প্রতিশ্রুতিই সার, ভারতে ঠাঁই হল না নিপীড়িত পাক হিন্দুদের, সর্বস্ব খুইয়ে ফিরছেন ‘স্বদেশে’

প্রতিশ্রুতিই সার, ভারতে ঠাঁই হল না নিপীড়িত পাক হিন্দুদের, সর্বস্ব খুইয়ে ফিরছেন ‘স্বদেশে’

নয়াদিল্লি: প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী থেকে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী অমিত শাহ, প্রতিশ্রুতিই সার৷ তাঁদের কথায় বিশ্বাস করেই ভারতে আশ্রয় পাওয়ার আশায় পাকিস্তান ছেড়েছিলেন হাজার খানেক ধর্মীয় সংখ্যালঘু৷ কিন্তু সেই বিশ্বাসের ভয়ানক মূল্য চোকাতে হল তাঁদের।

পাকিস্তান থেকে আগত শরণার্থীরা প্রায় সকলেই হিন্দু, কয়েকটি শিখ পরিবারও রয়েছে। তাঁরা পাকিস্তানে ধর্মীয় ভেদাভেদের বলি৷ পদে পদে নির্যাতিত হতে হয়েছে৷ তাঁরাই ভারতের নাগরিক হতে চেয়ে ভিসা করিয়ে এ দেশে এসেছিলেন। কিন্তু অভিযোগ, প্রতিশ্রুতি ছাড়া মোদী সরকারের  থেকে কিছুই পাননি তাঁরা। অথচ সিএএ  বা সংশোধিত নাগরিকত্ব আইন প্রণয়নের যুক্তিই ছিল, ভারতের প্রতিবেশী দেশগুলির ধর্মীয় সংখ্যালঘু যেসব মানুষ ভারতের নাগরিকত্ব চান, তাঁদের দ্রুত নাগরিকত্ব দেওয়া হবে। কিন্তু বাস্তব চিত্র সম্পূর্ণই ভিন্ন। এদেশে এসেও হতাশ হয়ে পাকিস্তানে ফিরে গিয়েছেন প্রায় ৮০০ জন৷ যাঁদের তুলে ধরেই পাকিস্তান সরকার বাকিদের দেখাচ্ছে— ভারতে গিয়ে কতটা হেনস্থার মধ্যে পড়তে হয়েছিল তাঁদের৷ 

আরও পড়ুন- মৃত্যুর পরেও অমর তিনি, দ্বিতীয়বারের জন্য পুলিৎজার পেলেন দানিশ সিদ্দিকি

পাকিস্তানে নির্যাতিত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের পাশে দাঁড়িয়েছে ‘সীমান্ত লোক সংস্থান’ নামে এক সংস্থা৷ তারাই সম্প্রতি নাগরিকত্বের আশায় ভারতে আসা পাকিস্তানের সংখ্যালঘু হিন্দুদের উপর হেনস্থা ও দুর্দশার বিষয়টি প্রকাশ্যে এনেছে। তারা জানিয়েছে,  হাজার খানেক মানুষ বিভিন্ন ধরনের ভিসা করিয়ে ভারতে এসেছিলেন৷  তাঁরা সকলেই অত্যন্ত দরিদ্র। পাকিস্তান থেকে শেষ সম্বলটুকু নিয়ে তাঁরা ভারতে এসেছিলেন। তার পর থেকে বারে বারে প্রশাসনের কাছে আর্জি জানিয়েছেন৷ কেন্দ্রের কাছে আশ্বাসের অপেক্ষা করেছে৷ শেষ পর্যন্ত কোনও পথ খুঁজে না পেয়ে ফের স্বদেশে ফিরছে সংখ্যালঘু হিন্দুরা৷ ভারতে এসে তাঁরা একটাই আশ্বাস শুনেছেন, পড়শি দেশে নির্যাতিত ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের নাগরিকত্ব দেওয়ার বিষয়ে বিজেপি সরকার খুবই আন্তরিক! 

সীমান্ত লোক সংস্থানের সভাপতি হিন্দু সিং সোঢার কথায়,  “স্বল্প মেয়াদের ভিসায় ভারতে এসেছিলেন পাক সংখ্যালঘুরা৷ কিন্তু এখানে এসে চরম দুর্দশার মধ্যে দিন কেটেছে তাঁদের৷ সরকারের জবাবের অপেক্ষা করতে করতে প্রায় সকলেরই ভিসা শেষ হয়ে গিয়েছে। অনেকের আবার পাসপোর্টের মেয়াদও ফুরিয়েছে। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা নয়াদিল্লির পাকিস্তান দূতাবাসে ধর্নায় বসেছেন৷ কিন্তু তাঁরাও সুযোগ বুঝে গরিব মানুষগুলোকে সর্বস্বান্ত করছে। বাধ্য হয়েই প্রায় ৮০০ মানুষ মাথা নিচু করে ফের পাকিস্তানে ফিরে গিয়েছেন। তাঁদের স্বপ্ন ভেঙে চুড়মাড়।”