নয়াদিল্লি: দেশের বর্তমান সাংবিধানিক সর্বাধিনায়ক তথা রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কার্যকালের মেয়াদ প্রায় শেষের পথে। আর তাই বেজে গিয়েছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের নির্ঘণ্ট। গত সপ্তাহেই জাতীয় নির্বাচন কমিশনের তরফ থেকে জানানো হয়েছে রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিনক্ষণ। জানানো হয়েছে আগামী ১৮ জুলাই দেশের ১৫ তম রাষ্ট্রপতি বেছে নেওয়ার ভোটগ্রহণ প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হবে। সংবিধান অনুযায়ী, গোপন ব্যালটের মাধ্যমে অনুষ্ঠিত হবে এই নির্বাচন এবং ইতিমধ্যেই দেশের রাজনৈতিক দলগুলি রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের পদপ্রার্থী দিয়ে শুরু করেছেন বৈঠক, আলোচনা।
জাতীয় নির্বাচন কমিশনের দেওয়া তথ্য অনুযায়ী, দেশের বর্তমান রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দের কার্যকালের মেয়াদ শেষ হচ্ছে আগামী ২৪ জুলাই। দেশের ১৫ তম রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের দিন হিসেবে তাই ১৮ জুলাই এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। যার ভোট গণনা কবে ২১ জুলাই এবং ২৫ জুলাই দেশের নতুন এবং ১৫তম রাষ্ট্রপতি শপথ গ্রহণ করবেন। অন্যদিকে মনোনয়ন জমা দেওয়ার যাবতীয় খুঁটিনাটি সম্পর্কে তথ্য দিতে ১৫ জুন অর্থাৎ আজ একটি বিজ্ঞপ্তি জারি করা হবে নিরবাচন কমিশনের পক্ষ থেকে।
এখন প্রশ্ন হল কিভাবে নির্বাচিত হন দেশের সাংবিধানিক সর্বাধিনায়ক। ভারতীয় সংবিধান অনুযায়ী রাজ্যসভার নির্বাচনের মতোই রাষ্ট্রপতি নির্বাচনেও কোন আমজনতা সরাসরি অংশগ্রহণ করতে পারেন না। গণতান্ত্রিক উপায়ে জনসাধারণ দ্বারা নির্বাচিত জনপ্রতিনিধিদের ভোটেই নির্বাচিত হন রাষ্ট্রপতি। দেশের প্রতিটি রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলের বিধায়ক, লোকসভা ও রাজ্যসভার নির্বাচিত সাংসদের ভোটের মাধ্যমেই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। তবে রাজ্যসভার মত খোলা ব্যালট নয়, বন্ধ এবং গোপন ব্যালটের মাধ্যমে ভোটদান প্রক্রিয়া অনুষ্ঠিত হয়। এখন প্রশ্ন হচ্ছে কিভাবে নির্ধারিত হয় সাংসদ এবং বিধায়কদের ভোটের মূল্য। সংসদের উভয় কক্ষে মোট ৭৭৬ জন সাংসদ রয়েছেন। তাই প্রতিটি সাংসদের ভোটের মূল্য দাঁড়ায় ৫.৪৩ লক্ষ ভাগ ৭৭৬। যার ফলাফল হয় ৭০০। বিধানসভা এবং সংসদের দুটি কক্ষ মিলিয়ে মোট ভোটের পরিমাণ দাঁড়ায় ১০.৮৬ লক্ষ। যিনি সবচেয়ে বেশি ভোট পান, তিনিই বিজয়ী ঘোষিত হন।
তবে দেশের রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হওয়ার জন্য নূন্যতম কিছু যোগ্যতা হতে হবে। পদপ্রার্থীর বয়স নূন্যতম ৩৫ হতে হবে এবং দেশের যেকোনো নাগরিক রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জন্য নিজের মনোনয়ন জমা দিতে পারেন। তবে সেক্ষেত্রে বর্তমানে নিয়ম সামান্য একটু বদলানো হয়েছে। রাষ্ট্রপতি পদপ্রার্থী হিসেবে যিনি নিজের মনোনয়ন জমা দেবেন সেক্ষেত্রে তার ৫০ জন সমর্থক এবং ৫০ জন প্রস্তাবকের প্রয়োজন পড়বে। এই একশো জনকে আবার ইলেকটোরাল কলেজের সদস্য হতে হবে। অর্থাৎ একক সমর্থক হিসাবে কোন ব্যক্তি মনোনয়ন জমা দিতে পারবেন না। এছাড়াও রাষ্ট্রপতি নির্বাচনের জামানতের ক্ষেত্রেও আনা হয়েছে পরিবর্তন। আগে এই নির্বাচনে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করার জন্য প্রার্থীকে পাঁচ হাজার টাকা জমা রাখতে হত কিন্তু এখন তা বাড়িয়ে ১৫ হাজার টাকা করা হয়েছে।