চণ্ডীগড়: দীর্ঘদিন অতিক্রান্ত হলেও কেন্দ্র সরকারের কৃষি আইন নিয়ে কৃষকদের আন্দোলনে তৈরি হওয়া জটিলতার কোনো সমাধান হয়নি এখনও পর্যন্ত। দফায় দফায় সরকারের সঙ্গে বৈঠক হলেও কার্যত অনমনীয় দুই পক্ষই। এহেন উত্তাপের আবহে এবার বেফাঁস মন্তব্য করে বিতর্কে জড়ালেন বিজেপি শাসিত হরিয়ানার কৃষি মন্ত্রী।
আন্দোলনরত অবস্থায় একাধিক কৃষক মৃত্যুর প্রসঙ্গে এদিন হরিয়ানার কৃষি মন্ত্রী জে পি দালাল বলেন, কৃষকরা বাড়িতে বসে থাকলেও মারা যেতেন। তাঁর এহেন মন্তব্যই তৈরি করেছে বিতর্ক। গত নভেম্বর মাস থেকে কেন্দ্রের আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনে সামিল হওয়া কৃষকদের মধ্যে এখনও পর্যন্ত প্রাণ হারিয়েছেন প্রায় ২০০ জন। এ বিষয়েই শনিবার কৃষিমন্ত্রী জে পি দালালের প্রতিক্রিয়া জানতে চেয়ে প্রশ্ন করেন সাংবাদিকরা। রাজ্যের কৃষিমন্ত্রীর মুখে এহেন কথায় ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে বিতর্কের ঝড়।
নিজের বক্তব্যের সপক্ষে এদিন যুক্তিও দেখান বিজেপি সাংসদ। তাঁর কথায়, “শুনুন, এক-দু লাখ মানুষের মধ্যে ৬ মাসে ২০০ জন কি মরে না? কেউ হার্ট অ্যাটাকে মরে, কেউ অসুস্থ হয়ে মরে।” উল্লেখ্য, কৃষি আইনের বিরুদ্ধে আন্দোলনকারীরা দিল্লি সীমান্তে নানা কারণে প্রাণ হারিয়েছেন। তার মধ্যে রাজধানীর ঠান্ডায় হৃদরোগে আক্রান্ত হওয়ার নজিরও রয়েছে। অর্থাৎ কেন্দ্রীয় আইনের বিরুদ্ধতায় সামিল হওয়া কৃষকদের প্রাণের বিশেষ মূল্য নেই বলেই মনে করেছেন হরিয়ানার কৃষি মন্ত্রী জে পি দালাল।
কৃষিমন্ত্রীর এই মন্তব্যের তীব্র সমালোচনায় সামিল হয়েছে বিভিন্ন মহল। এমনকি রাজ্য মন্ত্রীসভা থেকে তাঁর পদত্যাগের দাবিও উঠেছে। এ প্রসঙ্গে কংগ্রেস নেতা রণদীপ সিং সুরজেওয়ালা জানিয়েছেন, “অন্নদাতাদের অপমান করার জন্য এ ধরণের বাক্য একমাত্র অসংবেদনশীল ব্যক্তির পক্ষেই উচ্চারণ করা সম্ভব। হরিয়ানা এবং পাঞ্জাবের অন্যান্য কংগ্রেস নেতারাও কৃষি মন্ত্রীর এহেন মন্তব্যে দুঃখপ্রকাশ করেছেন। সামিল হয়েছেন সমালোচনায়।
চারদিক থেকে সমালোচনার ঝড়ের মুখে পড়ে সুর নরম করেন জে পি দালাল। তিনি বলেন তাঁর কথাকে বিকৃত করা হয়েছে। এমনকি ক্ষমাও চেয়ে নেন তিনি। “আমার কথায় যদি কারোর খারাপ লেগে থাকে, আমি ক্ষমা চাইছি”, বলেন হরিয়ানার কৃষিমন্ত্রী জে পি দালাল।