মুম্বই: করোনার সঙ্গে যুদ্ধে এবার হয়তো জয়ের দিকে এগোতে চলেছে ভারত। বর্তমানে সম্ভবত হার্ড ইমিউনিটিই করোনাকে দূরে সরাতে সক্ষম হবে। এমনই মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা। মুম্বইয়ে দেশের মধ্যে প্রথম হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হচ্ছে বলে মনে করছে টাটা ইনস্টিটিউট অব ফান্ডামেন্টাল রিসার্চ (টিআইএফআর)-এর গবেষকরা।
তাঁদের মতে জানুয়ারির মধ্যে শহরের বস্তি এলাকার ৮০ শতাংশ মানুষ করোনা আক্রান্ত হতে পারেন। এ ছাড়া মুম্বইয়ের বস্তি এলাকার বাইরেও ৫৫ শতাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হবেন বলে মনে করা হচ্ছে। সাধারণত গোষ্ঠীর ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ মানুষ (অনেকের মতে ৪০ থেকে ৪৫ শতাংশ মানুষ) যখন কোনও রোগে সংক্রমিত হন ও সেরে ওঠেন তখন হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হয়। এক্ষেত্রে মানুষের শরীরে অ্যান্টিবডি তৈরি হয়। ফলে বাড়ে প্রতিরোধ ক্ষমতা। শরীর নিজেই সেই রোগ প্রতিরোধ করতে সক্ষম হয়। জানুয়ারির মধ্যে মুম্বইয়ের মানুষের মধ্যে সম্ভবত সেই হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হতে চলেছে। সম্প্রতি টিআইএফআরের গবেষণায় এই ইঙ্গিত মিলেছে। সংস্থার গবেষকরা এও দাবি করেছেন, মুম্বইয়ে জুলাই এবং সেপ্টেম্বর মাসের তুলনায় করোনার প্রকোপ এখন অনেকটাই কম।
কিন্তু করোনার প্রকোপ যদি কমেই তাহলে সংক্রমণ বেড়ে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে কীভাবে? বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, নভেম্বর থেকে জানুয়ারিরর মধ্যে বাণিজ্য নগরী স্বমহিমায়। ফিরতে শুরু করবে। এ ছাড়া লোকাল ট্রেনও চলবে। খুলবে স্কুল-কলেজ ও অফিস-কাছারি। কিন্তু মানুষের শরীরে ক্রমশ করোনার প্রতিরোধ ক্ষমতা বেড়ে যাবে। আর সেই কারণে হাসপাতালে করোনা আক্রান্ত ভর্তি হবে কম। নভেম্বরের হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীদের সংখ্যা বাড়লেও জানুয়ারিতে তা অনেকটাই কমে যাবে। টিআইএফআর সেই সময়কার দৈনিক আক্রান্ত ও মৃত্যুর সংখ্যা নিয়েও একটি অনুমানের কথা জানিয়েছে। তাঁদের মতে, নভেম্বরের শুরুতে দৈনিক ২ হাজার ৩০০ থেকে ৩ হাজার ২০০ জন রোগী হাসপাতালে ভর্তি হলেও জানুয়ারির গোড়ার দিকে তা পৌঁছবে দৈনিক ২০০ থেকে ২ হাজারে। এখন দিনে ২০ থেকে ৩০ জনের মৃত্যু হলেও জানুয়ারিতে তা ৪ থেকে ২০ জনে পৌঁছবে।
শোনা যাচ্ছে ফেব্রুয়ারির নাগাদ করোনা ভ্যাকসিন বাজারে চলে আসবে। তখন ৬০ বছর তা তার বেশি বয়স্ক ১৩.১ লক্ষ মানুষকে প্রতিষেধক দেওয়া মৃত্যর হার ৬ মাসের মধ্যে ৫০ শতাংশ কমে যাবে বলেও জানান গবেষকরা। ফলে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া রোগীর সংখ্যাও আরও কমবে। যদিও টিআইএফআরের গবেষণা অনেক চিকিৎসক মেনে নিতে পারছেন না। তাঁদের মতে মুম্বইতে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হলেও গোটা দেশে তা তৈরি হতে সময় লাগবে। প্রতিটি রাজ্যে যদি ৬০ থেকে ৬৫ শতাংশ মানুষ করোনায় আক্রান্ত হয়ে সেরে ওঠেন, তবেই দেশজুড়ে হার্ড ইমিউনিটি তৈরি হবে। কিন্তু ১৩০ কোটি মানুষের দেশে এখনও পর্যাপ্ত পরীক্ষাই করা সম্ভব হয়নি।