নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাস ভ্যাকসিন নেওয়ার পর যারা যারা সংক্রামিত হয়েছেন তাদের অধিকাংশই করোনার ‘ডেল্টা’ প্রজাতির শিকার। এমনই তথ্য দিচ্ছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিকেল রিসার্চ বা আইসিএমআর। তাদের গবেষণা বলছে, ভ্যাকসিন দেওয়া ভারতীয়দের মধ্যে ৮০ শতাংশই করোনার এই প্রজাতিকে আক্রান্ত হয়েছেন। এদিকে আশঙ্কা করা হচ্ছে যে এই প্রজাতির জন্যই তৃতীয় ঢেউ আসতে চলেছে। সে ক্ষেত্রে তাহলে কি ভ্যাকসিন আদতে কোন কাজে আসবে না? এখন এই প্রশ্নই ঘুরপাক খাচ্ছে সকলের মাথায়।
ইতিমধ্যেই একাধিক গবেষণার রিপোর্ট স্পষ্ট করে দিচ্ছে যে অগাস্ট মাসের শেষ দিক থেকে বা সেপ্টেম্বরের শুরুতেই করোনাভাইরাস তৃতীয় ঢেউ আছড়ে পড়বে ভারতে। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সদর থেকে শুরু করে একাধিক রিপোর্ট দাবি করছে যে ভ্যাকসিনেশন হতে পারে তৃতীয় ঢেউ রুখে দেওয়ার ব্রম্ভাস্ত্র। কিন্তু আইসিএমআর যে সমীক্ষা প্রকাশ করেছে তাতে অবশ্যই কপালে ভাঁজ পড়বে সকলের কারণ তারা বলছে, ভ্যাকসিন নেওয়ার পরেও অধিকাংশ যারা করানো ভাইরাস আক্রান্ত হয়েছেন তারা ‘ডেল্টা’ প্রজাতির কারণে। তবে এর মধ্যে স্বস্তির খবর এই, এই প্রযুক্তিতে আক্রান্ত হওয়ার পরেও সেই ৮০ শতাংশের মধ্যে মাত্র ৯.৮ শতাংশ মানুষকে হাসপাতালে ভর্তি হতে হয়েছে। অতএব শুরু থেকে যে দাবি করা হচ্ছিল যে ভ্যাকসিন নেওয়ার পর করোনার বাড়বাড়ন্ত এত বেশি হবে না, আইসিএমআরের এই রিপোর্ট তাতেই সীলমোহর দিচ্ছে। এর পাশাপাশি তাদের সমীক্ষা আরো বলছে যে, ১৭ রাজ্যের ভাইরাস আক্রান্ত যাদের ওপর এই সমীক্ষা চালানো হয়েছিল সেই ৬৭৭ জনের মধ্যে ৭১ শতাংশের একাধিক উপসর্গ ছিল কিন্তু ২৯ শতাংশের উপসর্গ ছিল না একটিও।
আরও পড়ুন: ‘ল্যামডা’, বিজ্ঞানীদের ঘুম ওড়াচ্ছে নতুন এই করোনা প্রজাতি
এদিকে, বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তরফে জানানো হচ্ছে, করোনাভাইরাস ডেল্টা প্রজাতির কারণে অনেক আগে থেকেই তৃতীয় ঢেউয়ের আতঙ্ক ছিল এখন বাস্তব রূপ নিচ্ছে। এর পাশাপাশি রয়েছে সাধারণ মানুষের অসচেতনতা। করোনাভাইরাস পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আসার পরেই মানুষ সচেতনতা অবলম্বন না করে করোনাভাইরাস নিয়মবিধি এড়িয়ে চলেছে। সেই কারণেই বিশ্বের অধিকাংশ দেশে এখন নতুন করে বাড়ছে সংক্রমণ এবং মৃত্যুর হার। এই প্রেক্ষিতেই সতর্ক করে জানানো হয়েছে, করোনাভাইরাস ডেল্টা প্রজাতির কারণেই তৃতীয় ঢেউ ভয়ঙ্কর আকার নিতে পারে গোটা বিশ্ব জুড়ে। প্রাথমিকভাবে সেই জায়গায় বিশ্ব চলে এসেছে বলেই অনুমান করছে বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থা।