নয়াদিল্লি: পূর্ব লাদাখ সীমান্তে উত্তেজনা প্রশমনে প্রায় দেড় মাস পর সোমবার ম্যারাথন বৈঠকে বসে ভারত-চিন৷ এবার বৈঠক বসেছিল সীমান্তের ওপারে চিনের দখলে থাকা মল্ডোতে৷ কিন্তু সমাধানসূত্র এখনও অধরা৷ ওই বৈঠকে দু’দেশের মধ্যে সীমান্ত নিয়ে যে যে বিষয়ে মতানৈক্য রয়েছে, তার সবটা আলোচনা হয়নি বলেই সূত্রের খবর৷ ফলে আগামী কয়েক দিনের মধ্যেই ফের দু’দেশের সেনা কমান্ডার স্তরে বৈঠক হবে বলে মনে করা হচ্ছে৷
আরও পড়ুন- গৃহঋণের উপর ২ বছর EMI ছাড় দিচ্ছে SBI, স্বস্তিতে গ্রাহকরা
সোমবার মল্ডোয় কোর কমান্ডার স্তরের বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন লেফটেন্যান্ট জেনারেল হরেন্দ্র সিং ও লেফটেন্যান্ট জেনারেল পিজেকে মেনন। তাৎপর্যপূর্ণ ভাবে সেনা কমান্ডার স্তরের ওই বৈঠকে উপস্থিত ছিলেন বিদেশ মন্ত্রকের যুগ্ম সচিব (পূর্ব এশিয়া) নবীন শ্রীবাস্তব। এদিন সেনা সূত্রে আলোচনার গতিপ্রকৃতিকে ‘জটিল’ বলে উল্লেখ করা হয়েছে৷ জানা গিয়েছে, উভয় দেশই নিজেদের অবস্থানে অনঢ় থাকলেও, তারা স্বীকার করে নিয়েছে সীমান্তে শান্তি ফেরাতে সম্পূর্ণ ডিসএনগেজমেন্ট (মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো)-এর প্রয়োজন৷ এক সিনিয়র অফিসার বলেন, ‘‘ডিসএনগেজমেন্ট প্রক্রিয়া শুরু হওয়ার আগে সেনা ও কূটনৈতিক স্তরে আরও দু’দফা আলোচনার প্রয়োজন রয়েছে৷’’
প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখায় শান্তি ফেরানোর একমাত্র রোডম্যাপ হল ডিএসক্যালেশন (সেনা সংখ্যা কমানো), ডিসএনগেজমেন্ট (মুখোমুখি অবস্থান থেকে সেনা পিছনো) এবং ডি-ইনডাকশন৷ কিন্তু সমস্যাটা হল আকসাই চিনের দখল নিতে ও ভারতের উপর চাপ বাড়াতে সীমান্তে বিপুল পরিমাণ সেনাবাহিনী ও সামরিক অস্ত্র মোতায়েন করেছে চিন৷ এর মধ্যে রয়েছে মাঝারি পাল্লার ব্যালেস্টিক ক্ষেপণাস্ত্রও৷ উপগ্রহ চিত্রে স্পষ্ট ধরা পড়েছে চিনের সানরিক অবস্থান৷ সেখানে চলছে বায়ুসেনা ঘাঁটি নির্মাণের কাজও৷ জাইদুল্লায় ক্ষেপণাস্ত্র সিলো ছাড়াও কারাকোরাম পাস পেরিয়ে জিনজিয়াং এবং তিব্বতের কিজিল জিলগা থেকে লাদাখ পর্যন্ত মনস্তাত্ত্বিক যুদ্ধ শুরু করেছে চিন৷ বায়ু থেকে শূন্যে আঘাত হানতে সক্ষম ক্ষেপণাস্ত্র মোতায়েন করা হয়েছে৷ দক্ষিণ চিন সাগরেও একই কৌশল নিয়েছে তারা৷ ডিএফ-২৬ এবং ডিএফ ২১-ডি ক্ষেপণাস্ত্রের টেস্ট ফায়ার করে মার্কিন নৌবাহিনীকে চাপে ফেলার চেষ্টা চালাচ্ছে৷
আরও পড়ুন- এবার রাজ্যসভার অধিবেশন বয়কট বিরোধীদের, অনশনে বসলেন রাজ্যসভার ডেপুটি চেয়ারম্যান
এদিকে, ভূ-রাজনৈতিক সংক্রান্ত মার্কিন গোয়েন্দা তথ্য সংগ্রহকারী সংস্থা স্ট্র্যাটফরের একটি রিপোর্টে বলা হয়েছে, ডোকলামে সংঘাতের পর প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর ভারতীয় এলাকাগুলি নিজেদের দখলে আনার লক্ষ্য ছিল চিনের৷ তাই লাদাখ-সহ ভারতের পূর্ব দিকে এলএসি বরাবর সামরিক শক্তি বৃদ্ধি শুরু করে বেজিং৷ দেখা গিয়েছে, গত তিন বছরে প্রকৃত নিয়ন্ত্রণরেখা বরাবর নিজেদের শক্তি তিন গুণ বাড়িয়ে নিতে সফল হয়েছে তারা।