মুম্বই: অ্যান্টি বায়োটিকের অতিরিক্ত প্রয়োগই ভারতে কোভিড পরিস্থিতিকে আরও ভয়াবহ করে তুলেছে৷ দেশের ১০ টি হাসপাতালে ১৭ হাজার ৫৩৪ জনের করোনা রোগীর উপর সমীক্ষা চালিয়ে এমনটাই জানাচ্ছে ইন্ডিয়ান কাউন্সিল অফ মেডিক্যাল রিসার্চ (আইসিএমআর)৷ এই ১০ হাসপাতালের মধ্যে রয়েছে মুম্বইয়ের সিয়ন এবং হিন্দুজা৷
আরও পড়ুন- করোনার কোপে অনাথ হওয়া শিশুদের নিয়ে উদ্বিগ্ন কেন্দ্র, তথ্য নথিভুক্ত করতে রাজ্যগুলিকে চিঠি
সমীক্ষায় দেখে গিয়েছে, অর্ধেকেরও বেশি কোভিড আক্রান্ত রোগী সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল বা ফাঙ্গাল ইনফেকশনের (ছত্রাক ঘটিত সংক্রমণ) কারণে মারা গিয়েছেন৷ করোনা চিকিৎসা চলার মাঝে বা পরে এই সেকেন্ডারি ইনফেকশন দেখা দেয়৷ আইসিএমআর-এর সমীক্ষায় যে সংখ্যাটি ধরা পড়েছে, তা তুলনামূলক ভাবে কম৷ ১৭ হাজার কোভিড রোগীর মধ্যে ৪ শতাংশ রোগী সেকেন্ডারি ব্যাকটেরিয়াল এবং ফাঙ্গাল ইনফেকশন দেখা গিয়েছে৷ তবে এই সমীক্ষার নেতৃত্বে থাকা আইসিএমআর-এর বর্ষীয়ান বিজ্ঞানী কামিনি ওয়ালিয়া বলেন, সেকেন্ডারি ইনফেকশনের জেরে রোগীদের আরও দীর্ঘ সময় হাসপাতালে থাকতে হচ্ছে৷ হাসপাতালে ভর্তি থাকার ১০ দিন পর যে ধরনের সংক্রমণ ঘটে তাতে উচ্চ মাত্রায় অ্যান্টিবায়োটিকের প্রয়োজন হয়৷ চিকিৎসকরা জানাচ্ছেন, ব্যাক্টেরিয়াগুলি অ্যান্টি বায়োটিক প্রতিরোধী হয়ে উঠছে। এর ফলে ব্যাক্টেরিয়াগুলি এমন ভাবে সংক্রমণ ছড়াচ্ছে যে চিকিৎসা করা কঠিন হয়ে যাচ্ছে৷
করোনা মোকাবিলার নির্দিষ্ট কোনও ওষুধ নেই৷ তাই রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বা ইমিউনিটি বাড়ানোর উপরেই বেশি জোড় দিচ্ছেন চিকিৎসকরা৷ জ্বর কমাতে প্যারাসিটামলের পাশাপাশি ভিটামিন ট্যাবলেট দেওয়া হচ্ছে৷ এদিকে জানা গিয়েছে, অতিরিক্ত জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট ও অ্যান্টি বায়োটিক খাওয়ার ফলে মিউকরমাইকোসিসের মতো ছত্রাকের সংক্রমণ বাড়ছে৷ ইন্ডিয়ান মেডিক্যাল অ্যাসোসিয়েশনের প্রাক্তন প্রধান রাজীব জয়দেবনের দাবি, কোভিড সংক্রমণ এড়াতে যাঁরা অতিরিক্ত জিঙ্ক সাপ্লিমেন্ট খেয়েছেন, তাঁদের মধ্যে মিউকরমাইকোসিসের মতো ছত্রাকের সংক্রমণের ঝুঁকিও বৃদ্ধি পেয়েছে। আবার ডাঃ জয়াদেবন টুইট থেকে জানা যাচ্ছে, Azithromycin, Doxycycline and Carbapenem এই তিন ধরনের অ্যান্টিবায়োটিক মিশ্রণ মিউকরমাইকোসিসের সংক্রমণের ঝুঁকি বাড়িয়ে তুলেছে৷