RIT: শরণার্থীদের বিষয়ে কোনও তথ্য নেই খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকে! তাহলে কাদের নাগরিকত্ব দেবে কেন্দ্র?

আরটিআইয়ের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিদেশি বিভাগে নাগরিকত্ব শাখা জানিয়েছে যে নাগরিকত্ব আবেদনের রেকর্ডগুলি নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫ এর বিধি এবং এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি অনুযায়ী বজায় রাখার প্রয়োজন নেই।

নয়াদিল্লি: দেশজুড়ে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়ে চূড়ান্ত বিরোধিতার সম্মুখীন প্রধানমন্ত্রী, স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-সহ দেশের শাসক দলের নেতৃত্বের মুখে ইদানীং একটাই আশ্বাস বাণী শুনতে অভ্যস্ত হয়ে উঠেছেন দেশের নাগরিক। তাহলে নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন- কারো নাগরিকত্ব কেড়ে নেওয়ার জন্য নয় বরং প্রকৃত অর্থে যারা শরণার্থী, তাদের বৈধ নাগরিকত্ব দেওয়ার আইন। এনিয়ে বিস্তর যুক্তি এবং জোরদার পাল্টা যুক্তির পাহাড় তৈরি হয়েছে। কিন্তু নাগরিকত্ব আইন নিয়ে এসব কাঁটাছেঁড়ার মধ্যে থেকেই এমন সব তত্ত্ব উঠে আসছে যা বারবারই শাসকদলের বিরুদ্ধে যাচ্ছে।

যেমন, শাসক নেতৃত্বর দাবি এই আইন অনুসারে বৈধ শরণার্থীদের নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু সমস্যা হল এই নতুন আইন অনুসারে কারা প্রকৃত অর্থে বৈধ শরণার্থী সেই পরিসংখ্যান খোদ স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের কাছেই নেই। অর্থাৎ,নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন (সিএএ) এর অধীনে নাগরিকত্বের জন্য আবেদনকারী পাকিস্তান, আফগানিস্তান এবং বাংলাদেশ থেকে আগত শরণার্থীদের সম্পর্কে কেন্দ্রের কাছে কোনও তথ্যই নেই – সোমবার স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের এক আরটিআই (তথ্যের অধিকার) এর প্রশ্নের জবাবে এই তথ্য প্রকাশিত হয়েছে।

আরটিআইয়ের উত্তর অনুসারে, নাগরিকত্বের আবেদনের রেকর্ডগুলি সরকারের কাছে নেই। চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা দীনেশ ড্ডা স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে ভারতীয় নাগরিকত্বের জন্য আবেদনকারী অন্যান্য জাতির মোট সংখ্যা সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে চেয়েছিলেন। আবেদনকারীদের ধর্ম এবং তারা যে দেশের অন্তর্ভুক্ত সে সম্পর্কেও তথ্য চেয়েছিলেন। ওই আরটিআই-এ হিন্দু, মুসলিম, জৈন এবং অন্যান্য ধর্ম যারা পাকিস্তান, বাংলাদেশ এবং আফগানিস্তান থেকে এসেছেন সেই আবেদনকারীদের সংখ্যা চাওয়া হয়েছিল।

এক্ষেত্রে আরটিআইয়ের প্রশ্নের জবাবে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের বিদেশি বিভাগে নাগরিকত্ব শাখা জানিয়েছে যে নাগরিকত্ব আবেদনের রেকর্ডগুলি নাগরিকত্ব আইন, ১৯৫৫ এর বিধান এবং এই আইনের অধীন প্রণীত বিধি অনুযায়ী বজায় রাখার প্রয়োজন নেই। ইন্ডিয়া টুডে-কে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে দীনেশ চড্ডা আশ্চর্য প্রকাশ করে বলেছেন যে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক নাগরিকত্ব সম্পর্কিত তাঁর প্রশ্ন সম্পর্কে কোনও তথ্য সরবরাহ করেনি। তিনি বলেন”আমি জানতে চেয়েছিলাম যে সিএএ থেকে  এই জাতীয় মোট কতসংখ্যক শরণার্থী উপকৃত হবেন? কারণ সরকারের পরিসংখ্যানে অস্বচ্ছতা ছিল৷”

দীনেশ বাবু আরও বলেন, ‘‘মনে হচ্ছে এই জাতীয় গুরুত্বপূর্ণ আইন প্রণয়নের আগে মন্ত্রনালয়ের তরফে সঠিকভাবে কোনো প্রস্তুতিই নেওয়া হয়নি এবং এর ফলেই দেশে এত অশান্তির সৃষ্টি হয়েছে।’’ গত রবিবার কলকাতার জনসভায় অমিত শাহ দাবি করেছিলেন,  সিএএ থেকে লক্ষাধিক মানুষ উপকৃত হবে, তবে তার কিভাবে? কারণ দেশে প্রকৃত পক্ষে কতজন শরণার্থী আছেন সে সম্পর্কে পোক্ত কোনো তথ্যই নেই স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের কাছে। সুতরাং এর থেকে কি আবারও একথাই প্রমাণিত হয়না যে এপর্যন্ত নাগরিকত্ব আইন নিয়ে কেন্দ্রের জোরদার যুক্তি বা দাবি সবটাই যে শুধু চরম বিভ্রান্তিমূলক তাই নয় বরং বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই অসত্য?

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *