গোয়ালিয়র: ছেঁড়া ফাটা পোশাকে শীর্ণকায়া এই মানুষটিকে গোয়ালিরের রাস্তায় বসে থাকতে দেখেছেন অনেকেই৷ হাতে তোবড়ানো একটা ভিক্ষার বাটি৷ কখনও পথ চলতি মানুষের দিকে বাড়িয়ে দেন তাঁর হাত৷ কখনও বা ভাঙা বাটিটা তুলে ধরেন তাঁদের দিকে৷ কখনও দান পান, কেউ আবার এড়িয়ে চলে যান অবলীলায়৷ ভিক্ষা বৃত্তি করে যে টুকু পয়সা জোটে তা দিয়েই বেঁচে থাকা তাঁর৷ কিন্তু গোয়ালিরের রাস্তার ধুলোমাখা এই ভিখারির দাবি, তিনি আইআইটি কানপুরের প্রাক্তনী৷
আরও পড়ুন- অমিত শাহের সঙ্গে আলোচনাতেও কাটল না ‘কৃষি’ জট, বাতিল বৈঠক
সম্প্রতি সুরেন্দ্র বশিষ্ঠ নামে আইআইটি’র এই প্রাক্তনীকে উদ্ধার করা হয়েছে৷ তাঁর বাবার নাম ছেদালাল বশিষ্ঠ৷ আপাতত স্বর্গ সদন নামে এক সেবাপ্রতিষ্ঠানই তাঁর ঠিকানা৷ প্রতিষ্ঠানের সদস্য বিকাশ গোস্বামী জানান, ‘‘অত্যন্ত দুর্দশাগ্রস্ত অবস্থায় উদ্ধার করে আশ্রমে নিয়ে আসা হয় সুরেন্দ্রবাবুকে৷ ছিন্নভিন্ন নোংরা বস্ত্র পড়ে অসহায় অবস্থায় বাসস্ট্যান্ডের কাছে বসেছিলেন তিনি৷ ওঁনার সঙ্গে আমরা যখন কথা বলতে যাই উনি অসাধারণ দক্ষতায় ইংরেজিতে কথা বলেন৷ যা দেখে আমরা কিছুটা অবাক হয়ে যাই৷ ওঁনাকে আশ্রমে নিয়ে আসি৷ ওঁনার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ করার চেষ্টা করা চলছে৷’’
সুরেন্দ্রই জানিয়েছেন, ১৯৬৯ সালে আইআইটি কানপুর থেকে তিনি মেকিনিক্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং পাশ করেন৷ ১৯৭২ সালে লখনউয়ের ডিএবি কলেজ থেকে তিনি এলএলএম ডিগ্রি পান৷ তাঁর বাবা ছিলেন জেসি মিলের সাপ্লায়ার৷ সচ্ছল পরিবারের সন্তান তিনি৷ কিন্তু ১৯৯০ সালেই মিলটি বন্ধ হয়ে যায়৷ এর পর কী ঘটেছিল বা কী ভাবে তাঁর এই পরিণতি, সে বিষয়ে এখনও কিছু জানতে পারেননি আশ্রমের সদস্যরা৷ তবে তাঁর মতো একজন উচ্চশিক্ষিত মানুষকে নিজেদের মধ্যে পেয়ে খুশি আশ্রমবাসীরা৷ অন্যদিকে নিরাপদ আশ্রয় পেয়ে স্বস্তিতে আইআইটি’র এই প্রাক্তনী৷
আরও পড়ুন- বাড়ল গ্যাসের দাম, তবে ভর্তুকি নিয়ে থেকেই যাচ্ছে সংশয়
দিন কয়েক আগে একই ভাবে গোয়ালিয়রের রাস্তা থেকে এক ভিখারিকে উদ্ধার করেছিল এই সংগঠনের সদস্যরা৷ পরে জানা যায় তাঁর নাম মণীশ মিশ্র৷ তিনি প্রাক্তন পুলিশ অফিসার৷ তবে তাঁকে অসহায় অবস্থায় রাস্তায় ভিক্ষা করতে দেখেছিলেন তাঁরই সহকর্মীরা৷ পরে খবর দেওয়া হয় আশ্রমে৷ সেই সময় তাঁর মানসিক স্থিতি ঠিক ছিল না৷ জানা গিয়েছে ১৫ বছর আগে তিনি নিখোঁজ হয়ে গিয়েছিলেন৷ তবে মণীশবাবু এখন সুস্থ আছেন বলেই জানিয়েছেন বিকাশ গোস্বামী৷