নয়াদিল্লি: জম্মু ও কাশ্মীর সীমান্ত অঞ্চলকে কেন্দ্র করে ভারত পাক দ্বন্দ্ব প্রায়ই নিয়ে থাকে রক্তাক্ত আকার। সম্প্রতি সেই সীমান্ত সংঘর্ষে যুক্ত হয়েছে চিনের নামও। গতবছর করোনা আবহের মধ্যেই লাদাখ সীমান্তের গালওয়ানে অতর্কিতে আক্রমণ চালিয়েছিল চিনের লাল ফৌজ। চৈনিক হামলাকে কেন্দ্র করে ফের রক্ত ঝরেছিল বরফে ঢাকা লাদাখে। আজ, প্রজাতন্ত্র দিবসের পুণ্য লগ্নে চিনা হামলায় প্রাণ হারানো সৈনিকদের দেওয়া হল বীরত্বের সর্বোচ্চ সম্মান (gallantry award)।
গালওয়ানের চিনা হামলায় প্রাণ হারিয়েছিলেন ভারতের মোট ২০ জন সৈনিক। তাঁদের প্রত্যেককেই এদিন সেনাবাহিনীর তরফ থেকে দেওয়া হয়েছে বীরত্ব সম্মান। মরণোত্তর এই সম্মানে রয়েছে ১টি মহাবীর চক্র, ৪ টি বীর চক্র এবং ১৫ টি সেনা মেডেল। এছাড়া সেনা সূত্রের খবর অনুযায়ী, সেদিনের চিনা সংঘর্ষে বীরত্বের সঙ্গে লড়াই করে প্রাণ নিয়ে বেঁচে ফিরেছিলেন যে একজন, এদিন তাঁকেও দেওয়া হয়েছে একটি বীর চক্র। জানা গেছে, বিহারের বাসিন্দা ভারতীয় সেনাবাহিনীর শহীদ জওয়ান কর্নেল সন্তোষ বাবুকে মহাবীর চক্র সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে। এটি ভারতীয় সেনাবাহিনীর দ্বিতীয় সর্বোচ্চ সম্মান। দুর্দমনীয় লাল ফৌজের সামনে লাদাখের দুর্গম এলাকায় যে অসীম সাহসিকতার প্রদর্শন করেছিলেন সন্তোষ বাবু তা ভারতীয় সেনাবাহিনীর ইতিহাসে লেখা থাকবে স্বর্ণাক্ষরে। তাঁরই সুযোগ্য নেতৃত্বের চিহ্ন বহন করবে মহাবীর চক্র।
প্রসঙ্গত, গত ১৫ জুন পূর্ব লাদাখের গালওয়ান সীমান্ত উপত্যাকায় ১৬ বিহার রেজিমেন্টের কর্নেল ছিলেন সন্তোষ বাবু। শত্রু সেনাদের নজর থেকে গোটা দেশের সীমান্ত রক্ষার গুরুদায়িত্ব ছিল তাঁর ওপর। কিন্তু আচমকাই সীমান্ত চুক্তি ভেঙে সেদিন হামলা চালিয়েছিল চিনের সেনাবাহিনী। আচমকা এই হামলার জন্য প্রস্তুত ছিলেন না ভারতীয় সেনারা। বেশিরভাগই ছিলেন নিরস্ত্র। শোনা যায়, চিনা লাল ফৌজের আক্রমণের হাতিয়ার ছিল লোহার রড, কাঁটা লাগানো ব্যাটের মতো অস্ত্র। কিন্তু সমস্ত প্রতিবন্ধকতা সত্ত্বেও বীরের মতো সামনে থেকে সেনাকে নেতৃত্ব দিয়েছিলেন সন্তোষ বাবু। নিজের শেষ রক্ত বিন্দু পর্যন্ত লড়ে গেছিলেন তিনি। এদিন সেনাবাহিনীর তরফ থেকে সন্তোষ বাবুর সেই অসাধারণ বীরত্বের কথা স্মরণ করা হয়।সন্তোষ বাবু ছাড়া বাকি যাঁরা এদিন সম্মান লাভ করছেন তাঁদের মধ্যে আছেন, নায়েব সুবেরদার সোরেন। হাবিলদার কে পালানি, নায়েব দীপক সিং প্রমুখ।