কলকাতা: ঘুরতে যেতে কে না পছন্দ করে। হঠাৎ ছুটি পেলে এক ঝটকায় বেরিয়ে যাওয়া যায়। কিন্তু একটু ভালো জায়গা বা বেশি দিনের জন্য যেতে হল আগে থেকে পরিকল্পনা তো করতেই লাগবে। আর তার জন্য সবথেকে জরুরি বিষয় হল অ্যাডভান্স টিকিট বুকিং। প্লেন হোক কিংবা রেল বা বাস, অধিকাংশ মানুষ কোথাও যাওয়ার আগে অগ্রিম টিকিট বুক করতেই ভালোবাসেন। বলাই বাহুল্য এতে শেষ মুহূর্তের টেনশন থাকে না। তবে এই টিকিট বুকিং নিয়েই দিনদিন বাড়ছে প্রতারণা। সাধারণ গ্রাহককে খোয়াতে হচ্ছে তার রক্ত জল করা টাকা।
আজকাল অনলাইন টিকিট বুকিংয়ের চলটাই বেশি। বাড়িতে বসেই কয়েক মিনিটের মধ্যেই যে কোনও জায়গার টিকিট বুক করে ফেলা যায়। আর টিকিট কাটার জন্য তো অনেক অ্যাপও আছে। রেলের টিকিটের জন্য সাধারণত অধিকাংশ মানুষ আইআরসিটিসি-র অ্যাপ ব্যবহার করেন। কিন্তু বর্তমানে এই অ্যাপ নিয়েও সমস্যা দেখা দিচ্ছে। কারণ প্রতারকরা ‘ফিশিং অ্যাপ’ চক্র চালাচ্ছে। এতে আপনি ‘কনফার্ম’ টিকিট বুক করেও প্রতারিত হবেন। তবে নিজেকে প্রতারণার হাত থেকে আপনি সহজেই বাঁচাতে পারে। তার জন্য মানতে হবে কিছু নিয়ম। তবে তার আগে জেনে নেওয়া ভালো যে কী ভাবে এই চক্র কাজ করছে।
হোয়াটস অ্যাপ বা টেলিগ্রামের মতো বিভিন্ন সোশ্যাল মাধ্যমে অনেক সময়ে বিভিন্ন ওয়েবসাইটের লিঙ্ক আসে। তার মধ্যে টিকিট বুকিংয়ের সাইটও থাকে। দাবি করে বলা হয়, এখান থেকে লিঙ্ক খুলে ওই সাইটে ঢুকে আপনি যদি টিকিট কাটেন তাহলে সহজেই ‘কনফার্ম’ টিকিট পাওয়া যায়। কিন্তু আদতে কি সেটা আসল টিকিট? একদমই নয়। এগুলিই হচ্ছে ‘ফিশিং অ্যাপ’। এখান থেকে টিকিট কাটার সময়ে আধার নম্বর হোক কিংবা এটিএম কার্ডের নম্বর দিতে হয়। আদতে যে কারোর ব্যাঙ্ক ডিটেলস খুব সহজেই পেয়ে যায় প্রতারকরা। একবার ব্যক্তিগত তথ্য দিয়ে এই লিঙ্ক থেকে অ্যাকাউন্ট খোলার পর আপনি টিকিট পাবে না। কিন্তু ততক্ষণে বড় ভুল হয়ে গিয়েছে। আপনি ‘ফিশিং অ্যাটাক’-এর শিকার হয়েছেন।
সাইবার ক্রাইম বিশেষজ্ঞরা বলছেন, শুধুমাত্র গুগল বা অ্যাপেল স্টোর থেকেই আইআরসিটিসি বা অন্য অ্যাপ ডাউনলোড করুন। এই ধরনের কোনও ওয়েবসাইটের নামে পাঠানো হোয়াটস অ্যাপ বা টেলিগ্রাম লিঙ্ক খুলে কখনও বুকিং করতে যাবেন না। দরকারে এই ধরনের সাইটের খোঁজ পেলে সরাসরি রেল কর্তৃপক্ষকে (care@irctc.co.in) ই-মেল করুন।
মূলত আইআরসিটিসি নাম দিয়ে জাল অ্যাপ্লিকেশন বাজারে ছেয়ে গিয়েছে। রেলের তরফ থেকে ইতিমধ্যেই জানানো হয়েছে, irctcconnect.apk নামের একটি অ্যাপ তৈরি করে এইভাবে জালিয়াতি করা হচ্ছে। এগুলি হল সোশ্যাল ইঞ্জিনিয়ারিং এবং স্ক্যাম। এর সাহায্যের যে কারোর ব্যাঙ্ক ডিটেলস নিয়ে নেওয়া যায়। শুধুমাত্র রেলের অ্যাপেই যে এই সমস্যা তা নয়। অন্যান্য অনেক সাইটের নামেও এইভাবে জালিয়াতি করা হচ্ছে। তাদের নামে ক্লোন সাইট বা অ্যাপের লিঙ্ক পাঠিয়ে চলছে প্রতারণা।