নয়াদিল্লি: বয়স যে শুধুই সংখ্যা, আরও একবার প্রমাণ করতে মাঠে নেমে পড়লেন ৯০ বছরের বৃদ্ধা৷ সম্বল শুধুই মনোবল৷ প্রবল আত্মবিশ্বাসকে পুঁজি করে ৯০ বছর বয়সে দাঁড়িয়েও ব্যবসায় হাত পাকাতে শুরু করেছেন চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা হরভজন কউর৷ জীবনে কখনও উপার্জন করতে না পারার আক্ষেপ ধুয়েমুখে আত্মনির্ভরতার পথে বৃদ্ধার উদ্যোগকে কুর্নিশ জানিয়েছে গোটা দেশ৷ বাস্তব আত্মনির্ভর ভারতের সেরা বিজ্ঞাপন বলেও দাবি করছেন নেটপাড়ার বাসিদ্ধারা৷
লকডাউন আবহে মায়ের সঙ্গে গল্প জুড়েছিলেন মেয়ে৷ বৃদ্ধা মা৷ হাঁটতে সমস্যা হয় এখন৷ চোখের দৃষ্টিও অনেকটা ঝাপসা৷ মায়ের খবর নিতে গিয়ে কথা-কথায় উঠে এসেছিল মায়ের আক্ষেপের কথা৷ মাকে জিজ্ঞেস করেছিলেন মেয়ে, জীবনে কোনও আক্ষেপ রয়েছে কি না৷ বেশ কিছুক্ষণ চুপ থেকে অশক্ত শরীরে দিয়েছিলেন জবাব৷ মাথা নেড়ে মা জানিয়েছিলেন, জীবনে তাঁর একটাই আপেক্ষ, কখনও তিনি উপার্জন করতে পারেননি৷ বলা ভালো করতে দেওয়া হয়নি৷ শেষ জীবনে সেই আক্ষেপ তিনি কাটাতে চান৷ মায়ের কথা শুনে থেমে থাকেননি মেয়ে৷ মাকে স্বনির্ভর করাতে সক্রিয় হয়ে ওঠেন কন্যা৷ নতুন জীবন শুরু করতে মাকে অনুপ্রেরণা দেওয়ার কাজ শুরু করেন মেয়ে৷ সেই শুরু৷ পরিকল্পনাও৷
চণ্ডীগড়ের বাসিন্দা বৃদ্ধা হরভজন কউরের মেয়ে রবিনা৷ মেয়ের কাছেই থাকেন তিনি৷ ছোট্ট পরিবার৷ মায়ের আক্ষেপ মেটাতে রবিনা স্থির করেন, মায়ের জন্য কিছু করতেই হবে৷ মেটাতে হবে আক্ষেপ৷ মাছায় আসে নয়া পরিকল্পনার কথা৷ মা যে ভালো রান্না করেন৷ সকলেই তাঁর রান্নার প্রশংসা করেন৷ মিষ্টিও তৈরি করতে জানেন৷ সুস্বাদু আচারও বানাতেন জানেন৷ মাথায় আসে পরিকল্পনা৷ নাতি-নাতনি, মেয়ে রবিনা জোর করায় ৯০ বছর বসে নিজের ব্যবসা শুরুক করিকল্পনা নেওয়া হয়৷ প্রথমদিন বেসনের বরফি, নানারকম আচার বানিয়ে অর্গ্যানিক বাজারে বিক্রি করেন ৯০ বছরের বৃদ্ধা৷
প্রথম দিন সবটাই বিক্রি হয়ে গিয়েছিল৷ বাড়ি ফিরেছিলেন উপার্জন ২ হাজার টাকা নিয়ে৷ একদিনে দু’হাজার টাকা উপার্জন করা বৃদ্ধার চোখে-মুখে ছিল তৃপ্তির অনুভূতি৷ মেয়ে রবিনা জানিয়েছেন, সেদিন মায়ের চোখে-মুখে আত্মবিশ্বাস, তৃপ্তি আগে কোখনও দেখননি৷ প্রথম উপার্জনের পরআর জোর করতে হয়নি তাঁকে৷ নিজেই গ্রাহকদের থেকে অর্ডার নিতেন৷ বাড়ির কাছাকাছি দোকানে দিতে ডেলিভারি৷ বর্তমানে হরভজনের বয়স ৯৪ বছর৷ আজও আগের মতোই উৎসাহ নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে যাচ্ছেন তিনি৷