নাগপুর: ভুয়ো চিকিৎসক এদেশে এমন কিছু নতুন বিষয় নয়৷ কিন্তু তা বলে এমন সংকটজনক পরিস্থিতিতেও! করোনার কোপে দেশ যখন দিশাহারা, রোগী সামাল দিতে নাভিশ্বাস উঠে যাচ্ছে চিকিৎসকদের, তখনও এমন কীর্তি! অবশ্য ভারতে সবই সম্ভব৷ ওষুধ-অক্সিজেনের সংকটকে কাজে লাগিয়ে যখন দেদার চলছে কালোবাজারি, তখন ভুয়ো চিকিৎসক সেজে করোনার চিকিৎসা করতেই বা বাধা কোথায়! মানুষের প্রাণ নিয়ে ব্যবসা চালিয়ে হোক না রোজগার! তবে শেষরক্ষা হল না এই যা৷ চিকিৎসক সাজতে গিয়ে সোজা পুলিশের জালে পড়লেন মহারাষ্ট্রের নাগপুরের এক ফল বিক্রেতা।
অভিযোগ, চন্দন নরেশ চৌধুরি নামে নাগপুরের এক ফল বিক্রেতা ডাক্তার সেজে করোনার চিকিৎসা চালাচ্ছিলেন৷ স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, চন্দন প্রথমে ফল, আইসক্রিম বিক্রি করতেন। পরে ইলেক্ট্রিসিয়ানের কাজও করেন। আর এবার করোনা পরিস্থিতির সুযোগ নিয়ে চিকিৎসক সেজে লোক ঠকানো আরম্ভ করেছিলেন তিনি। কিন্তু সেই প্রতারণা বেশি দিন চলল না৷ তাঁর ঠাই হয়েছে সোজা শ্রীঘরে৷
পুলিশ সূত্রে খবর, নাগপুরে ‘ওম নায়ায়ণ মাল্টিপার্পাস সোসাইটি’ নামে একটি স্বেচ্ছাসেবী সংস্থা চালান চন্দন। গত পাঁচ বছর ধরে চলা ওই সংস্থায় আয়ুর্বেদিক ন্যাচেরোপ্যাথি চিকিৎসা করা হত। করোনার প্রকোপ শুরু হতেই আরও কিছু বাড়তি রোজগারের ফন্দি আঁটেন চন্দন৷ পরিকল্পনা সফল করতে সেজে বসেন করোনার চিকিৎসক৷ কয়েক জন রোগীও জুটে যায়। কিন্তু কাল হয়ে দাঁড়াল তাঁর পূর্ব পরিচিতি৷ যাঁরা চন্দনকে এত দিন ফল, আইসক্রিম বিক্রি করতে দেখেছেন, ইলেক্ট্রিসিয়ান হিসেবেও চেনেন, তাঁরাই এই করোনাকালে তাঁর আচমকা চিকিৎসক হয়ে ওঠার খবর তুলে দেন প্রশাসনের কানে৷
এহেন খবর পেয়ে জেলা পুলিশের একটি দল হাজির হয় চন্দনের ‘ডাক্তারখানা’য়৷ প্রাথমিক তদন্তেই পুলিশ বুঝতে পারে, চন্দন ভুয়ো ডাক্তার। তখনই তাঁকে গ্রেপ্তার করা হয়৷ চন্দনের বিরুদ্ধে মহারাষ্ট্র প্র্যাক্টিসনার্স অ্যাক্টে মামলা রুজু করা হয়েছে। চন্দনের জিম্মায় থাকা বেশ কয়েকটি অক্সিজেন সিলিন্ডারও বাজেয়াপ্ত করেছে পুলিশ। উদ্ধার হয়েছে প্রচুর সিরিঞ্জ, ওষুধ এবং আরও বেশ কিছু চিকিৎসার সরঞ্জাম। চন্দন কাদের চিকিৎসা করেছেন এবং এখন তাঁদের শারীরিক অবস্থা কেমন, তা খতিয়ে দেখছে পুলিশ৷ কারও যদি সংকটজনক কিছু হয়ে থাকে, তা হলে চন্দনের বিরুদ্ধে আরও গুরুতর ধারায় মামলা রুজু করতে পারে পুলিশ৷