কর্ণাটক: আতঙ্কের নাম অপারেশন লোটাস। আগেও বারবার বিজেপির বিরুদ্ধে বিধায়ক ভাঙিয়ে নিয়ে গিয়ে সরকার ভেঙে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। এবার আরো প্রবল ভাবে অভিযোগ উঠল। কর্ণাটকে বিধায়ক নিখোঁজ ঘটনার সঙ্গেই অপারেশন লোটাসের অভিযোগ মাথাচাড়া দিল। এদিন এনিয়ে জরুরি বৈঠক করে কংগ্রেস। যদিও মুখ্যমন্ত্রী কুমারস্বামী বলেছেন, তাঁর সঙ্গে যোগাযোগ আছে বিধায়কদের। তিনি আরো বলেন, সরকার পড়ে যাওয়ার কোনো সম্ভাবনাই নেই।
কংগ্রেস কর্ণাটকে জরুরি ভিত্তিতে বৈঠক ডেকেছে। অপারেশন লোটাসের আতঙ্কে পরবর্তী রণকৌশল ঠিক করতে এই বৈঠক অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। অভিযোগ, বিজেপি কংগ্রেস বিধায়কদের ভাঙিয়ে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করছে। অপারেশন লোটাস কী? এই শব্দটা প্রথম শোনা যায় ২০০৮ সালে। ৫ কংগ্রেস বিধায়কের দলের সঙ্গে যোগাযোগ নেই বলে খবর। তারপরই অপারেশন লোটাসের আতঙ্ক মাথাচাড়া দেয়। যদি কুমারস্বামী বলেন, সবাই আমার সঙ্গে যোগাযোগ রেখে চলেছেন। তাঁরা মুম্বই গেছেন আমাকে জানিয়েই। আমার সরকারের স্থায়িত্ব নিয়ে কোনো আতঙ্ক নেই।
কর্ণাটকে বিধানসভা নির্বাচনে কোনো দলই একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পায়নি। কংগ্রেসের সমর্থনে কুমারস্বামী সরকার গড়েন। তারপর বিভিন্ন সময়ে কংগ্রেসের সঙ্গে তাঁর মনমালিন্য প্রকাশ্যে আসে। তিনি এদিন বলেন, বিজেপি যে তাঁদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে পারে, সেই সম্ভাবনা তিনি খারিজ করেননি। তবে বলেন, তিনি বিষয়টি সমালে নিতে পারবেন।
একই কথা বলেছেন তাঁর ডেপুটি জি পরমেশ্বরা। তিনি বলেন, কংগ্রেস বিধায়করা কেউ ছুটিতে গেছেন, কেউ বেড়াতে গেছেন। বিজেপিতে কারো যোগ দেওয়ার সম্ভাবনা নেই। বিজেপি যে বলছে, সরকার পড়ে যাবে, তা সম্পূর্ণ ভিত্তিহীন। নিখোঁজ বিধায়কদের মধ্যে অন্যতম রমেশ জারাকিহোলি। তাঁকে সম্প্রতি রাজ্য মিন্ত্রিসভা থেকে বাদ দেওয়া হয়েছে। তিনি দল ছাড়ার হুমকি দেন। বাকিরা হলেন, আনন্দ সিং, বি গাগেন্দ্র, উমেশ যাদব, বিএস পাটিল।
কংগ্রেসে সঙ্কটমোচনের নাম ডি কে শিবকুমার। বিধানসভায় ত্রিশঙ্কু ফল হওয়ার পরেও বিজেপির বিরুদ্ধে কংগ্রেস বিধায়কদের ভাঙানোর অভিযোগ ওঠে। তখনও তিনি বিধায়কদের ধরে রাখতে উদ্যোগী হয়েছিলেন। ঘোড়া কেনাবেচা এই রাজ্যে চলছেই। আমরা জানতে পেরেছি বিজেপি নেতাদের সঙ্গে অনেক নিখোঁজ বিধায়কই মুম্বইয়ের হোটেলে আছেন। আমরা তাঁদের আটকানোর চেষ্টা করছি। অর্থাৎ তিনি অস্বীকার করলেন না যে বিধায়ক ভাঙানোর খেলা শুরু হয়েছে। বিজেপি এই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়েছে।
প্রাক্তন মুখ্যমন্ত্রী বিএস ইয়েদুরাপ্পা বলেন, এসব গুজব। কংগ্রেস ও জেডিএসের মধ্যে বিরোধের ফল এটা। কোনো নিখোঁজ বিধায়কের সঙ্গে আমাদের কোনো সম্পর্ক নেই। দল ভাঙানোর প্রশ্নই আসে না। ২২৪ আসন বিশষ্ট কংগ্রেস বিধানসভায় বিজেপির বিধায়ক সংখ্যা ১০৪। সরকার গড়তে দরকার ছিল ১১৩। ফলে ৫ জন কংগ্রেস বিধায়ক এলে সরকার গড়া যে সম্ভব হবে না, তা বলাই যায়।