফ্রান্সের মতো প্রথম বিশ্বের দেশগুলিতে লকডাউন কার্যকরী প্রমাণিত হলেও, ভারতে যে তা সর্বাত্মক সফল হয়েছে এমন বলাটা ধৃষ্টতা। রোজই লাফিয়ে লাফিয়ে বাড়ছে আক্রান্তের সংখ্যা এবং মৃত্যুও ঘটছে সমানতালে। এমতাবস্থায় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি কিন্তু দেশের করোনা পরিস্থিতি নিয়ে সন্তুষ্ট। তিনি জানিয়েছেন, অন্যান্য অনেক দেশের তুলনায় ভারতের করোনা পরিস্থিতি অনেক ভাল।
প্রধানমন্ত্রীর কথায়, পৃথিবী এক কঠিন লড়াই লড়ছে। কোভিড-১৯ শুধুমাত্র শারীরিক অসুস্থতার সৃষ্টি করে না, অস্বাস্থ্যকর জীবনযাপনের দিকে মানুষের দৃষ্টি নিয়ে যায়। সংবাদ সংস্থা এএনআই-তে প্রকাশিত এক টুইটে মোদির জবানি উদ্ধৃত করে বলা হয়েছে, ‘এ বছরের শুরুর দিকে অনেকেই আশঙ্কা করেছিলেন যে ভারতে এই ভাইরাসের প্রভাব খুব গুরুতর হবে। সরকারের নেওয়া উদ্যোগ এবং মানুষের লড়াইয়ের ফলে ভারত আজ অন্যান্য অনেক দেশের থেকে ভাল অবস্থায় আছে। সুস্থ হয়ে ওঠার হারও বাড়ছে এখানে।’
প্রধানমন্ত্রীর এই দাবির পাশাপাশি কেন্দ্রীয় স্বাস্থ্য মন্ত্রকের পরিসংখ্যান কিন্তু অন্যরকম তথ্য দেখাচ্ছে। শুক্রবারেই দেশে আক্রান্তের সংখ্যা পাঁচ লক্ষ ছাড়িয়েছে। নতুন করে আক্রান্ত হয়েছেন প্রায় ৮০ হাজার মানুষ। দেশজুড়ে মৃতের সংখ্যা পেরিয়েছে ১৫ হাজার। ১৩০ কোটি জনসংখ্যার নিরিখে ১৫ হাজার অবশ্যই খুব কম মনে হতে পারে, কিন্তু বিপদ নিহিত অন্য জায়গায়। ইটালি বা ফ্রান্সের মতো কম জনসংখ্যার দেশ নয় ভারত এবং আরও গুরুত্বপূর্ণ জনঘনত্ব। প্রতি বর্গ কিলোমিটারে যে পরিমাণ মানুষ বাস করেন এদেশে তাতে লকডাউন শিথিল হলে ‘কমিউনিট ইনফেকশন’, অর্থাৎ একসঙ্গে অনেক মানুষের সংক্রামিত হওয়াটা খুবই স্বাভাবিক।
বিপুল জনসংখ্যার কারণে জনে জনে মেডিক্যাল পরীক্ষা করা সম্ভব না সেকথাও জানিয়ে দিয়েছে স্বাস্থ্য মন্ত্রক। সুতরাং গোটা বিষয়টাই বিপদসংকুল। এদিকে কাজে না বেরলে মানুষের অন্নসংস্থান হবে না। তাই একরকম প্রাণের ঝুঁকি নিয়েই রাস্তায় বেরচ্ছে জনতা। এই পরিস্থিতিতে অবশ্য ‘আশার বাণী’ শোনালেন নরেন্দ্র মোদি।