কলকাতা: করোনা পরিস্থিতি ও পঞ্চম দফা লকডাউন শিথিল করে পয়লা জুন থেকে এরাজ্যের ধর্মীয়স্থান খোলায় ছাড়পত্র দিয়েছেন মুখ্যমন্ত্রী৷ মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের ছাড়পত্র দেওয়ার পর কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক আনলক ১.০-র নির্দেশিকায় কনটেনমেন্ট জোন বাদে ৮ জুন থেকে ভক্তদের জন্য দেশের সমস্ত ধর্মস্থান খুলে দেওয়া ছাড়পত্র দেওয়া হয়েছে৷ তবে এবিষয়ে রাজ্যগুলির সিদ্ধান্ত চুড়ান্ত। ধর্ম প্রতিষ্ঠান ও ভক্ত উভয়ের জন্য থাকছে কড়াকড়ি৷ নিয়মবিধি৷ প্রতিটি ধর্মস্থানের কার্যপদ্ধতি পরিচলিত হবে স্বাস্থ্যমন্ত্রকের স্ট্যান্ডার্ড অপারেটিং প্রসিডিওর বা এসওপি'র গাইডলাইন মেনে৷
ধর্মস্থানগুলির জন্য নির্দিষ্ট গাইডলাইনগুলি একনজরে-
১) ৬৫ বছর বা তার বেশি বয়সের প্রবীন সহ, অন্যান্য রোগে ভুগছেন এমন ব্যক্তি, গর্ভবতী মহিলা এবং ১০ বছরের কম বয়সী শিশুদের ধর্মস্থানগুলিতে প্রবেশের অনুমতি নেই।
২) উপসর্গ আছে এমন ব্যক্তিদের ক্ষেত্রে ধর্মস্থানগুলিতে প্রবেশের অনুমতি মিলবে না।
৩) মুখে মাস্ক না থাকলে ধর্মস্থানগুলিতে প্রবেশ করা যাবেনা।
৪) জুতো পরে ধর্মস্থান চত্বরে প্রবেশ করা যাবেনা। সেক্ষেত্রে জুতো নিজেদের গাড়িতে বা অন্য কোথাও রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
৫) প্রয়োজনে এগুলি প্রতিটি ব্যক্তি / পরিবারের জন্য পৃথক পৃথক স্লটে রাখার ব্যবস্থা করতে হবে।
৬) ধর্মস্থানগুলিতে প্রবেশের জন্য লাইনে দাঁড়াতে হলে সেখানেও ৬ ফুট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
৭) ধর্মস্থান চত্বরে প্রবেশের আগে হাত, পা সাবান দিয়ে ধুয়ে নিতে হবে।
৮) ধর্মস্থানগুলির ভিতরে ভক্তদের বসার ক্ষেত্রে নিজেদের মধ্যে নির্দিষ্ট দূরত্ব বজায় রাখতে হবে।
৯) ভক্তদের ধর্মস্থানের ভিতরে মূর্তি বা ধর্মীয় বই স্পর্শ করার অনুমতি দেওয়া হবেনা।
১০) ধর্মালয়ে সাধারণ প্রার্থনা বন্ধ থাকবে। কেউ ব্যক্তিগতভাবে প্রার্থনা করতে চাইলে তাকে নিজের বসার জন্য মাদুর বা আসন জাতীয় জিনিস সঙ্গে নিয়ে যেতে হবে এবং প্রার্থনার পর সেটি সঙ্গে নিয়ে আসতে হবে।
১১) কোনো ধর্মস্থানে প্রসাদ, চরণামৃত বা সেই জাতীয় কিছু বিতরণ করা যাবেনা।
১২) বড় ধর্মস্থানগুলিতে স্যানিটাইজার এবং থার্মাল স্ক্রিনিংয়ের ব্যবস্থা রাখতে হবে।
১৩) কোন দর্শনার্থীর অদ্ভুত আচরন বরদাস্ত করা হবে না।
এছাড়াও ধর্মস্থানগুলির জন্য স্বাস্থ্যমন্ত্রকের গুরুত্বপূর্ণ পরামর্শগুলি হল-
১) দর্শনার্থীদের লাইনে দাঁড়ানোর জন্য দূরত্ব অনুসারে দাঁড়ানোর জায়গা মার্কিং করা যেতে পারে।
২) অগ্রাধিকার হিসাবে দর্শনার্থীদের পৃথকভাবে প্রবেশ এবং প্রস্থানের ব্যবস্থা করতে হবে।
৩) সংক্রমণ ছড়িয়ে পড়ার সম্ভাবনার পরিপ্রেক্ষিতে যতদূর সম্ভব রেকর্ড করা ভক্তিমূলক সংগীত / গান বাজানো যেতে পারে এবং ধর্মস্থানগুলিতে গায়ক বা গান গাওয়ার দলগুলিকে অনুমতি দেওয়া উচিত হবেনা।
৪) ধর্মীয় স্থানগুলিতে কমিউনিটি কিচেন / লঙ্গর / “আন-দান” ইত্যাদির জন্য খাবার প্রস্তুত ও বিতরণ করার সময় শারীরিক দূরত্বের নিয়মগুলি অনুসরণ করতে হবে।
৫) ধর্মস্থানে হঠাৎ কেউ অসুস্থ হয়ে পড়লে সেই ব্যক্তিকে এমন একটি ঘরে বা এমন জায়গায় রাখুন যেখানে তারা অন্যদের থেকে বিচ্ছিন্ন থাকে।
৬) যতক্ষণ না অসুস্থ ব্যক্তিকে চিকিৎসক পরীক্ষা করে দেখছেন ততক্ষণ তাকে একটি মাস্ক / মুখের কভার ব্যবহার করতে দেওয়া যেতে পারে।
অবিলম্বে নিকটস্থ চিকিৎসাকেন্দ্রে (হাসপাতাল / ক্লিনিক) নিয়ে মেতে হবে বা রাজ্য বা জেলা হেল্পলাইনে কল করুন।
৭) বিষয়টিকে ঝুঁকিপূর্ণ হিসেবে প্রাধান্য দিয়ে স্থানীয় জনস্বাস্থ্য কর্তৃপক্ষ (জেলা আরআরটি /চিকিৎসক) কর্তৃক এবং চিকিৎসকের পরামর্শ অনুসারে পরিষেবা পরিচালনা, তার পরিবারের সঙ্গে যোগাযোগ, এবং সেই ধর্মস্থান অবিলম্বে জীবাণুমুক্ত করার ব্যবস্থা করতে হবে।