নয়াদিল্লি: গত কয়েক মাসে একের পর এক বিদেশি সংস্থা বিনিয়োগ করেছে রিলায়েন্স জিও প্ল্যাটফর্মে৷ এবার জিও প্ল্যাটফর্মে ৩৩ হাজার ৭৩৭ কোটি টাকা বিনিয়োগ করার কথা ঘোষণা করল তথ্য প্রযুক্তি সংস্থা গুগল। জিও প্ল্যাটফর্মের ৭.৭ শতাংশ শেয়ার কিনছে তারা৷ করোনা আবহে অনুষ্ঠিত রিলায়েন্স ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেডের প্রথম ভার্চুয়াল তথা ৪৩ তম বার্ষিক সাধারণ বৈঠকে একথা ঘোষণা করেন সংস্থার চেয়ারম্যান ও ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকেশ আম্বানী৷ এদিন যে মুকেশ আম্বানি বড় ঘোষণা করতে চলেছেন, সেই ইঙ্গিত আগেই ছিল৷ প্রত্যাশা মতোই একের পর এক বড় ঘোষণা করেন তিনি৷
বর্তমানে জিও-র গ্রাহক সংখ্যা ৪০ কোটির বেশি। এই বিপুল গ্রাহক সংখ্যার উপর ভিত্তি করেই আগামী দিনে খুচরো ব্যবসা, শিক্ষা ও পেমেন্টের ব্যবসা বাড়াতে চাইছে জিও। ২০১৬ সালে ওই সংস্থার পথ চলা শুরু৷ এর পর রিলায়েন্সের কাঁধে ঋণের বোঝা চাপলেও একের পর এক বিদেশি বিনিয়োগের পর RIL এখন ঋণমুক্ত সংস্থা৷ এদিন মুকেশ আম্বানি বলেন, আমরা আমাদের প্রতিশ্রুতি পালনে সক্ষম হয়েছি৷ নির্ধারিত সময়ের আগেই আমরা ঋণমুক্ত হতে পেরেছি৷
আম্বানি আরও বলেন, করোনা পরিস্থিতিতে ডেটা ট্রফিকের চাপ বাড়লেও জিও নেটওয়ার্ক ভেঙে পড়েনি৷ আগামী বছরের মধ্যে ফাইভ-জি পরিষেবা আনার লক্ষ্যে এগোচ্ছে রিলায়েন্স৷ স্পেকট্রাম পেলেই বাজারে চলে আসবে ফাইভ-জি পরিষেবা৷ তিনি বলেন, প্রযুক্তি ব্যবহার করে, আমরা একাধিক ক্ষেত্র যেমন মিডিয়া, ফিনান্সিয়াল সার্ভিস, নতুন বাণিজ্য, শিক্ষা, স্বাস্থ্যসেবা, কৃষি, স্মার্ট শহর, স্মার্ট উত্পাদন ক্ষেত্রের সমস্যাগুলির সমাধান করতে পারব৷
এছাড়াও ২০৩৫ সালের মধ্যে নেট কার্বন-নিরপেক্ষ হয়ে ওঠার লক্ষ্যেও এগোচ্ছে আম্বানির সংস্থা৷ জিও টিভি+ নেটফ্লিক্স, অ্যামাজন প্রাইম, হটস্টার এবং অন্যান্য ওটিট প্ল্যাটফর্মগুলিকে এক ছাদের তলায় নিয়ে আসতে চলেছে৷ ক্ষুদ্র দোকানগুলির সঙ্গে কী ভাবে জিও মার্ট জোট বেঁধে কাজ করবে সেই বিষয়টি ইশা আম্বানি দেখছেন বলেও জানানো হয়েছে৷ আম্বানি জানান, এখনও পর্যন্ত ১০০ মিলিয়ন ফোন বিক্রি করেছে জিও৷ তবে যাঁরা একাধিক ফিচার যুক্ত স্মার্ট ফোন ব্যবহার করেন, তারা এই ফোনের আপগ্রেডের অপেক্ষায় আছে৷ আম্বানি বলেন, আমরা আশা রাখি এন্ট্রি লেবেলেই ফোর জি বা ফাইভ জি স্মার্ট ফোন ডিজাইন করতে পারব আমরা৷ গুগলের সঙ্গে জোট বেঁধে অ্যানড্রয়েড বেসড স্মার্টফোন অপারেশন সিস্টেম আনতে সক্ষম হবে রিলায়েন্স৷
অন্যদিকে, মিশব অন্ন সেবা’র মধ্যে দিয়ে ৫ কোটি প্রান্তিক, দিন মজুর এবং ফ্রন্টলাইন ওয়ার্কারদের মুখে অন্ন তুলে দেওয়ার উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে বলে জানান নীতা আম্বানি৷ এছাড়াও এক তৃতীয়াংশ দামে প্রতিদিন ১ লাখ করে মাস্ক ও পিপিই দেওয়া হয়েছে বলেও জানান তিনি৷ দুঃস্থ শিশুদের মধ্যে শিক্ষার আলোয় পৌঁছে দিতেও কাজ করছে রিলায়েন্স৷ মেক-ইন-ইন্ডিয়া, মেড-ফর-ইন্ডিয়া এবং মেড-ফর-দা-ওয়ার্ল্ড অভিযান সফল করতে বিভিন্ন ভারতীয় কোম্পানি এবং স্টার্ট-আপ সংস্থাগুলির সঙ্গে দিন রাত কাজ কর চলেছে রিলায়েন্স৷ বর্তমান বিশ্বের ৬০টি বড় সংস্থার মধ্যে একটি মুকেশ আম্বানির রিলায়েন্স৷