জীবন না জীবিকা? করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি কীভাবে যুঝবে ভারত?

জীবন না জীবিকা? করোনা পরবর্তী পরিস্থিতি কীভাবে যুঝবে ভারত?

নয়াদিল্লি:  করোনা আতঙ্কে ঘর বন্দি দেশ৷ সারা দিন ঘরে থাকতে থাকতে বীতশ্রদ্ধ জনজীবন৷ একটা মানসিক অবসাদ গ্রাস করছে৷ কিন্তু ধীরে ধীরে উন্নত হবে পরিবেশ, পরিস্থিতি৷ অনেকের মতে করোনার ভ্যাকসিন বের না হওয়া পর্যন্ত এর থেকে মুক্তি পাওয়া যাবে না৷ কিন্তু ততদিন বাড়ি থেকে বসে অবসাদের মধ্যে দিয়ে যাওয়া ছাড়া কী মানুষের কোনও কাজ নেই৷

আজ ইতিহাস বলছে অনেক কথা৷ ইতিহাস বলছে, যত কঠিন পরিস্থিতি হোক না কেন মানুষ ঘুরে দাঁড়াবে, মানুষ উঠে দাঁড়াবে৷ ধসে যাওয়া অর্থনীতিকে ফিরিয়ে আনবে৷ শুধু প্রয়োজন একটু ধৈর্যের৷ কিন্তু সেই ধৈর্য্যের বাঁধ বেয়ে হেঁটে জাপান, জার্মানি ফিরে দাঁড়িয়েছে৷ কিন্তু বিশ্বজুড়ে এই মন্দার মধ্যে মানুষ কতটা ধৈর্য ধরবে, সেই নিয়ে প্রশ্ন দেখা দিয়েছে৷

সমীক্ষা বলছে, করোনা আক্রান্ত দেশগুলোতে বহু মানুষ রাতে শুতে খিদে নিয়ে৷ ইতিমধ্যে লকডাউনের খারাপ প্রভাব পড়তে শুরু করেছে৷ যতদিন যাবে এর খারাপ প্রভাব পড়তে থাকবে৷ তখন মানুষের বেকারত্বের সংখ্যা যেমন বৃদ্ধি পাবে, তেমনি বৃদ্ধি পাবে মানুষেকর অনাহারে থাকা মানুষের৷ হিসেব বলছে, বিশ্বে মোট ২৬ কোটি মানুষকে অনাহারে কাটাতে হবে উত্তর করোনা সময়ে৷ এখনই ১৩ কোটি মানুষ অনাহারে দিন কাটায়৷ তাই সেই সংখ্যাটা প্রায় দ্বিগুন হয়ে যাবে বলে রাষ্ট্রসংঘ তাদের একটি সমীক্ষায় আশঙ্কা করছেন৷  সব কিছুর মূলে রয়েছে লকডাউন৷

তবে কী অর্থনীতি বাঁচাতে লকডাউন তুলে দেওয়া উচিত৷  তা হলে, বিশ্বে ধসে যাওয়া অর্থনীতিকে কিছুটা হলেও বাঁচানো যাবে৷ কিন্তু সর্বনাশ হয়ে যাবে লক ডাউন তুলে নেওয়া হলে৷ করোনা যে হারে সংক্রমণক রোগ, লকডাউন তুলে নিলে বিশ্বের বেশিরভাগ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হবে৷ বিশ্বজুড়ে মৃত্যুমিছিল শুরু হবে৷  বিশ্বে জনসংখ্যা এক ধাক্কায় অনেকটা অনেকটা নেমে যাবে৷ বিশেষজ্ঞরা দাবি করেছেন,  টানা ১০ সপ্তাহ লকডাউন প্রয়োজন৷ তা না হলে করোনা আরও ভয়ানক হয়ে উঠতে পারে৷ করোনার দ্বিতীয় ঢেউ উঠে আসতে পারে৷  পরিস্থিতি কোনও  মানুষ বেঁচে থাকবে না তো অর্থনীতি৷ তবে উপায় কী৷ করোনা এমন একটা পরিস্থিতিতে মানুষকে দাঁড় করিয়েছে যে দিকেই যাওয়া যাবে সেই দিকেই বিপদ৷

বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন,  এখন খুব সাবধানে পা ফেলতে হবে৷ তা না হলে বিপদ৷ পরিস্থিতিতে অর্থনীতিকে বা মানুষকে একসঙ্গে বাঁচাতে পারা সম্ভব নয়৷ বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, লকডাইন  করেই অর্থনীতিকে অল্প করে চাঙ্গা রাখতে হবে৷ যেখানে সংক্রমণের ভয় অনেকটা কম থাকবে, তার মধ্যেই কাজ চালিয়ে যেতে হবে৷  এখনও ভারতে সম্পূর্ণ লকডাউন চলছে৷ কিন্তু বর্তমানে অল্প অল্প করে শিল্পাঞ্চল খোলার পরিকল্পনা চলছে বলে শোনা যাচ্ছে৷ তবে হয়তো পরিস্থিতি কিছুটা নিয়ন্ত্রণে আনা সম্ভব হবে৷

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

three × 2 =