নয়াদিল্লি: করোনা ভাইরাসের এমন মারাত্মক রূপ গতবছরও দেখেনি ভারতবাসী। দেশে করোনা সংক্রমণ কার্যত নাগালের বাইরে চলে গিয়েছে। গত ২৪ ঘন্টায় সংক্রমিত হয়েছে ৩ লক্ষেরও বেশি মানুষ।আক্রান্তের সঙ্গে পাল্লা দিয়ে বাড়ছে রাজ্যে রাজ্যে অক্সিজেনের চাহিদা। গুরুতর আক্রান্ত রোগীদের জন্য প্রয়োজনীয় তরল অক্সিজেনের জোগানে টান পড়েছে। সেই নিয়েই বৃহস্পতিবার দিল্লিতে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের উচ্চ পর্যায়ের আধিকারিকদের সঙ্গে বৈঠক করলেন প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। রাজ্যে রাজ্যে অক্সিজেন যাতে দ্রুত ও মসৃণভাবে পৌঁছে যায়, সেই নির্দেশ দিলেন নমো। পাশাপাশি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের পক্ষ থেকে রাজ্যগুলিকেও দেওয়া হয়েছে ৭টি নির্দেশিকা।
দেশের বিভিন্ন রাজ্যের হাসপাতালগুলিতে ভয়ানকভাবে টান পড়েছে অক্সিজেনের। প্রচুর পরিমাণ অক্সিজেন চেয়ে বিভিন্ন রাজ্য খবর দিচ্ছে প্রধানমন্ত্রীর দফতরে। দেশের ২০টি রাজ্যে এই মুহূর্তে সব মিলিয়ে ৬৭৮৫ মেট্রিক টন তরল অক্সিজেনের প্রয়োজন। দিল্লি হাইকোর্ট দেশের এই পরিস্থিতির জন্য কেন্দ্রকে দায়ী করে ভর্ৎসনা করেছে। হাইকোর্টের ডিভিশন বেঞ্চ জানিয়েছে, “এটা জাতীয় বিপর্যয়। এখানে মানুষের জীবন নিয়ে প্রশ্ন রয়েছে। ধার, ভিক্ষা কিংবা চুরি করে হলেও অক্সিজেনের জোগান দিতে হবে কেন্দ্রকে।” বৃহস্পতিবার বিভিন্ন রাজ্যের মধ্যে মসৃণ ও দ্রুত অক্সিজেন পরিবহনের জন্য রাজ্যগুলিকে ৭টি নির্দেশিকা দিয়েছে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রক।
স্বরাষ্ট্রমন্ত্রকের দেওয়া নির্দেশিকাগুলি হল: ১) রাজ্যগুলিতে দ্রুত অক্সিজেন পরিবহনে কোনও বিধি-নিষেধ থাকবে না। এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে নিখরচায় দ্রুত পৌঁছে যাবে অক্সিজেন পরিবহনকারী যান। ২) শহরের মধ্যে অক্সিজেনের গাড়ি পরিবহনের সময় কোনও নির্দিষ্ট সময়সীমা থাকবে না। কোনও বাধা ছাড়াই যাতে এক শহর থেকে অন্য শহরে অক্সিজেন পৌঁছে যেতে পারে তা নিশ্চিত করতে হবে। ৩) কোনও কর্তৃপক্ষ কোনও জেলা বা অঞ্চলে নির্দিষ্ট পরিমাণ অক্সিজেন সরবরাহ করার ক্ষেত্রে অক্সিজেন পরিবহনকারী যানবাহন সংযুক্ত করবে না। ৪) বিভিন্ন রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলগুলিতে অক্সিজেন যোগান দেওয়ার জন্য অক্সিজেন প্রস্তুতকারী সংস্থা ও সরবরাহকারীদের মধ্যে কোনও বাধানিষেধ থাকবে না। ৫) রাজ্য ও কেন্দ্রশাসিত অঞ্চলে ইজি-১১ দ্বারা প্রস্তুত অক্সিজেন কঠোরভাবে নির্দিষ্ট সময় অন্তর সংশোধিত করতে হবে। ৬) বাণিজ্যিক কারণে ব্যবহৃত অক্সিজেনের সরবরাহ ২২ এপ্রিল থেকে বন্ধ থাকবে। পরবর্তী নির্দেশিকা পেলে তবেই ফের সরবরাহ শুরু হবে। ৭) উপরোক্ত ৬টি নির্দেশিকা কার্যকর করার দায়িত্বে থাকবেন জেলাশাসক, পুলিশের এসপি, পুলিশ কমিশনার, পুলিশ সুপার।