নয়াদিল্লি: দিল্লির সংঘর্ষে বার বার ঘুরে ফিরে আসছে পুলিশের নিষ্ক্রিয়তা। বার বার দিল্লির সাধারণ মানুষ দাবি করেছে, সংঘর্ষের চার দিন পুলিশ নিষ্ক্রিয় ছিল। অনেকে আবার পুলিশের এই নিষ্ক্রিয়তার সঙ্গে গুজরাট দাঙ্গার সময় পুলিশের নিষ্ক্রিয়তার মিল খুঁজে পেয়েছে। এই সংঘর্ষে পুলিশের যে পরোক্ষে সমর্থন ছিল তার অভিযোগ যেন আরও স্পষ্ট হচ্ছে।
সেই বিতর্ককে উসকে দিতে সম্প্রতি একটি পরিসংখ্যাণ প্রকাশ পেয়েছে। সেখানে দেখা গিয়েছে, ভয়ঙ্কর সংঘর্ষের চারদিনে দিল্লিতে পুলিশের কাছে সাহায্য চেয়ে প্রায় ১৩,২০০ ফোন গিয়েছিল আক্রান্ত লোকজনের। কিন্তু পুলিশের কল রেকর্ডে সেগুলি নিয়ে কোনও ব্যবস্থা করা হয়েছিল কিনা তা পরিষ্কার নয়। প্রথম দিন রবিবার পুলিশের কন্ট্রোল রুমে গিয়েছিল ৭০০ ফোন। পরদিন ৩৫০০, তার পরের দিন ৭৫০০ এবং চতুর্থ দিনে ১৫০০ ফোন করা হয়েছে পুলিশকে।
সর্বভারতীয় একটি সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, ভজনপুরা থানায় চারদিনে তিন থেকে সাড়ে তিনহাজার ফোন গিয়েছিল। কোনওটা বুলেট ছোঁড়ার, কোনওটা পাথর ছোঁড়ার, আগুন লাগানোর। লগবুকের অ্যাকশন টেকেন বা কী ব্যস্থা নেওয়া হয়েছে সেই কলাম বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই খালি। কারাওয়াল নগর থানার শিবপুরীর একটি স্কুল দাঙ্গাবাজরা দখল করে নিয়েছিল। সেখানকার বাসিন্দা ফয়সাল ফারুক জানিয়েছেন, বহুবার তিনি ফোন করলেও পুলিশ ব্যবস্থা নেয়নি। আসছে বলেও আসেনি। লগবুকে দেখা যাচ্ছে, অন্তত দুটি ফোন এসেছিল এবং কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।
পুলিশ জানিয়েছে, দিল্লিতে মৃতদের মধ্যে ১৩ জনের মৃত্যু হয়েছে বুলেটের আঘাতে। ২২ জন মারা গিয়েছেন পাথরের ঘায়ে কিংবা মারধোরে। মৃতদের পরিবারের অভিযোগ, পুলিশ সম্পূর্ণ নিষ্পৃহ। দেহ মর্গ থেকে ছাড়তেও অযথা দেরি করছে। দু-তিনদিন ঘুরে দেহ বের করতে পারেননি অনেকেই। বেশকিছু দেহ পচতে শুরু করেছে। জানা গিয়েছে, কাগজপত্রের নাম করে আত্মীয়দের বসিয়ে রাখা হচ্ছে দিনভর। আপ নেতা সঞ্জয় সিংয়ের প্রশ্ন, ১২৩টি এফআইআর দায়ের করা হলেও যারা উল্কানিমূলক ঘৃণার ভাষণ স্লোগান দিয়েছিল, বিজেপির সেই নেতাদের বিরুদ্ধে এফআইআর হল না কেন?