বারাসত: রাজনৈতিক সংঘর্ষে ফের বলি বাংলায় তিন প্রাণ৷ সংঘর্ষ ঘিরে রাজনৈতিক কাদা ছোড়ছুড়ি চলছেই৷ রাজনৈতিক কোনদলের জেরে গুমরে কাঁদছে গোটা সন্দেশখালির ন্যাজাট৷ তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে তিন জনের মৃত্যু ঘটনায় এখনও পর্যন্ত তিন জনের মৃত্যু হয়েছে বলে জানিয়েছে পুলিশ৷ এখনও নিখোঁজ বহু৷ এই পরিস্থিতি দাঁড়িয়ে ন্যাজাট সংঘর্ষ ও বাংলার আইন-শৃঙ্খলা পরিস্থিত এবার সরাসরি রাজ্যপাল কেশরীনাথ ত্রিপাঠীর সঙ্গে বৈঠক করতে চলেছেন মোদি৷ প্রধানমন্ত্রী সঙ্গে বৈঠকে বসার আগে ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য করলেন রাজ্যপাল৷
প্রধানমন্ত্রীর বাসভবনে বৈঠকে যোগ দেওয়ার আগে রাজ্যপাল রাজধানীতে বলেন, ‘‘প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে বৈঠক রয়েছে৷ বৈঠকে প্রধানমন্ত্রী যদি সন্দেশখালির ঘটনা জানতে চান, তাহলে যা জানি সবটাই বলব৷’’ রাজ্যপালের এই ইঙ্গিতপূর্ণ মন্তব্য ঘিরে ফের তুঙ্গে বঙ্গ রাজনীতি৷ জানা গিয়েছে, আজ দুপুরে দিল্লিতে প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির সঙ্গে বৈঠক করবেন রাজ্যপাল৷
Delhi: West Bengal Governor Keshari Nath Tripathi arrives to meet PM Modi says,’I had asked to meet the PM either on June 9-10 or June 14-15 as I couldn’t wish him personally on the swearing-in day, it’s a courtesy visit.’ pic.twitter.com/YV5HvMxWO5
— ANI (@ANI) June 10, 2019
বাংলার বর্তমান আইন-শৃঙ্খলা ও অন্যান্য বিষয় নিয়ে সরাসরি মোদির হস্তক্ষেপও চেয়েছে বঙ্গ বিজেপি নেতৃত্ব৷ ইতিমধ্যেই বিজেপি নেতা মুকুল রায়ও স্বারাষ্ট্রমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করেছেন৷ ন্যাজাট সংঘর্ষের ঘটনায় রিপোর্টও চেয়ে পাঠিয়ে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক৷ এই পরিস্থিতিতে রাজ্যপালের সঙ্গে প্রধানমন্ত্রীর বৈঠক বেশ তাৎপর্যপূর্ণ বলেই মনে করা হচ্ছে৷ সূত্রের খবর, গোটা ঘটনার কথা বিস্তারিত রিপোর্ট চাইতে পারেন মোদি৷
বাংলা ঘটনা দিয়ে দিল্লিতে তৎপরতা শুরু হতেই ফের ন্যাজাট অভিযান তৃণমূল-বিজেপির৷ দুই দলের প্রতিনিধল ঘটনাস্থলে যাচ্ছে৷ পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনতে বন্ধ ইন্টারনেট পরিষেবা৷ শনিবার সন্ধ্যায় তৃণমূল-বিজেপি সংঘর্ষে রণক্ষেত্র হয়ে ওঠে সন্দেশখালির ন্যাজাট থানার ভাঙিপাড়া গ্রাম৷ উভয় পক্ষের তুমুল সংঘর্ষে ৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বলে পুলিশ সূত্রে খবর৷ বিজেপির রাজ্য সাধারণ সম্পাদক সায়ন্তন বসুর দাবি, তাদের তিন জন কর্মী মারা গিয়েছেন৷ নিখোঁজ দুই৷ অন্যদিকে, তৃণমূল নেতৃত্বের দাবি জানিয়েছে, ওই ঘটনায় এক তৃণমূল কর্মী খুন হয়েছেন৷ তাঁকে গুলি করার পর কুপিয়ে খুন করা হয়েছে৷ জখম বহু৷
স্থানীয় সূত্রে খবর, রাজনৈতিক দলের পতাকা লাগানোকে কেন্দ্র করে সন্ধ্যা থেকে রাত পর্যন্ত দফায় দফায় চলে ব্যাপক সংঘর্ষ৷ বোমা ও গুলির আঘাতে বেশ কয়েকজন জখম হন৷ অগ্নিগর্ভ পরিস্থিতি হয়ে উঠলেও গ্রামে পুলিশ ঢুকতে পারেনি৷ মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে আশঙ্কা৷ সংঘর্ষ থামাতে আশপাশের জেলা থেকেও প্রচুর পুলিশ আনা হয়৷ আজও মোতায়েন বিশাল পুলিশবাহিনী৷
শনিবার জামাই ষষ্ঠীর উৎসবের আনন্দ মাটি করে রাজনৈতিক সংঘর্ষের ঘটনায় রাজ্যের আইন-শৃঙ্খলা নিয়েও প্রশ্ন উঠতে শুরু করেছে৷ রাজ্যজুড়ে একের পর এক অশান্তি, হিংসা বাড়তে থাকায় বাড়ছে উদ্বেগ৷ আতঙ্কিত বাসিন্দাদের একটাই প্রশ্ন, আর কত মৃত্যুর পর শান্ত হবে বাংলা? শান্ত বাংলায় কেন এত অশান্তি?