নয়াদিল্লি: “আমরা যদি জঙ্গলেই বোমা ফেলতাম। তাহলে, পাক প্রধানমন্ত্রী গর্জে উঠতেন না৷” সোমবার বালাকোটে এয়ারস্ট্রাইক নিয়ে এমনটাই জানালেন বায়ুসেনা প্রধান বিএস ধানোয়া। এদিন কোয়েম্বাটুরে ধানোয়া একটি সাংবাদিক বৈঠক করেন ।তাঁর কথায়, “আমরা যখন কোনও কিছুকে টার্গেট করি, তখন সেই টার্গেটকে হিট না করে ছাড়ি না৷”
এয়ারস্ট্রাইক নিয়ে সংশয়ঃ
এদিনের বৈঠকে বেশ আত্মবিশ্বাসীই দেখাল ভারতের এয়ার চিফ মার্শালকে । বেশ কিছুদিন ধরেই আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যমগুলি ভারতের এয়ারস্ট্রাইক নিয়ে ধন্দে ছিল ।
এমনকি ওয়াশিংটন পোস্ট, রয়টার্স, ডেইলি টেলিগ্রাফ, দ্য নিউ ইয়র্ক টাইমসে প্রকাশিত প্রতিবেদনে বলা হয় বালাকোটে আদৌ কোনও জঙ্গি ঘাঁটি ছিল না । তখন থেকেই জঙ্গি মৃত্যুর সংখ্যার প্রশ্নে সরব হয় বিরোধীরা । কংগ্রেস নেতা কপিল সিব্বালও বিষয়টি নিয়ে টুইট করেন । ফলে দেশবাসীর কাছে প্রশ্নচিহ্নের মুখে পড়ে ভারতীয় বায়ুসেনার অভিযান ও মোদী সরকারের প্রচারিত ৩৫০জন জঙ্গি মৃত্যুর সত্যতার কথা । এর আগে ভারতের জল, স্থল ও বায়ুসেনার তিন আধিকারিক সাংবাদিক বৈঠক করে । তবুও, সন্দেহের নিরসন হয়নি । এবার সেই সন্দেহ নিরসনকারীর ভূমিকায় অবতীর্ণ হলেন খোদ বায়ুসেনা প্রধান ।
হতাহতের হিসেব জানাবে সরকার, বললেন ধানোয়া
সাংবাদিক বৈঠকে ধানোয়া সাফ জানিয়ে দেন, বায়ুসেনার কাজ টার্গেট হিট করা । ক্ষয়ক্ষতি কি হল তার হিসেব রাখার দায়িত্ব সরকারের । সরকার বলবে এ বিষয়ে । বায়ুসেনাকে জিজ্ঞাসা করুন ক’টা টার্গেটে হিট করা হয়েছে । প্রশ্নের উত্তর পেয়ে যাবেন । কিন্তু, ক্ষয়ক্ষতির বিষয়ে বলতে পারবে না । এ বিষয়ে তো আগেই বিদেশ সচিব তাঁর বিবৃতিতে জানিয়ে দিয়েছেন ।
বায়ুসেনার স্ট্রেংথ
বায়ুসেনার স্ট্রেংথের বিষয়ে তিনি জানান, মিগ ২১ বাইসন যথেষ্ট ভালো ফাইটার বিমান ।
এর আপগ্রেডেশেন করা হয়েছে । মিগ-২১ এ আগের থেকে অপেক্ষাকৃত ভালো র্যাডার রয়েছে ।
তার সঙ্গে এয়ার টু এয়ার মিসাইল রাখা এবং অপেক্ষাকৃত ভালো ‘ওয়েপন সিস্টেম’ রয়েছে ।
পাশাপাশি, সেনা অভিযানের সময় পরিকল্পনামাফিক সব ফাইটার বিমানই তৈরি থাকে । প্রয়োজনমতো সকলেক পাঠিয়ে দেওয়া হয় ।
কেমন আছেন অভিনন্দন?
এদিকে সদ্য পাকিস্তান ফেরত উইং কম্যান্ডার অভিনন্দন বর্তমানের বিষয়ে জানতে চান সাংবাদিকরা ।
ধানোয়া জানান, তাঁর মেডিকেল পরীক্ষা চলছে এখনও । ওনার মেডিকেল ফিটনেসের উপর ভর করেই সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে । বর্তমানে তিনি চিকিৎসাধীন । একবার তাঁর মেডিকেল ফিটনেস রিপোর্ট পেয়ে গেলেই অভিনন্দকে ফাইটার ককপিটে ফেরত পাঠানো হবে ।
সরকার আগেই ঘোষণা করে দিয়েছিলেন যে এয়ার স্ট্রাইকে প্রায় ৩৫০ জঙ্গির মৃত্যু হয়েছে ।
পাশাপাশি, মৃত্যু হয়েছে জইশ প্রধান ঘনিষ্ঠ চার জনেরও ।
এরপরই বেশ কয়েকটি জনপ্রিয় আন্তর্জাতিক সংবাদমাধ্যম জানিয়ে দেয় বোমা ফাঁকা মাঠে পড়েছিল ।
বিরোধীদের চাপ
তাই বিরোধীদের প্রশ্নের মুখে পড়ে মোদী সরকার । সমালোচনা, লোকসভা নির্বাচনের বৈতরণী পার করতেই কি বিজেপি সরকার এমন বিবৃতি দিচ্ছে?
গত সপ্তাহেই দিল্লিতে এয়ার ভাইস মার্শাল আর জি কে কাপুর জানিয়েছিলেন আমাদের কাছে সব তথ্য ও প্রমাণ আছে ।
কিন্তু, সোমবার ধানোয়া জানালেন, হতাহতের সংখ্যা জানা বায়ুসেনার কাজ নয় । তা জানাবে সরকার ।
ফলে, সাংবাদিক বৈঠকেও জঙ্গি মৃত্যুর সংখ্যা নিয়ে ধোঁয়াশা কাটল না ।