আধার সংযোগ না থাকলে পিএফ নয়, বাধ্যতামূলক করল কেন্দ্র

বয়সের প্রমাণ হিসেবে স্কুল সার্টিফিকেট চলবে। নামের বানানে কিংবা অন্য ভুল থাকলে অনলাইনেই আধারের নাম ব্যবহার করা যাবে। বাবার নামে ভুল থাকলে সেক্ষেত্রে জয়েন্ট ডিক্লারেশন ফর্ম দিয়ে পরিবর্তন করতে হবে। লিঙ্গের ভুল উল্লেখ থাকলে অনলাইনেই সংশোধন করা যাবে । এরপরেও যদি সমস্য থাকে তাহলে আঞ্চলিক অফিসের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

নয়াদিল্লি: পিএফের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে আধার সংযোগ বাধ্যতামূলক করা হল । এখন থেকে আধার সংযোগ না থাকলে পিএফের টাকা জমা করার সুযোগ দেওয়া হবে না বলেই সিদ্ধান্ত নিয়েছে কেন্দ্রীয় সরকার। গত ১০ জানুয়ারির আঞ্চলিক পিএফ অফিসগুলির সঙ্গে ভিডিও কনফারেন্স করে এই ব্যবস্থা যাতে চালু করার সেবিষয়ে সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক অফিসগুলিকে স্পষ্ট করে জানিয়ে দিয়েছেন কেন্দ্রীয় পিএফ কমিশনার সুনীল বার্থওয়াল এবং কেন্দ্রীয় শ্রম সচিব হীরালাল সামারিয়া। সেখানেই তাঁরা জানিয়ে দেন, আধার সংযোগ না থাকলে পিএফের টাকা জমা করার সুযোগ দেওয়া হবে না এবং এই ব্যবস্থা যাতে চালু করা যায়, তার জন্য উদ্যোগ নিতে হবে সংশ্লিষ্ট আঞ্চলিক অফিসগুলিকে। সেই মতো কাজও শুরু হয়ে গিয়েছে। 

গ্রাহককে পিএফের টাকা দেওয়ার ক্ষেত্রে আধার সংযোগ বাধ্যতামূলক করার বিষয়ে বছর খানেক আগেই সিদ্ধান্ত নিয়েছিল এমপ্লয়িজ প্রভিডেন্ট ফান্ড অর্গানাইজেশন বা ইপিএফও। কারণ হিসেবে বলা হয়েছিল, পিএফ সংক্রান্ত যে কোনও পেমেন্ট  অনলাইনে হবে যেখানে ক্ষেত্রে আধার সংযোগের পাশাপাশি মোবাইল এবং ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংযোগ থাকাও বাধ্যতামূলক। কিন্তু গত বছরের ডিসেম্বর পর্যন্ত তথ্যের ভিত্তিতে যে এরাজ্যে মোট পিএফ গ্রাহকদের মধ্যে আধার সংযোগ রয়েছে ৪০ শতাংশের। ব্যাঙ্ক বা মোবাইল সংযোগের ক্ষেত্রেও সেভাবে গুরুত্ব দেননি গ্রাহকেরা।

দপ্তরের আধিকারিকরা জানিয়ে দিয়েছেন, এখন থেকে এবিষয়ে গাফিলতি বরদাস্ত করা হবে না। যাঁদের ওই সংযোগগুলি নেই, তাঁরা মেয়াদ শেষে পিএফের টাকা তোলা, অগ্রিম নেওয়া বা আংশিক টাকা তোলার ক্ষেত্রে সমস্যায় পড়বেন। তবে কলকাতার পিএফ অফিস সূত্রে রে গেছে কেন্দ্রের সিদ্ধান্ত মেনে নতুন নিয়মেই কাজ হবে। যারা নির্দেশিকা মানেননি তাদের ক্ষেত্রে কোনো ছাড় দেওয়া হবে না। কলকাতার আঞ্চলিক কমিশনার (আরপিএফসি ওয়ান) নবেন্দু রাই জানিয়েছেন, যে সংস্থাগুলির পিএফ গ্রাহকদের আধার, মোবাইল ও ব্যাঙ্ক অ্যাকাউন্ট সংযোগ নেই, তাঁদের দায়িত্ব নিয়ে দ্রুত এই কাজ সেরে ফেলতে হবে ।

পিএফের সুবিধা যাঁরা পান, তাঁদের প্রত্যেককে একটি করে ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট নম্বর বা ইউএএন দেওয়া হয়। যেহেতু টাকা জমা করার দায়িত্ব চাকরিদাতা সংস্থার, তাই ইউএএন-এর সঙ্গে আধার সহ নির্দেশিত নম্বর সংযোগ করার দায়িত্ব ওই সংস্থার। তাই এই কাজে গাফিলতি হলে  সুদ ও পেনাল্টি গুণতে হবে ওই সংস্থাকেই।।

অবশ্য এক্ষেত্রে যদি কর্মীদের গাফিলতি থাকে তাহলে সেই পেনাল্টি নির্দিষ্ট কর্মীদের দিতে হবে।

 সর্বশেষ পাওয়া তথ্য অনুসারে এরাজ্যে ইউনিভার্সাল অ্যাকাউন্ট (ইউএএন) নম্বর আছে, এমন পিএফ গ্রাহকের সংখ্যা প্রায় সাড়ে ৭০ লক্ষ। তার মধ্যে  সংযোগ নেই প্রায় ৬০ শতাংশ গ্রাহকের আঁধার সংযোগ নেই। 

এদিকে পিএফ গ্রাহকদের একাংশের অভিযোগ, আধার সংযোগের ক্ষেত্রে নানান সমস্যায় পড়তে হচ্ছে তাদের।  অনলাইনের ক্ষেত্রে আধার ও পিএফ-এর নথিতে তথ্যের অমিল হচ্ছে যার ফলে ইউএএনের সঙ্গে আধার সংযোগ সম্ভব হচ্ছে না। তবে আধিকারিকরা জানিয়েছেন, আধার ও পিএফের নথিতে জন্ম তারিখের পার্থক্য এক বছরের মধ্যে হলে কোনও নথি ছাড়াই কাজ হবে। অবশ্য বয়সের প্রমাণ হিসেবে স্কুল সার্টিফিকেট চলবে। নামের বানানে কিংবা অন্য ভুল থাকলে অনলাইনেই আধারের নাম ব্যবহার করা যাবে। বাবার নামে ভুল থাকলে সেক্ষেত্রে জয়েন্ট ডিক্লারেশন ফর্ম দিয়ে পরিবর্তন করতে হবে। লিঙ্গের ভুল উল্লেখ থাকলে অনলাইনেই সংশোধন করা যাবে । এরপরেও যদি সমস্য থাকে তাহলে আঞ্চলিক অফিসের আধিকারিকদের সঙ্গে যোগাযোগ করতে হবে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *