হায়দরাবাদ: ভারী বৃষ্টিতে বিধ্বস্ত প্রায় গোটা দক্ষিণ ভারত। বুধবার থেকে মুষলধারে বৃষ্টিপাতের ফলে তেলেঙ্গানা, মহারাষ্ট্রে, কর্ণাটক ও অন্ধ্র প্রদেশের বেশিরভাগ অংশ বন্যা হয়েছে। পাশাপাশি বাঁধ উপচে পড়ায় আরও সমস্যার সম্মুখীন হয়েছে সাধারণ মানুষ। মৃত্যু হয়েছে অন্তত ৭৭ জনের। বৃষ্টিতে সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ রাজ্য তেলেঙ্গানা। যেখানে বুধবার থেকে বৃষ্টিতে সেখানে ৫০ জন নিহত হয়েছেন। বৃহস্পতিবার মুখ্যমন্ত্রী কে চন্দ্রশেখর রাও বলেছেন যে ভারী বৃষ্টির কারণে রাজ্যর প্রায় পাঁচ হাজার কোটি টাকার ক্ষতি হয়েছে। যার ফলে রাজ্যের বেশ কয়েকটি নিচু অঞ্চলে বন্যা হয়। তেলঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদীকে চিঠি দিয়ে ত্রাণ ও পুনর্বাসনের জন্য অবিলম্বে ১ হাজার ৩৫০ কোটি টাকা দেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।
মহারাষ্ট্র ২৭ জন প্রাণ হারিয়েছেন। বৃহস্পতিবার মহারাষ্ট্রের মুখ্যমন্ত্রী উদ্ধব ঠাকরেকে পশ্চিমী মহারাষ্ট্র ও মারাঠওয়াদের ভারী বৃষ্টিপাত এবং বন্যার কারণে কোনও জরুরি পরিস্থিতি মোকাবেলায় তৎপর থাকতে নির্দেশ দিয়েছে। রাজ্য প্রশাসন, সেনাবাহিনী, নৌ ও বিমানবাহিনীকে সতর্কতা অবলম্বন করতে বলা হয়েছে। তবে আবহাওয়াবিদরা শুক্রবার থেকে রাজ্যে বৃষ্টিপাত হ্রাসের পূর্বাভাস দিয়েছে। আবহাওয়া দফতর সূত্রে খবর, ওড়িশা, অন্ধ্র, তেলেঙ্গানা, কর্ণাটক এবং মহারাষ্ট্রে ভারী বৃষ্টিপাতে কারণ বঙ্গোপসাগরের উপর নিম্নচাপ। এটি উত্তর-পশ্চিম দিকে যাওয়ার সময় প্রথমে শক্তি অর্জন করে এবং পরে তা হ্রাস পায়। তেলেঙ্গানার উপর দিয়ে যখন নিম্নচাপ যাচ্ছিল তখন তার শক্তি ছিল মারাত্মক।মহারাষ্ট্রের দিকে যাওয়ার সময় এটি দুর্বল হয়ে পড়ে। তবে এই নিম্নচাপ উত্তর-পশ্চিমে চলে যাবে এবং আরব সাগরে পৌঁছবে। পরবর্তীতে গুজরাটের উপকূলে বৃষ্টির সম্ভাবনা। এক্ষেত্রে নিম্নচাপ আরও তীব্র হতে পারে বলে আশঙ্কা।
তেলেঙ্গানায় বৃষ্টির জন্য হায়দরাবাদের ১১ জনসহ মোট ৫০ জন মারা গিয়েছেন। হায়দরাবাদের ২টি জায়গায় ২০ হাজারেরও বেশি বাড়ি ডুবে গিয়েছে এবং প্রায় ৩৫ হাজার পরিবার ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে। তেলেঙ্গানার মুখ্যমন্ত্রী নিহতদের পরিবারকে প্রত্যেকে পাঁচ লাখ টাকা ক্ষতিপূরণ দেওয়ার ঘোষণা করেছেন। যাদের ঘর পুরোপুরি ধ্বংস হয়ে গিয়েছে তাদের জন্য নতুন বাড়ি তৈরি করা হবে এবং যাদের বাড়ি আংশিক ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তাদের আর্থিক সহায়তা দেওয়া হবে। মহারাষ্ট্রে সোলাপুর, সাঙ্গলি ও পুনে জেলায় বৃষ্টির কারণে ২৭ জন মারা গিয়েছেন। ১৪ জন নিহত হয়েছেন সোলাপুর জেলায়, ন’জন সাঙ্গলি এবং ৪ জন পুনে জেলায় মারা গিয়েছেন। বুধবার সন্ধ্যায় পাখারপুরের মন্দির শহরে দেয়াল ধসে ছয় ব্যক্তি মারা যান।