নয়াদিল্লি: বালাকোট শহর থেকে ২০ কিলোমিটার দূরে পাহাড়ের চূড়ায় জয়েশের প্রধান প্রশিক্ষণ শিবিরটি পাঁচতারা হোটেলের থেকে কোনও অংশে কম নয়। এর শীতাতপ নিয়ন্ত্রিত সুদৃশ্য ঘরগুলি রীতিমতো বিলাসবহুল। সুইমিং পুলটিও অসাধারণ। এই জঙ্গি শিবিরে ৫০০ থেকে ৭০০ জনের থাকার সুবন্দোবস্ত ছিল। আর এত লোকের রান্না এবং শিবির পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখার জন্য আলাদা লোক ছিল।
পাহাড়ের উপরে ঘন জঙ্গলে ঘেরা হওয়ায় ভৌগোলিক কারণে এটি ছিল অত্যন্ত নিরাপদ আশ্রয়। ২০০১ সালের আগে জয়েশ-ই-মহম্মদের প্রধান কার্যালয় ছিল আফগানিস্তানে। সেই সময় তালিবানের সঙ্গে হাত মিলিয়েই কাজ করত এই সংগঠন। পাকিস্তানে তখন একচেটিয়া আধিপত্য ছিল লস্কর-ই-তোইবার। লস্করের জনপ্রিয়তায় ভাগ বসাতেই জয়েশের পাকিস্তানে আত্মপ্রকাশ। কিন্তু, আইএসআইয়ের পরামর্শেই তারা পরে ডেরা বাঁধে পাক অধিকৃত কাশ্মীরের কাছে মানশেরা জেলার বালাকোটে। এই ডেরা আগে ছিল জঙ্গি সংগঠন লস্কর-ই-তোইবার দখলে। ২০০৫ সালে বড় মাপের ভূমিকম্প হয়েছিল কাশ্মীরে।
গোয়েন্দা সূত্রের খবর, সেই সময় নিজেদের জমি তৈরির উদ্যোগ নেয় জয়েশ। লস্করের প্রধান হাফিজ সইদ ত্রাণ কার্যে হাত লাগায়। জামাত-উদ-দাওয়ার ব্যানারে তিনি দুর্গতদের (সংখ্যায় কয়েক হাজার) উদ্ধার করে নিয়ে আসেন বালাকোটের আশ্রয়ে। সৌদি আরবের কাছ থেকে প্রচুর অর্থও পান। অন্যান্য দেশের কাছ থেকেও প্রচুর আর্থিক সাহায্য আসে। যা দিয়ে বালাকোটের পরিকাঠামো গড়ে তোলা হয়। লস্কর ছেড়ে দেওয়ার পর এই জঙ্গি ঘাঁটির দখল নেয় জয়েশ।
সূত্রের খবর, বায়ুসেনার অভিযানের সময় বালাকোটের জঙ্গি শিবিরে সকলে ঘুমিয়ে ছিল। তাই, বিপদের বিষয়ে কিছুই আঁচ করতে পারেনি। সেই সময় শিবিরে কমপক্ষে ৩২৫ জন জঙ্গি ছিল। প্রশিক্ষক ছিলেন ২৫ থেকে ২৭ জন। ভারতীয় বিমানবাহিনীর প্রত্যাঘাতের পর তারা কেউ বেঁচে নিই বলেই শোনা যাচ্ছে৷