নয়াদিল্লি: তিনি একা হাতে একটা জঙ্গল তৈরি করেছেন! তাকে বলা হয় ভারতের ‘ফরেস্ট ম্যান’। আসামের যাদব মোলাই পায়েং এবার স্থান পেলেন আমেরিকার স্কুলের সিলেবাসে! তাঁর সম্পর্কে পড়বে আমেরিকার ব্রিষ্টল কানেকটিকাট স্কুলের ষষ্ঠ শ্রেণির পড়ুয়ারা।
এক সর্বভারতীয় সংবাদ মাধ্যম সূত্রে খবর, ইকোলজি বিষয়ের এক অধ্যায়ে থাকবে যাদবের জীবন কাহিনী। একজন মানুষ একার দায়িত্বে কিভাবে বিশ্ব বদলে দিতে পারে, কিভাবে সহজে মানুষকে অনুপ্রাণিত করতে পারে, সেই বিষয়ে আমেরিকার পড়ুয়াদের পড়ানো হবে। এমনটাই জানিয়েছেন ব্রিষ্টল কানেকটিকাটের গ্রীন হিলস স্কুলের এক শিক্ষক নবমী শর্মা। তিনি আরো জানিয়েছেন, যাদবকে নিয়ে ইতিমধ্যেই যে সমস্ত ডকুমেন্ট তৈরি হয়েছে, তার সবকটিই সিলেবাসে রয়েছে, এবং তাকে নিয়ে পড়তে বেশ আগ্রহী পড়ুয়ারা।
যাদবের আরো এক কৃতিত্বের জন্য প্রচন্ড উৎসাহিত অসমের মুখ্যমন্ত্রী সর্বানন্দ সোনোয়াল। তিনি জানিয়েছেন, “ফরেস্ট ম্যান অফ ইন্ডিয়া, যাদবের বিষয়ে পড়াশোনা হবে আমেরিকার স্কুলে, ভারতের জন্য এটি অত্যন্ত গর্বের বিষয়, একইসঙ্গে অসমের জন্য। যাদব দেশ তথা বিশ্ববাসীকে দারুণভাবে অনুপ্রাণিত করেছে। পরিবেশের খেয়াল রাখতে গেলে আমাদের কি করা উচিত তা স্পষ্টভাবে তুলে ধরেছে।”
প্রসঙ্গত, যাদব পায়েং হলেন সেই ব্যক্তি, যিনি অসমের জোরহাট জেলার কালিকামুখের নিকটবর্তী ব্রম্মপুত্রের চাপারি নামক স্থানের এক বৃহৎ এলাকায় বৃক্ষরোপণ করে এলাকাটিকে অরণ্যে পরিণত করেন। প্রায় ৫৫০ হেক্টর বিস্তৃত এই অঞ্চল একা হাতে দায়িত্ব নিয়ে অরণ্যে পরিণত করেছেন তিনি। এই এলাকা মুলাই কাঠনি নামে পরিচিত, যা যাদবকে সম্মানিত করেই নামকরণ করা হয়েছে। বর্তমানে ওই জঙ্গলে চিতাবাঘ থেকে শুরু করে একশৃঙ্গ গন্ডার এবং প্রায় শতাধিক হরিণ, বানর এবং বিভিন্ন প্রজাতির পাখি রয়েছে। একই সঙ্গে প্রায় ১০০টি হাতির দল প্রতিবছর ওই জঙ্গলে আসে এবং প্রায় ৬ মাস থাকে। জঙ্গলে গাছেদের মধ্যে উল্লেখযোগ্য বাস, অর্জুন এবং সেগুন গাছ। ২০১২ সালে যাদবের এই অবিশ্বাস্য অবদানের জন্য জহরলাল নেহেরু বিশ্ববিদ্যালয় আর্থ ডে’র দিন তাঁকে ‘ফরেস্ট ম্যান অফ ইন্ডিয়া’র শিরোপা দেয়। পরে ২০১৫ পদ্মশ্রী পুরস্কার পান তিনি।